ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

লোডশেডিং ৯শ’ মেগাওয়াট, তারপরেও সাফল্য প্রচার সোশ্যাল মিডিয়ায়

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ১৬ মে ২০১৬

লোডশেডিং ৯শ’ মেগাওয়াট, তারপরেও সাফল্য প্রচার সোশ্যাল মিডিয়ায়

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দৈনিক অন্তত ৯০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের সাফল্য প্রচারে মাঠে নেমেছে বিদ্যুত বিভাগ। তাপমাত্রার নিম্নমুখী অবস্থার মধ্যেও গ্রামাঞ্চলে লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ এখন সাধারণ মানুষ। তাপমাত্রা একটু বাড়লে শহরাঞ্চলেও লোডশেডিং সহ্যসীমা অতিক্রম করছে। এর মধ্যেই কোটি টাকা ব্যয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাফল্য প্রচারে বিদ্যুত বিভাগের উদ্যোগ প্রশ্ন সৃষ্টি করছে। রবিরার সকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার বিষয়ে বিদ্যুত বিভাগ এক কর্মশালার আয়োজন করে। ওই কর্মশালায় এমএমসি নামের একটি কোম্পানি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে। কর্মশালায় জানানো হয় ম্যাগনিটো নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠান বিদ্যুত বিভাগের হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাফল্য প্রচার করবে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে বেসরকারী এই উদ্যোক্তারা সাফল্য প্রচার করবে। ইতোমধ্যে তারা বছর প্রতি এক কোটি টাকার একটি বাজেট জমা দিয়েছে বিদ্যুত বিভাগের কাছে। দেশের বিভিন্ন স্থনে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে মিছিল সমাবেশ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকেই বিরূপ মন্তব্য করছেন। নিজেদের অসন্তুষ্টির কথা প্রকাশ করছেন। তবে এর মধ্যেই বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী গত শুক্রবার বলেন, এখন বিদ্যুতের অবস্থা ভাল। এখন পাঁচ মিনিট বিদ্যুত না থাকলে মানুষ ফোন দেয়। রবিবার বিকেলেই পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড আরইবি এবং অন্য বিতরণ কোম্পানিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এখনও অন্তত ৯০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ঘাটতি রয়েছে সারাদেশে। এরমধ্যে গত শনিবার সরকারী ছুটির দিনেও আরইবিতে সারাদেশে ৪ হাজার ১৬২ মেগাওয়াট চাহিদার বিরপরীতে তিন হাজার ৪৭৪ মেগাওয়াট সরবরাহ করা হয়েছে। অর্থাৎ সারাদেশে আরইবির এলাকাতে নিট লোডশেডিং হয়েছে ৬৮৮ মেগাওয়াট। এর বাইরে অন্য বিতরণ কোম্পানিতেও কিছু কিছু লোডশেডিং করতে হয়েছে। ওই দিন পিক আওয়ারে উৎপাদন ছিল ৭ হাজার ৭৫৩ মেগাওয়াট। মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, বিদ্যুত বিভাগের সব কোম্পানির ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে এ্যাকাউন্ট নেই। উদ্যোক্তারা বিদ্যুত বিভাগের এই সব জায়গাতে নতুন পাতা খুলে দেবে। নিয়মিত আপডেট করবে পাতাগুলো। সাধারণ মানুষ যে প্রতিক্রিয়া দেবে সেগুলোও সংগ্রহ করে দেবে। যাতে তাদের সঙ্গে বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগের সম্পর্ক আরও গভীর হয়। বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ স¤পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সেমিনারে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জ্বালানি ও বিদ্যুত খাতকে আরও সক্রিয় হতে হবে। এতে অধিক সংখ্যক গ্রাহকের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখা সম্ভব হবে; গ্রাহকদের মনোভাব জানা যাবে এবং সরাসরি প্রত্যুত্তর দেয়া যাবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ বিদ্যুত ও জ্বালানি খাতে অবস্থান শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন জনগণের কাছে দ্রুত পৌঁছাতে হলে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা নেয়া প্রয়োজন। সময়োপযোগী ও যথাযথ তথ্য দ্রুত ও তাৎক্ষণিকভাবে ওয়েবসাইট এবং অন্যান্য যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মাঝে বিদ্যুত সচিব মনোয়ার হোসেনসহ বিদ্যুত ও জ্বালানি বিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। বিকেলে এমসিসি-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফ আবীদ জনকণ্ঠকে বলেন, আমরা মূলত বিদ্যুত বিভাগের বিভিন্ন সাফল্য মানুষের সামনে তুলে ধরব। এই কাজটি করবে ম্যাগনেটো ডিজিটাল। আমরা কর্মশলাটি করে দিয়েছি। তবে কত টাকা ব্যয় হবে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
×