ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাড়তি বিনিয়োগ বিষয়ক জটিলতার সমাধান

তিন ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করতে হবে না

প্রকাশিত: ০৩:৩৫, ১৬ মে ২০১৬

তিন ব্যাংকের শেয়ার বিক্রি করতে  হবে না

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ পুঁজিবাজারে এবি ব্যাংক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের বাড়তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতা কেটেছে। ব্যাংক দুটির সহযোগী প্রতিষ্ঠানের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর একটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে ব্যাংকগুলোকে আর শেয়ার বিক্রি করে বাড়তি বিনিয়োগ নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে নামাতে হবে না। বরং শেয়ার বিক্রি না করেই আরও বিনিয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংক দুটি। এর আগে পূবালী ব্যাংকের প্রস্তাবের পর বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠানটির সাবসিডিয়ারি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে দেয়। এ নিয়ে তিনটি ব্যাংকের বাড়তি বিনিয়োগ সংক্রান্ত জটিলতার সমাধান হলো। জানা গেছে, ব্যাংক কোম্পানি আইনের সর্বশেষ সংশোধনীতে আরোপিত শর্তের কারণে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের সক্ষমতা কমে যায়। আগে প্রতিটি ব্যাংক তার আমানতের ১০ শতাংশ পর্যন্ত পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারত। ২০১৩ সালের সংশোধনী অনুসারে এখন ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগের সক্ষমতা কমিয়ে পরিশোধিত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম হিসেবে রক্ষিত স্থিতি, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও অবণ্টিত আয়ের (রিটেইন্ড আর্নিংস) ২৫ শতাংশ বিনিয়োগের বিধান রাখা হয়। এই সংশোধনীর ফলে আগের আইনে বিনিয়োগ করা ১০টি ব্যাংকের বিনিয়োগের পরিমাণ সীমার বাইরে পড়ে গেছে। চলতি বছরের ২১ জুলাইয়ের মধ্যে বাড়তি বিনিয়োগ সমন্বয় করতে হবে ওই ব্যাংকগুলোকে। এর জন্য ব্যাংকগুলোর বিপুল পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করতে হবে। এই বিক্রির চাপ কমাতেই বিকল্প পথ বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সময় না বাড়িয়ে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন বৃদ্ধির মাধ্যমে এটি সমন্বয় করার উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে গত ডিসেম্বরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা মূলধন পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ হিসাবে না ধরার সিদ্ধান্ত হয়। তাতে পাঁচ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সুবিধা পায় ব্যাংকগুলো। এরপরও ১০টি ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমার ওপরে থাকায় নতুন সুবিধা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার ওপরে থাকা এবি ব্যাংক সিকিউরিটিজের মূলধন ছিল ২৮০ কোটি টাকা। এখন আরও ৩২০ কোটি টাকা বাড়িয়ে ৬০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার সুযোগ পাচ্ছে ব্যাংকটি। অন্যদিকে ৬৫ কোটি টাকা থেকে মূলধন বাড়িয়ে ৩৬০ কোটি টাকায় নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক সিকিউরিটিজ। নতুন করে ২৯৫ কোটি টাকা সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধনে স্থানান্তরের সুযোগে পুঁজিবাজারে ব্যাংকটির বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমায় নেমে এসেছে। এর আগে একই ভাবে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের বাড়তি বিনিয়োগের সমস্যা সমাধান করা হয়। পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজের মূলধন ছিল ১৬০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সহায়তায় ধারণকৃত শেয়ার ও সাবসিডিয়ারিকে দেয়া ঋণের ৫০০ কোটি টাকা নতুন করে পূবালী ব্যাংক সিকিউরিটিজের মূলধনে স্থানান্তরের সুযোগ দেয়া হয়েছে। এতে ব্যাংকটির সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মূলধন ৬৬০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। নির্ধারিত সীমায় নেমে এসেছে ওই ব্যাংকের পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ। প্রাপ্ত তথ্যমতে, পুঁজিবাজারে বর্তমানে ব্যাংকগুলোর মোট বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা। গত ডিসেম্বরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করা মূলধন বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য না করার সিদ্ধান্তের পর ১৮ হাজার কোটি টাকার মতো বিনিয়োগ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। ২০১৩ সালে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনীর পর নির্ধারিত সীমার ওপরে ছিল ৩৬টি ব্যাংকের বিনিয়োগ। তা পর্যায়ক্রমে কমানো হয়েছে। বর্তমানে ১০টি ব্যাংকের বিনিয়োগ নির্ধারিত সীমার ওপরে আছে।
×