ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সীমাহীন আস্পর্ধা

প্রকাশিত: ০৫:৪৫, ১৫ মে ২০১৬

সীমাহীন আস্পর্ধা

নাজনীন আখতার ॥ প্রতিবেশী দেশগুলোতে জঙ্গীবাদ উত্থানের মদদদাতা পাকিস্তান বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে উঠেপড়ে লেগেছে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘে নালিশ করার ঘোষণাও দিয়েছে। এ কাজে সমর্থন চেয়েছে বিভিন্ন মুসলিম দেশের। শুক্রবার দেশটির পার্লামেন্টে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ বাংলাদেশ সরকার রাজনৈতিক বিরোধী মতপ্রকাশকারীদের ফাঁসি দিচ্ছে উল্লেখ করে বিষয়টি জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ও অন্যান্য দেশের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন। ডেইলি পাকিস্তানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সারতাজ আজিজ এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এভাবে মৃত্যুদ- কার্যকর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ১৯৭৪ সালের ত্রিদেশীয় চুক্তির লঙ্ঘন। এদিকে, সন্ত্রাসবাদ ও ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীর জনক পাকিস্তানের এভাবে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ন্যক্কারজনক হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ বাংলাদেশ। যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে দেশটির বাড়াবাড়িকে বরাবরই অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে আসছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন সময়ে এ নিয়ে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়াও জানিয়েছে। সর্বশেষ বুধবার ঢাকায় জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকরের পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তার (নিজামী) একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি পাকিস্তানের সংবিধান ও আইন সমুন্নত রাখতে চেয়েছিলেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তিনি বলেন, পাকিস্তানের জানা উচিত যে, কোন সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যায় না। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমও পাকিস্তানের এ ধরনের ধারাবাহিক আচরণকে বিরক্তিকর বলে মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর কোন অধিকার পাকিস্তানের নেই। পাকিস্তান বেশি বাড়াবাড়ি করছে। তবে তাদের চোখ রাঙানিতে বাংলাদেশ ভয় পায় না। আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে পাকিস্তানের নাক গলানো কিংবা হস্তক্ষেপের সুযোগ নেই। তাদের এই জংলী মনোভাব বাংলাদেশের মানুষ বরদাশত করবে না। এদিকে কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, একাত্তরে পরাজয়ের প্রতিশোধ হিসেবে বিদ্বেষমূলক আচরণ থেকে বের হতে পারছে না পাকিস্তান। সার্কের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবেও পাকিস্তানের ভূমিকা বিতর্কিত। বাংলাদেশের জন্য বা প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও আফগানিস্তানের জন্য সহায়ক হতে পারে এমন বিষয়গুলোতে অসহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করে দেশটি। সন্ত্রাসবাদ দমনে সার্কে অকার্যকর পাকিস্তান ॥ দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনে সার্কের বেশ কয়েকটি ফোরাম রয়েছে। ১৯৯৫ সালে কলম্বোতে সার্কভুক্ত দেশের জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করার জন্য একটি ফোরাম গঠিত হয়। এ পর্যন্ত এই ফোরামের চারটি বৈঠক হয়েছে। ২০১১ সালের ৪ এপ্রিল কলম্বোতে সর্বশেষ বৈঠক হয়। তবে প্রতিটি বৈঠকেই অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তান এই ফোরামকে যথাযথ সহযোগিতা করছে না। এদিকে, সার্ক দেশগুলোর মধ্যে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনের লক্ষ্যে ১৯৮৭ সালের ৪ নবেম্বর আরেকটি চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী সদস্য দেশগুলোর মধ্যে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদান করা হবে। এছাড়া এই চুক্তিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, নারী ও শিশু পাচারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সার্কের একাধিক বৈঠকে সদস্য দেশগুলো বরাবরই সহযোগিতা না করার জন্য পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে। সার্কের সদস্য দেশ হিসেবে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ দমনের বিষয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সহযোগিতা করার কথা। তবে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য বাংলাদেশকে কোন সহযোগিতা করছে না পাকিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময়ে তথ্য চাওয়ার পর বছরের পর বছর পেরিয়ে গেলেও পাকিস্তানের দিক থেকে কোন উত্তর পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ঢাকা-ইসলামাবাদের মধ্যে টানাপোড়েনে এক্ষেত্রে অসহযোগিতা আরও বাড়ছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পাকিস্তান হাইকমিশনের কর্মকর্তা ফারিনা আরশাদকে জঙ্গীবাদে মদদের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়। আর এই বহিষ্কারের প্রতিক্রিয়ায় ইসলামাবাদে বাংলাদেশের কূটনীতিক মৌসুমী রহমানকে বহিষ্কার করে পাকিস্তান। বাংলাদেশ ও ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তান বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় বাংলাদেশ ও ভারতের জাল টাকা তৈরি, মাদকদ্রব্য, অস্ত্র ইত্যাদি বিস্তারে পাকিস্তানের ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছন্নতাবাদীদের পেছনে মদদ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীকেও মদদ দিয়ে থাকে পাকিস্তান। দেশটির বিরুদ্ধে আফগানিস্তানে বিদ্রোহ সৃষ্টিতেও মদদ দেয়ার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তালেবান উত্থানের অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের ॥ খুররাম যাকি। ৪০ বছর বয়সী পাকিস্তানী ব্লগার ও মানবাধিকারকর্মী। পাকিস্তানে জালের মতো বিছিয়ে থাকা পরাক্রমশালী ইসলামী জঙ্গীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সোচ্চার কণ্ঠ। গত ৭ মে শনিবার করাচীতে রাস্তার পাশে এক ক্যাফেতে বসে সাংবাদিক বন্ধু রাও খালিদের সঙ্গে রাতের খাবার খাচ্ছিলেন। হঠাৎ দুটি মোটরবাইকে আসা চার যুবক ওই অবস্থায় যাকিকে ব্রাশফায়ার করে হত্যা করে। গত তিন বছরে করাচীতে এ নিয়ে তিনজন উচ্চপর্যায়ের মুক্তমনা খুন হলেন। এর আগে ২০১৩ সালে সাবিন মাহমুদ ও পারুয়িন রহমান নামের দু’জন খ্যাতনামা নারী মানবাধিকারকর্মী জঙ্গী হত্যাকা-ের শিকার হন। খুররাম যাকি খুন হওয়ার আগ পর্যন্ত পেশোয়ারে স্কুলের শত শত শিশু হত্যাকা-ে অভিযুক্ত সুন্নি চরমপন্থী মাওলানা আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। এই হত্যাকা-ের পর থেকে পাকিস্তানের বুদ্ধিজীবী মহলে নতুন করে আবার একটি কথাই উচ্চারিত হচ্ছে- ‘জঙ্গীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া কেউ বাঁচতে পারবে না।’ আন্তর্জাতিক মহলেও পাকিস্তানে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা সন্ত্রাসবাদ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। দায়ী করা হচ্ছে সরকার ও সামরিক পক্ষকে। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশ আফগানিস্তানে জঙ্গীবাদ জিইয়ে রাখতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ মদদের জন্য অভিযোগের আঙ্গুল তোলা হচ্ছে পাকিস্তানের দিকেই। বলা হচ্ছে, মধ্যপ্রাচ্য বিশেষ করে সিরিয়া, ইরাক ও লিবিয়ায় তৎপর জিহাদীগোষ্ঠী আইএসসহ বিশ্বের বিভিন্ন জিহাদীগোষ্ঠীর উত্থানের জন্য পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার হাত রয়েছে। শুধু তাই নয়, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এসব গোষ্ঠীর পৃষ্ঠপোষক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে। আর সেক্ষেত্রে নতুন আতঙ্ক হিসেবে উঠে আসছে পাকিস্তানী পৃষ্ঠপোষকতায় দানব হয়ে ওঠা জঙ্গী নেতা সিরাজুদ্দিন হাক্কানীর নাম, যিনি গড়ে তুলেছেন বিধ্বংসী হাক্কানী গ্রুপ। সিরাজুদ্দিন হাক্কানীকে মদদ দেয়ার অভিযোগ তুলে খোদ যুক্তরাষ্ট্রও এখন পাকিস্তানের প্রতি নাখোশ। যুক্তরাষ্ট্রের মতে, বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে পাকিস্তান নিজ দেশ ও আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। গত ৭ মে নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ২০১২ সালে হাক্কানীকে জঙ্গীগোষ্ঠী হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। সিরাজুদ্দিন হাক্কানীকে ধরিয়ে দিতে পারলে পাঁচ মিলিয়ন ডলার পুরস্কার দেয়ারও ঘোষণা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। সেখানে সিরাজুদ্দিন হাক্কানীর দৈহিক বর্ণনা দিয়ে বলা হয়েছে, ৪৩ বছর বয়সী হাক্কানী ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি লম্বা এবং ফর্সা। যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তান থেকে বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে একত্রিত হয়ে হাক্কানী গ্রুপ বিধ্বংসী কার্যকলাপের মাধ্যমে চলতি বছর বিদ্রোহ সৃষ্টি করেছে। এপ্রিল মাসে আফগানিস্তানের কাবুলে ট্রাকবোমা হামলায় ৬৪ জন হত্যাকা-ের ঘটনায় হাক্কানী গ্রুপই জড়িত ছিল বলা হয়। বিদ্রোহ উস্কে দিতে হাক্কানী গ্রুপ এমন বিধ্বংসী রূপ ধারণ করেছে যে, শান্তি আলোচনার আশা পুরোপুরিই নিভে গেছে। এ পরিস্থিতিতে হাক্কানীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান- যুক্তরাষ্ট্র ও আফগানিস্তানের এমন দাবি উত্তেজনা ছড়িয়ে দিচ্ছে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীতে। এ বিষয়ে আফগানিস্তানে ন্যাটো বাহিনীর যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল চালর্স এইচ ক্লিভল্যান্ড বলেছেন, সিরাজুদ্দিন হাক্কানী তালেবানদের পক্ষে দিনের পর দিন জঙ্গী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে, তারা একটি ছায়া সরকার গঠনে যুক্ত হতে যাচ্ছে। নাম উল্লেখ না করে একজন আফগান নিরাপত্তা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরাজুদ্দিন হাক্কানী তালেবান শীর্ষ নেতা মোল্লাহ আখতার মুহাম্মদ মানসুরের চেয়েও আরও দক্ষ মারণাস্ত্র চালকদের তালেবানদের জন্য নিয়ে এসেছেন। মোল্লাহ মানসুরের আধিপত্য রাখার জন্য তার নেতৃত্বে বিরুদ্ধ মতপ্রকাশকারীদের দমন করা হচ্ছে। পাকিস্তানের কোয়েটায় কয়েকবার তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলার ঘটনার পর তার চলাফেরা সীমিত করে ফেলা হয়েছে। আর সে সময়ই তালেবানদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয় সিরাজুদ্দিন হাক্কানী। তিনি এখন তালেবানে এতটাই প্রতাপশালী যে, তার পরামর্শ ছাড়া কাউকে সেখানে নিয়োগ করা হয় না। ১৯৮০ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে গেরিলাযুদ্ধে হাক্কানী নেটওয়ার্কের আবির্ভাব ঘটে। গত ৩০ বছরে গোষ্ঠীটি চাঁদাবাজি, অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়, বিভিন্ন দেশে নানাবিধ ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে সম্পদ গড়ে তুলেছে। বর্তমানে গোষ্ঠীটির সঙ্গে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স বা আইএসআইয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী আফগানিস্তানে বিদ্রোহের সময় তালেবানদের সঙ্গে হাক্কানী গ্রুপের সম্পর্ক গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা রাখে। যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গী দমনে পাকিস্তানকে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আফগানিস্তানে বিদ্রোহ পরিস্থিতির উন্নয়নের জন্য পাকিস্তানের কর্মকর্তাদের চাপ দেয় তালেবানদের সমঝোতার টেবিলে এনে আলোচনা করতে। অথচ একই সময়ে বিদ্রোহ সৃষ্টিকারী শীর্ষ নেতারা এখনও পাকিস্তানেই তাদের আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছে। ২০১৪ সালে পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী জঙ্গী দমনের নামে যে অপারেশন শুরু করেছিল তাতে হাক্কানী গ্রুপকে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছিল। এদিকে এপ্রিল মাসে কাবুলে ট্রাকবোমা হামলার পর এক কংগ্রেশনাল শুনানিতে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রিচার্ড ওলসন স্পষ্টই বলেছেন, আমরা পাকিস্তান সরকারকে বিভিন্ন জঙ্গীগোষ্ঠীর মধ্যে যেন বিভেদ বৈষম্য না করে সে কথা বলেছি। পাকিস্তান এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় পরিবর্তনের কৌশলগত সংযোগস্থলে রয়েছে। পাকিস্তানকেই এখন একটি পথ বেছে নিতে হবে। এদিকে, নিউইয়র্ক টাইমসের ২৫ এপ্রিলসহ একাধিক প্রতিবেদনে জঙ্গীগোষ্ঠী উত্থানে পাকিস্তানের পৃষ্ঠপোষকতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি বলেছেন, পাকিস্তান তালেবান বাহিনীর মাধ্যমে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তালেবানদের উত্থানে পৃষ্ঠপোষকতা করছে পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি যদি না পাল্টায় তাহলে আফগানিস্তান পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ নিরাপত্তা কাউন্সিলে অভিযোগ জানাবে।
×