ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পদ্মা সেতুর পাইল বসছে ৩৮ নম্বর পিলারে

প্রকাশিত: ০৬:১০, ১৪ মে ২০১৬

পদ্মা সেতুর পাইল বসছে ৩৮ নম্বর পিলারে

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মুন্সীগঞ্জ ॥ পদ্মায় পাইল স্থাপন হচ্ছে এবার ৩৮ নম্বর পিলারে। এই পিলারটির ২, ৪ ও ৬ নম্বর পাইল বসানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ২/৩ দিনের মধ্যেই এই পিলারে পাইল ড্রাইভ হবে। ইতোমধ্যেই ১১টি পাইল স্থাপন হয়েছে। তিন মিটার ডায়ার এই পাইল ক্রমেই নদীর তলদেশে পাঠানো হচ্ছে। শুক্রবার জাজিরা প্রান্তে ভায়াডক্টের টিবি-৪ টেস্ট পাইল কংক্রিট ঢালাই চলছে। বেলা ১১টায় এই ঢালাই শুরু হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টির কারণে কাজে একটু বিঘিœত হয়। তবে ঝড় কমে যাওয়ার পর আবার কংক্রিটিং হচ্ছে। নির্দিষ্ট সময় শেষে এর ওপর চার হাজার টন ভর দিয়ে রাখা হবে। ভর দিয়ে ২৮ দিন টেস্টি করা হবে। ক¤িপউটার ও অন্যান্য যন্ত্র দিয়ে সর্বদা পর্যবেক্ষণে থাকবে। এরপর পরীক্ষায় টিকে গেলেই পরবর্তী ব্যবস্থা। ২৬৪টি পাইলের মধ্যে ২৪০টি স্টিল ও ভায়াডক্টের ২৪টি পিলার হবে কংক্রিট দিয়ে তৈরি। ঝড়-বৃষ্টি, পদ্মার প্রবল স্রোত সব কিছু ছাপিয়ে এগিয়ে চলেছে নির্মাণ কাজ। চারদিকে কাজ আর কাজ। নানারকমের ভারি ভারি যন্ত্রপাতি আর জলে ও স্থলে দেশী-বিদেশী নাগরিকদের কর্মব্যস্ততায় বাস্তবায়নের পথে এখন স্বপ্নের পদ্মা সেতু। সেতু সংশ্লিষ্টরা জানান, ৩৬ নম্বর পিলারে ৩টি পাইল স্থাপন করেই ৩৮ নম্বরে পাইল শুরু পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু ৩৬ নম্বর পিলারে ২ এবং ৬ নম্বর পাইল স্থাপনের ৪ নম্বর পাইল স্থাপন করা হয়নি টেকনিক্যাল কারণে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা জানান, এই পিলারে কাছে সয়েল লুস পাওয়ার কারণে আরেকটি পাইল স্থাপন আপততঃ করা হয়নি। তবে ৩৮ নম্বার পিলারে ৩টি পাইল স্থাপনের পর আবার এখানে আরও একটি পাইল বসানো হবে। কম্পেকশনের জন্য সেটেলম্যান্ট প্রয়োজন তাই সময় নেয়া হচ্ছে। তিন মিটার ডায়া এবং ১১৫ মিটার দীর্ঘ বিশাল পাইপ নদীর তলদেশে ঢোকানোর সময় আশপাশের মাটিও কেঁপে উঠে। হ্যামারের আঘাতে পদ্মা নদীর পানির নিচে মাটি ভেদ করে প্রতিক্ষণে ডুবছে ই¯পাতের তৈরি বিশালাকৃতির পাইল, সেই পাইলে উচ্চ ক্ষমতার হ্যামারের আঘাতে ৩ মিটার ব্যাসের গোলাকার পাইপ এক ইঞ্চি পর্যন্ত মাটির নিচে বসছে। এই পাইলগুলো এখন অনাগত পদ্মাসেতু মূল ভিত। আসন্ন বর্ষার কারণে সেতুর ৩৫ নম্বর পিলারের কাছে করলী চরে সাব কন্ট্রাকশন ইয়াড করা হয়েছে। এই ইয়ার্ড থেকেই এখন এই কাজ পরিচালিত হচ্ছে। বৈচিত্র্যময় পদ্মা সেতুর মাটির আকৃতিও বৈচিত্র্যময়। এসব মাথায় রেখেই মানসম্মতভাবে সেতুর কাজ পরিচালিত হচ্ছে। এদিকে মাওয়া প্রান্তের কুমারভোগের বিশাল ওয়ার্কসপে ক্রমেই তৈরি হচ্ছে এই বিশালাকৃতির পাইল। এ পর্যন্ত ৮৮টি পাইল তৈরি হয়ে গেছে। পাইলগুলো নদীতে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। উচ্চ ক্ষমতার আরেকটি হ্যামার আসার পরই পাইল স্থাপনের গতি বেড়ে যাবে। এছাড়া সর্বোচ্চ ক্ষমতার (২ হাজার ৪শ’ কিলোজুল) একমাত্র হ্যামার, হ্যামারটি ব্যবহারও সহজ হচ্ছে, ক্রমেই ত্রুটি হ্রাস পাচ্ছে। জার্মানীতে তৈরি এই হ্যামারটির ইলেক্ট্রনিক ডায়াগ্রাম রয়েছে সেখানে। সেখান থেকেই সম্ভাব্য ত্রুটির ব্যাপারে আগাম সতর্ক করা হচ্ছে। এছাড়া জার্মানী যে প্রকৌশরীরা এটি পরিচালনা করছেন, তারও এখন ছোট খাট সমস্যা সমাধান করতে পারছেন। এটির সঙ্গে রয়েছে এক হাজার টন ক্ষমতার ক্রেন। এই উচ্চ ক্ষমতার ক্রেন এর আগে বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়নি। যমুনা সেতুতে ব্যবহার হয়েছে ৫শ’ টন ক্ষমতার ক্রেন।
×