ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মোবাইল কোর্টের অভিযান

অভিজাত শপিং মলে ভেজাল ও পচা-বাসি খাবার

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১২ মে ২০১৬

অভিজাত শপিং মলে ভেজাল ও পচা-বাসি খাবার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিত্তবান থেকে মধ্যবিত্তের কাছে পণ্য বিপণনের ডিপার্টমেন্টাল শপিং কালচারের ধুয়া তুলে ভেজাল পণ্যের রমরমা ব্যবসা করছে আগোরা, স্বপ্ন, মিনাবাজারের মতো নামীদামী প্রতিষ্ঠান। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বিশালাকার এসব শপিংমলে গিয়ে কাঁচাবাজার থেকে কসমেটিক্স পণ্য কেনার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠার পর এখন ধরা পড়ছে ভেজালের ঘটনা। অবিশ্বাস্য কায়দায় ভেজাল পণ্য বিপণন করার কাহিনী বেরিয়ে আসছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে। শুধু ভেজাল নয়, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে মহিলা ক্রেতাদেরও লাঞ্ছনা ও যৌন হয়রানির মতোও ঘটনা ঘটছে এ সব শপিংমলে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মালিবাগ মোড়ের চেইন শপ স্বপ্ন-তে গিয়ে কেনাকাটার সময় সুমাইয়া নামের এক ক্রেতা লাঞ্ছিত হন। এ ঘটনায় শাহজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তার স্বামী অধ্যাপক রেজওয়ান। সে মামলায় স্বপ্নর পাঁচ কর্মচারীর নামে চার্জশীটও প্রদান করা হয়। এ ধরনের প্রতিষ্ঠানে ভেজাল অভিযানে সর্বশেষ বুধবারও মেয়াদোত্তীর্ণ ও পচা খাবার রাখার দায়ে সুপারশপ আগোরা, মিনাবাজার ও অভিজাত ফাস্টফুডের দোকান কুপার্সকে জরিমানা ও কর্মকর্তাদের কারাদ- দেয়া হয়েছে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ বুধবার রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় ভেজালবিরোধী এ অভিযান চালায়। এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ শাস্তি দেয়া হয়। অভিযানটি পরিচালনা করেন ঢাকা মেট্রোপলিটনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান। নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩’ অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ টাকা জরিমানা ও এক কর্মকর্তাকে ২ বছরের কারাদ- দেয়া হয়। এ আইনে পচা মাছ, মাংস ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য রাখার জন্য আগোরার ম্যানেজার মনিরুল ইসলামকে ২ বছর বিনাশ্রম কারাদ- ও ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ- দেন ম্যাজিস্ট্রেট। এ সময় ফাস্টফুডের দোকান কুপার্সেও অভিযান চালানো হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি ও অন্যান্য খাবার রাখার দায়ে এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদ- দেয়া হয়। এরপর সর্বশেষ শান্তিনগরের মিনাবাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সুপার শপেও পচা মাছ, মাংস ও মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু পণ্য পাওয়া যায়। মিনা বাজারের অফিসার ইনচার্জকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ- দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের এক পর্যায়ে সেখানে হাজির হন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন হওয়ার পর এতদিন পর্যন্ত আমরা দৃশ্যমান কোন কাজ শুরু করতে পারেনি। আজ থেকে দৃশ্যমান কাজ শুরু করলাম। রাজধানীর সবচেয়ে নামকরা সুপার শপগুলোতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয় জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কর্তৃপক্ষ এ সমস্ত পচা মাছ, মাংস কোন স্থান থেকে কিনেছেন, কবে কিনেছেন এ সংক্রান্ত কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের এ ভেজালবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ আইনের মাধ্যমে এ অভিযান পরিচালনা করা হবে। পর্যায়ক্রমে এ অভিযান দেশব্যাপী পরিচালনা করা হবে। আসন্ন রমজানে রাজধানীর প্রতিটি অভিজাত শপিং মলেই এ ধরনের অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। অভিযান পরিচালনার সময় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মুশতাক হাসান মুহ. ইফতিখার, পরিচালক মোঃ খালেদ হোসেনসহ খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
×