ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া

দুই সেনা সদস্যকে জড়িয়ে তনুর মায়ের বক্তব্যে তোলপাড়

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১২ মে ২০১৬

দুই সেনা সদস্যকে জড়িয়ে তনুর মায়ের বক্তব্যে তোলপাড়

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুমিল্লা, ১১ মে ॥ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যাকা-ের ৫২ দিন পর দুই সেনা সদস্যকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে মা আনোয়ারা বেগমের দেয়া বক্তব্য নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। এছাড়া দীর্ঘদিন পর হঠাৎ এ ধরনের বক্তব্যে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এদিকে সিআইডি-ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি দল বুধবার বেলা ১১টার দিকে কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় যে স্থান থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল সেই স্থান পরিদর্শনে যায়। ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তদন্ত সহায়ক দল ঢাকার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা ত্যাগ করে। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে ৫ম বারের মতো কুমিল্লায় আসে তদন্ত সহায়ক দল। ওইদিন তনুর বাবা-মা, ভাই ও চাচাত বোন, সহপাঠী ও স্থানীয় শিল্পীসহ ১০জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। এদিকে হত্যাকা-ের ৫৩ দিন পেরিয়ে গেলেও এ পর্যন্ত ঘটনার রহস্য উদঘাটন বা কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি তদন্তকারী দল। দীর্ঘদিনেও ঘাতকদের কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে তনুর পরিবার। এদিকে সিআইডি কার্যালয়ে প্রবেশকালে তনুর মা আনোয়ারা বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর লোকজনই তনুকে হত্যা করেছে। এ সময় তিনি সার্জেন্ট জাহিদ ও সৈনিক জাহিদের নাম উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর অনুষ্ঠানে যোগ না দিয়ে পিকনিকে যাওয়ার কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে তনুকে হত্যা করা হয়েছে। প্রতিশোধ নিতে তনুর চুল কেটে নেয়া হয়েছে। তার এ বক্তব্যের পর তনুর হত্যাকা-ের ঘটনায় প্রতিবাদীমহলে ব্যাপক তোলপাড় ও প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। তদন্তকারীদলের একটি সূত্র জানায়, ঘটনার দিন কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেনাবাহিনীকে দায়ী করে তনুর মা আনোয়ারা বেগমের বক্তব্যের সূত্র ধরে এবং বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে ওই অনুষ্ঠানের বিষয়ে জানার জন্য শিল্পীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বুধবার তনু হত্যা মামলার তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান ও সিআইডি ঢাকার বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দের নেতৃত্বে সিআইডির উচ্চ পর্যায়ের দলটি পুনরায় কুমিল্লা সেনানিবাসে যায়। সেখানে গিয়ে তনুর লাশ যেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ওই স্থানটি পরিদর্শন করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান, অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার প্রণব কুমার রায়, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও সিআইডি-ঢাকার পরিদর্শক গোলাম মাওলা। ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে তনুর বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন তদন্তকারী দলের সঙ্গে ছিলেন। বিকেলে তদন্ত সহায়ক দল ঢাকার উদ্দেশ্যে কুমিল্লা ছেড়ে যায়। সিআইডি-কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম খান সাংবাদিকদের জানান, তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এ হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন ও ঘাতকদের শনাক্ত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শীঘ্রই এ বিষয়ে আলোর মুখ দেখাতে পারব বলে আশা করছি।
×