ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ থেকে ১৯ মে মা-শিশু স্বাস্থ্য সেবা ও প্রচার সপ্তাহ

প্রকাশিত: ০৪:১৬, ১২ মে ২০১৬

১৪ থেকে ১৯ মে মা-শিশু স্বাস্থ্য সেবা ও প্রচার সপ্তাহ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাল্যবিবাহ। এটি এখনও একটি বড় সামাজিক সমস্যা হিসেবে বিদ্যমান। ১৮ বছর বয়স হওয়ার পূর্বে মেয়েদের বিয়ে না দেয়ার বিদ্যমান আইন বেশি মাত্রায় লঙ্ঘন করা হয়ে থাকে। ১৮ বছর বয়স হওয়ার আগেই দেশে শতকরা ৬৬ ভাগ মেয়ের বিয়ে হয়। এর এক-তৃতীয়াংশ ১৯ বছর বয়স হওয়ার আগেই গর্ভবতী অথবা মা হয়ে যান। গত দশ বছরে আধুনিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির ব্যবহারকারীর হার ৪৭.৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৪.১ শতাংশে উন্নীত হলেও স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পদ্ধতিতে তেমন কোন অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএম ইউনিট ইউএনএফপি’র আর্থিক সহায়তায় প্রতি বছর দু’বার দেশব্যাপী সেবা ও প্রচার কার্যক্রম সপ্তাহ উদযাপন করে থাকে। এবারে প্রথম পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু স্বাস্থ্যসেবা ও প্রচার সপ্তাহ-২০১৬ আগামী ১৪ থেকে ১৯ মে দেশব্যাপী সরকারী ও বেসরকারী পর্যায়ের সকল সেবা কেন্দ্রের উদযাপনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এবারের সেবা ও প্রচার সপ্তাহের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্বাচিত হয়েছে ‘প্রসব পরবর্তী পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ, নিশ্চিত করে সুস্থ-সুন্দর পারিবারিক বন্ধন।’ বুধবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের মহাপরিচালক ওয়াহিদ হোসেন প্রমুখ । পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক সেবা ও প্রচার সপ্তাহ সফল করার আহ্বান জানিয়ে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতর পরিকল্পিত পরিবার গঠনের লক্ষ্যে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য, বয়ঃসন্ধিকালীন, প্রজনন স্বাস্থ্য, নিরাপদ মাতৃত্ব, জেন্ডার বিষয়ক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে বিগত ছয় দশক ধরে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। দেশের সকল সক্ষম দম্পতিদের যদি পরিবার পরিকল্পনা, মা-শিশু স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য ও সেবা প্রাপ্তির সহজ সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, তবে কর্মসূচীতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ অনেকাংশেই উত্তরণ করা সম্ভব। দেশব্যাপী এই সেবা ও প্রচার সপ্তাহ উদযাপনের অংশ হিসেবে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এ্যাডভোকেসি সভার আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে। সেবা ও প্রচার সপ্তাহের থিম’র ওপর ভিত্তি করে এবার দুই ধরনের পোস্টার ও চার ধরনের লিফলেট মাঠ পর্যায়ে সরবরাহ করা হয়েছে। গর্ভকালীন সেবা, গর্ভবতীর বিপদচিহৃ, নিরাপদ প্রসবে সম্ভাব্য বিলম্ব, প্রসব পরবর্তী পরিচর্যা ও পরিবার পরিকল্পনা বিষয়ক তথ্য সম্বলিত ওয়াল প্ল্যাকার্ড তৈরি করে তৃণমূল পর্যায়ের সেবাকেন্দ্র পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছে। এমসিএইচ ইউনিট থেকে এসব সেবাকেন্দ্রে ইতোমধ্যে ডেলিভারি কিট সরবরাহের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গর্ভকালীন সেবা গ্রহণের হার ২০১১ সালের তুলনায় ৪৩ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮ শতাংশ হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক ও দক্ষ সেবাদানকর্মী দ্বারা প্রসবের হার বেড়ে প্রায় ৩৭ শতাংশ হয়েছে। শিশু মৃত্যু হ্রাসেও উল্লেখযোগ্য সাফল্য এসেছে। প্রতি ১ হাজার জীবিত জন্মে নবজাতকের মৃত্যুর হার ৩২ থেকে ২৮, এক বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু হার ৪৩ থেকে ৩৮ এবং ৫ বছরের কম বয়সী শিশু মৃত্যু হার ৫৩ থেকে ৪৬ এ হ্রাস পেয়েছে। অপূর্ণ চাহিদা হ্রাস পেয়ে ১৪ থেকে ১২তে এসেছে। আর ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সী মায়েদের ক্ষেত্রে সন্তান গ্রহণ প্রবণতা অর্থাৎ কিশোরী বয়সে মাতৃত্বও উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এসকল পরিমাপকে ধনাত্মক পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হলো সময়ের সঙ্গে মা ও শিশু স্বাস্থ্যে নতুন নতুন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ। সরকারের এ প্রচেষ্টার পাশাপাশি গণমাধ্যমের সক্রিয় সহযোগিতা আমাদের একান্তভাবে কাম্য বলে জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী।
×