ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বিচিত্র সাংস্কৃতিক প্রতিভা তৌফিক আহমেদ

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ১০ মে ২০১৬

বিচিত্র সাংস্কৃতিক প্রতিভা তৌফিক আহমেদ

সমুদ্র হক ॥ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রায় সব শাখাতেই আছে তার পদচারণা টাঙ্গাইলের সন্তান তৌফিক আহমেদের। একাধারে তিনি নাট্যশিল্পী, নাট্যকার, নির্মাতা, সুরকার, গায়ক, সাহিত্যিক। মঞ্চ ও টিভিতে অভিনয় করে নিজের মেধার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ৩০টি টিভি নাটক এবং সমান সংখ্যক মঞ্চ নাটকে অভিনয় করেছেন। মঞ্চনাটকগুলোর বেশিরভাগ নিজের লেখা। এ পর্যন্ত তিনি কিছু পুরস্কার পেয়েছেন। স্কুল জীবনেই অভিনয়ে হাতে খড়ি তৌফিক আহমেদের। তবে বিটিভিতে নিবেদন অনুষ্ঠানের গীতি আলেখ্য গ্রামীণ ঘটকের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ছোট পর্দায় তার পথচলা শুরু। এরপর ‘চাঁদবানু পাহাড়ের ফুল’ গীতিনাট্যে কাজের মাধ্যমে নজরে পড়েন হুমায়ূন আহমেদের। ‘জ্যোৎ¯œার ফুল’ নাটকে অভিনয়ের সময়ই ঈদের ‘কানা বুড়ির ছা’ নাটকে হেড মাস্টারের চরিত্রে অভিনয় করে পরিচিতি পান। তৌফিক আহমেদ অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে এটিএন বাংলার ‘প্রজ্ঞা পারমিতা’, এনটিভির ‘তবুও জীবন’, ‘সময়’, চ্যানেল নাইনের ‘ধন্যি মেয়ে’, বৈশাখী টিভির ‘৭১ ও একটি পাতা’, ‘পথিক’, ‘মায়াকানন’, ‘হরণ’, ‘বনিয়ে বলা’ নাটকে অভিনয় করেন। তিনি ‘জীবনের খোঁজে’ ও ‘পথের কাঁটা’ নামে দুটি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। মামুনুর রশিদের ডকুমেন্টারিতেও অংশ নিয়েছেন। তার লেখা নাটক ‘পুতুলের বিয়ে’ বিটিভিতে একাধিকবার প্রচার হয়েছে। নিজের লেখা মঞ্চস্থ নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নিদানকাল’, ‘বৈরী বাতাস’, ‘দুঃসময়ের মুখোমুখি’, ‘মুখোশের মঞ্চে’, ‘আলো আধারের যাত্রী’, ‘নিন্দিত নায়ক’, ‘অনশন’, ‘পালাবাদলের খেলা’, ‘বঙ্গ রমণীর কিচ্ছা’, শিশুতোষ নাটক ‘মগজ ধোলাই’, ‘ফুটপাত’, ‘বস্তি’, ‘মানিক রতন’, ‘দুই দিগন্ত’, ‘উদ্বাস্তু’ প্রভৃতি। এর মধ্যে ‘ফুটপাত’ নাটকটি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। তৌফিক ৫ শতাধিক গান লিখেছেন। এর মধ্যে দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন মৌটুসী। কয়েকটি গান নিজে সুর করে গেয়েছেন। তার একটি এ্যালবাম প্রকাশ হয়েছে। রাষ্ট্র বিজ্ঞানে মাস্টার্স তৌফিক আহমেদের স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তান নিয়ে সংসার। স্ত্রী ও সন্তানরা অভিনয়ে তাকে উৎসাহ দেয়। অবসরে তিনি ছড়া লেখেন। ৬টি নাটক নিয়ে একটি নাট্যগুচ্ছ প্রকাশনা আছে তার। গণস্বাক্ষরতা অভিযান কর্তৃক প্রকাশিত একক ও যৌথ নামে ১২টি গল্প ছড়া ও নাটকের প্রকাশনা রয়েছে। সংস্কৃতির সব ধারায় তিনি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তৌফিক আহমেদ সারা জীবন সাংস্কৃতিক কর্মকা- ও সাহিত্যের সঙ্গে থাকতে চান। তবে মঞ্চকেই তিনি লালন করেন। কারণ মঞ্চের অভিনয়ে অডিয়েন্সের রায় তাৎক্ষণিক পাওয়া যায়। মঞ্চে যিনি যত সফল অন্য মাধ্যমে তার পথ চলতে কষ্ট হয় না। সংস্কৃতিবান এই মানুষটি এগিয়ে যাবেন তার সাফল্যের লক্ষ্যে সেই প্রত্যাশা।
×