ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১০ মে ২০১৬

যথাযোগ্য মর্যাদায় বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় সোমবার পালিত হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী ও প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী মরহুম ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার (সুধা মিয়া) ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে দিনভর মরহুমের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন, স্মরণ সভা, রক্তদান, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ এবং মসজিদ-মন্দির-গীর্জায় বিশেষ দোয়া ও প্রার্থনা হয়। বাদ আছর ধানম-ির সুধাসদনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়। মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা শরিক হন। সোমবার রাজধানীর জাতীয় গণগ্রন্থাগার মিলনায়তনে ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, মিথ্যাচার করে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া রাজনীতিতে টিকে থাকতে পারবেন না। এভাবে মিথ্যা করলে খালেদা জিয়া ধ্বংসের পথ থেকে নিজেকে বেশিদিন রক্ষা করতে পারবেন না। ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এই স্মরণ সভায় মোহাম্মদ নাসিম তনুসহ সকল হত্যাকা-ের বিচার বাংলাদেশের মাটিতেই হবে জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে একের পর এক সকল হত্যাকা-ের বিচার করছেন। তাই তদন্তপূর্ব তনুসহ সকল হত্যাকা-ের বিচার হবে। যে কোন হত্যাকা- সংঘটিত হলে তদন্ত করতে একটু সময় লাগে। তাই সকল হত্যাকা-ের সঠিক তদন্ত করেই বিচার করা হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কোন হত্যাকা-ের বিচার করেনি দাবি করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে কোন হত্যাকা-ের বিচার করেননি। বরং খুনীদের পুরস্কৃত করেছেন। তাঁর স্বামী জিয়াউর রহমানের হত্যার বিচারও করেননি। সংগঠনের সভাপতি এ কে এম ফরাহদুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, সংসদ সদস্য হোসনে আরা বাবলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ আজিজুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ বাদ আছর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিস্থ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও স্মরণ সভার আয়োজন করে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের সভাপতিত্বে সভায় খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, নগর আওয়ামী লীগ নেতা ডাঃ দিলীপ রায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া ছাত্রলীগের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্র্রীয় জামে মসজিদে বাদ আছর মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। ওয়াজেদ মিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের ড. আনোয়ার হোসেন মিলনায়তনে এক স্মরণ সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মোঃ আলী জুলকারনাইন। অনুষ্ঠানে ওয়াজেদ মিয়ার কর্মময় জীবনের ওপর আলোকপাত করেন বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. নঈম চৌধুরী, একই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থার প্রধান, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সদস্য, বিজ্ঞানী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ। অনুষ্ঠানে দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে ড. ওয়াজেদ মিয়ার রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ওয়াজেদ মিয়ার স্মরণে সাধনা সংসদ ফাউন্ডেশন আলোচনা সভার আয়োজন করে। সংগঠনের সভাপতি ড. এ এস এম মাকসুদ কামালের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জমান খান কামাল, জগন্নাথ হল ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি সুভাষ সিংহ রায় প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এদিকে পীরগঞ্জ উপজেলায় দিনভর নানা কর্মসূচী পালনের মধ্য দিয়ে দেশবরেণ্য পরমাণু বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়ার ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। এছাড়াও পীরগঞ্জের জয়সদন প্রাঙ্গণে সকালে এ বিজ্ঞানীর স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি একেএম ছায়াদত হোসেন বকুল সভাপতিত্ব করেন। পরে সেখানে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষে গরিব-দুঃখীর মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়। এছাড়া পীরগঞ্জ প্রেসক্লাব এ বিজ্ঞানী স্মরণে সন্ধ্যায় পৃথক আলোচনা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। বাসস জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও সংসদ সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ওয়াজেদ মিয়ার আত্মীয়-স্বজন, গুণগ্রাহী ও প্রতিবেশীরা মিলাদ ও দোয়ায় অংশগ্রহণ করেন। মিলাদ ও দোয়ায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে শেখ হেলালউদ্দিন এমপি, ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল, সাবেক সংসদ সদস্য ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও গণভবনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ছিলেন। মোনাজাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
×