ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাইমুম সাদ

এইচএসসির পর ক্যারিয়ার ভাবনা

প্রকাশিত: ০৭:০৩, ৯ মে ২০১৬

এইচএসসির পর ক্যারিয়ার ভাবনা

আর কয়েকদিন পর শেষ হচ্ছে এইচএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষ মানেই মাথায় চাপে ক্যারিয়ার ভূত! কারণ নিজের পছন্দমতো পেশায় ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে এখনই তার নীলনকশা কষতে হবে। নীর নকশার গোড়ায় যেন গলদ না হয় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে কারণ এই মুহূর্তের ছোট একটি ভুল সিদ্ধান্তের মাসুল সারাজীবন আপনাকে বয়ে বেড়াতে হবে। নিজের জীবনের গতিপথ নিজেকেই আঁকতে হবে আর তাই এইচএসসির পর অবসর সময়টুকু আড্ডাবাজি। বাউন্ডুলেপনা কিংবা এ্যাডভেঞ্চারে না কাটিয়ে আপনি ভাবতে পারেন আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে। সেই প্রথম শ্রেণী থেকে আজ অবধি গদবাঁধা লেখাপড়ার চাপে কেউই ক্যারিয়ার নিয়ে ভাববার জন্য আলাদা সময় পান না সেই অর্থে ক্যারিয়ার নিয়ে ভাববার জন্য এইচএসসি পরবর্তী দু’মাসই শেষ ভরসা। এই দু’মাসের প্ল্যানিং শেষেই শুরু করে দিন ক্যারিয়ারভিত্তিক পড়াশোনা। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্সের ওপর দখল রাখতে হবে। অথবা ফার্মেসিতে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলো রপ্ত করতে হবে। তবে সব বিভাগের ছাত্রছাত্রীদের জন্যই ইংরেজী ও সাধারণ জ্ঞান বাধ্যতামূলক। তাই সম্ভব হলে ইংরেজীর ওপর স্বল্পমেয়াদী কোন কোর্স করতে পারেন আর সাধারণ জ্ঞান অর্জনের জন্য গুটিকয়েক বাজারে টাইপের বইয়ে বুঁদ থাকলে চলবে না। নিয়মিত দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়তে হবে। প্রয়োজনে নোটও ঘাঁটাঘাঁটি করতে পারেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ভার্সিটিতে খবরাখবর রাখতে হবে। ফরম ছাড়লেই পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পছন্দমতো সাবজেক্টে ফরম তুলতে পারেন। পরীক্ষা শেষে পছন্দমতো সাবজেক্টে ভর্তি হতে পারলেই আপনার স্বপ্নের অনেকটাই পূরণের পথে। * ক্যারিয়ার পছন্দের কার্যকারণ ও সম্ভাবনা : অনেকে হয়ত ভাবছেন আমি সাংবাদিকতা কিংবা ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়ব কিন্তু এই ক্যারিয়ারে যেতে চাইলে আপনার করণীয় কি কিংবা এই বর্তমান প্রেক্ষাপটে এই ক্যারিয়ারের সম্ভাবনাই বা কতটুকু তা অনেকেরই জানা নেই। তাহলে চলুন এবার জেনে নেয়া যাকÑ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হতে চাইলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে উৎপাদিত বস্ত্রের চাহিদা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়ছে। আর সেই অনুপাতে গার্মেন্টসের সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে বায়িং হাউসও। বর্তমানে বায়িং হাউসগুলোতে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারণ এখনকার বায়িং হাউসগুলো হয়ে গেছে প্রযুক্তিনির্ভর। আর প্রযুক্তিগতভাবে সুতা তৈরি। কাপড় তৈরি। কাপড়ে রং করা ও পোশাক তৈরিই হলো টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারের কাজ। এই কাজগুলো আবার ৪টি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে। ইয়ার্ন ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্রেবিক ম্যানুফ্যাকচারিং, ওয়েট প্রসেসিং ও গার্মেন্টস ম্যানফ্যাকচারিং। বর্তমানে শুধুমাত্র বায়িং হাউসগুলো ছাড়াও উইবিং, নিটিং, ডাইং, ফিনিশিংয়ের কারখানাগুলোতেও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই পেশায় আপনাকে ক্যারিয়ার গড়তে হলে অবশ্যই স্বীকৃত কোন বেসরকারী ভার্সিটি থেকে টেক্সটাইলের ওপর স্নাতক সম্পন্ন করতে হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণও নিতে পারেন। হতে চাও একজন স্মার্ট ব্যাংকার সময়ের স্মার্ট পেশা ব্যাংকিং। সরকারী ব্যাংকগুলোর পাশাপাশি দেশে বেসরকারী ব্যাংকের সংখ্যা ক্রমবর্ধমানহারে বাড়ছে। সেই তুলনায় বাড়ছে ব্যাংকগুলোর সেবার মান। নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় পেশা হিসেবে অনেকেই ব্যাংকিংকে প্রথম পছন্দে রাখেন। তবে আপনাকে এই পেশায় সফল হতে হলে অবশ্যই সদালাপী, মিশুক হতে হবে। ব্যাংকিংয়ে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে অবশ্যই এ্যাকাউন্টিং, ফিন্যান্সের ওপর স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে প্রায় সব ভার্সিটিগুলোতে স্নাতক সম্পন্ন করতে পারেন। পাশাপাশি প্রাইভেট ভার্সিটিগুলোতেও এই সাবজেক্টগুলোতে পড়তে পারেন। (গ) পেশা যখন আর্কিটেকচার এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংÑ ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্টের নকশার কাজটা মূলত আর্কিটেক্টরা করে থাকেন। সবমিলিয়ে দেশে অবকাঠামো উন্নয়নে আর্কিটেক্টদের জুড়ি মেলা ভার। চাইলে আপনিও একজন প্রকৌশলী হিসেবে দেশ গড়ার অংশীদার হতে পারেন আর এই জন্য আপনাকে এইচএসসি শেষ করেই সরকারী পলিটেকনিকগুলোতে বিএসসি ইন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। প্রতিশ্রুতিশীল পেশা ফার্মাসিউটিক্যালস বিশ্ববাজারে বাংলাদেশে তৈরি ওষুধের রফতানি বাড়ছে। সেই সাথে এই পেশায় লোকবল নিয়োগও বাড়ছে। ওষুধ কোম্পানিগুলোর সারাদেশে প্রচার-প্রসার-বিক্রির জন্য হাজার হাজার কর্মী প্রয়োজন। এই পেশায় আপনি অনেকটাই স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন। সেলস রিপ্রেজেন্টিভ হিসেবে কাজ করতে গেলে আপনার পরিচিতির পরিধি যেমন বাড়বে তেমনি বাড়বে আপনার সামাজিক মর্যাদা। এ ছাড়াও এই পেশার আরেকটি বড় সুবিধা হলো মাস শেষে নির্দিষ্ট বেতনের পাশাপাশি আপনি টার্গেট ফিলাপ করতে পারলে আপনার জন্য কমিশনেরও ব্যবস্থা থাকবে। সব মিলিয়ে এই পেশায় আসতে চাইলে আপনাকে এইচএসসির পরেই এমএসসি এমবিএ কোর্সে ভর্তি হতে হবে। তবে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞানের ছাত্র হতে হবে।
×