ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তৌফিক অপু

জীবন যাপনে রবীন্দ্রনাথ

প্রকাশিত: ০৭:০১, ৯ মে ২০১৬

জীবন যাপনে রবীন্দ্রনাথ

সত্যিকার অর্থেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাঙালী সত্তার অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রতিনিয়ত বেঁচে থাকার প্রেরণা। সৃজনশীলতার অনন্য এক নাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যিনি আজও আমাদের শিল্প সাহিত্যের মুকুটহীন রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত। উপন্যাস, কবিতা ও নাটকে এসেছে বৈচিত্র্য আর সঙ্গীত সৃষ্টির ক্ষেত্রে তো এখনও তাঁকে বলা হয় অতুলনীয় স্রষ্টা। এছাড়া তিনি ছিলেন একাধারে সমাজ ও রাষ্ট্র চিন্তাবিদ এবং ভাষাবিজ্ঞানী। তবে তাঁর প্রধান পরিচয় তিনি কবি। শিল্প-সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় সামান তালে বিচরণ করা লেখকের সংখ্যা এখন পর্যন্ত কম, যে কারণে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তেই উচ্চারিত হয় বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম। যিনি বাংলা শিল্প সংস্কৃতিকে নিয়ে গেছেন অন্য এক উচ্চতায়। বাংলাভাষা এবং বাঙালি জাতিসত্তার সঙ্গে যে ব্যক্তিটির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য, তিনি হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। যার ছোঁয়ায় বাঙালী সংস্কৃতির আধুনিক রূপায়ণ ঘটেছে। পৃথিবীর উল্লেখযোগ্য কবিদের মধ্যে তিনি একজন। তাঁর সব্যসাচী হাতের স্পর্শে প্রাণ পেয়েছে বাংলা ছোট গল্পের সীমাবদ্ধ অধ্যায়। ২৫ বৈশাখ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন, বাঙালী জাতির জন্য একটি অন্যতম দিন। যে দিনটি কখনই ভোলার নয়। মনে হয় আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র সেদিন যেন আবির্ভাব হলো। নানা আয়োজনে পালন করা হয় বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকি। প্রতিবারের ন্যায় এবারও এর ব্যক্তিক্রম হবে না। তবে প্রতিবছরই একটু একটু করে বৃদ্ধি পায় আয়োজনের পরিধি। বাঙালীর প্রাণের মানুষের এই জন্মদিন কিংবা মৃত্যুবার্ষিকি পালনে থাকে না কোন কার্পণ্য। বেশ আড়ম্বর ভাবেই পালিত হয়ে থাকে আয়োজনগুলো। এ উৎসব পালনে থাকে না জাতি-ধর্ম ভেদাভেদ। শুধুুমাত্র তার অতুলীয় সৃষ্টিকে উপজীব্য করে সবাই মিলিত হয় প্রাণের মেলায়। একেকজন একেক আঙ্গিকে পালন করে থাকে এ আয়োজন। শুধুমাত্র সামাজিক আয়োজনেই সীমাবদ্ধ নয় ব্যক্তিগত জীবনেও ওতোপ্রতো ভাবে জড়িয়ে আছে রবীন্দ্রনাথ। জীবন চলার উপদেশ কিংবা জীবন সাজানোর রসদ সবই যেন রবীন্দ্রনাথ থেকে পাওয়া যায়। সুন্দর জীবনের পাথেয় হিসেবে আজও রবীন্দ্রনাথ পাথেয় হয়ে আছেন। আর একারণেই তাঁর বিশেষ দিবসে ঘরের সাজ সজ্জাতেও থাকে ভিন্নতা। প্রতিটি কোণেই যেন রাবীন্দ্রীক ছোঁয়া প্রতীয়মান হয়ে ওঠে। শো পিস র‌্যাকের শোপিস গুলো সেজে ওঠে রবীন্দ্রনাথের প্রতিকৃতিতে। বুকশেলফ গুলো ভরে ওঠে রবীন্দ্রনাথের গান, গল্প, উপন্যাসের বইয়ে। পোশাকেও ঠাঁই পায় রবীন্দ্রনাথ। এই ধারাবাহিকতায় পিছিয়ে নেই ফ্যাশন হাউসগুলো। তারাও বিশ্বকবিকে পোশাকী ভাবধারা বজায় রেখেছে। অর্থাৎ পোশাক-আশাকে বিশ্বকবির ভাবধারা ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছে। এ ব্যাপারে ফ্যাশন হাউস নিত্যউপহার এবং শঙ্খবারের কর্ণধার বাহার রহমান জানান, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং বাঙালীর শিল্প- সংস্কৃতি যেন মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। বাংলা সাহিত্যকে তিনি অন্য এক আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন। আমরা চেষ্টা করেছি শুধুমাত্র তাঁর ভাবধারা নতুন প্রজন্মের সামনে তুলে আনতে। আমরা যে সেক্টর নিয়ে কাজ করছি সে সেক্টরেই চেষ্টা করছি বিশ্বকবির ভাবধারা তুলে আনতে। যেমন টি-শার্টে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উল্লেখযোগ্য কবিতার পঙক্তি কিংবা বাণী ব্যবহার করা হয়েছে। তাঁর মুখাকৃতি দিয়েও টি-শার্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজেও এই আবহ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পোশাকে রবীন্দ্রনাথÑশুধু এই ব্যাপারটিই নয়, এখন ফ্যাশন ট্রেন্ডে উৎসব কিংবা উপলক্ষভিত্তিক পোশাকের প্রচুর জনপ্রিয়তা। তরুণরা আগ্রহ ভরে কিনছে পোশাক। বিশ্বকবির ভাবধারা পোশাকে তুলে আনতেও তা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। পোশাকগুলো পাওয়া যাবে দেশীয় বুটিক হাউস ছাড়াও বিভিন্ন ফ্যাশন আউট লেটে। যেমন রঙ, আড়ং, দেশী দশ ও আজিজ সুপার মার্কেটের বিভিন্ন আউট লেটে। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জীবনের যে ভাবধারা আমাদের জন্য রেখে গেছেন তা একজন মানুষের পরিপূর্ন ভাবে বেড়ে ওঠা জন্য যথেষ্ট। জীবন যাপনের প্রতিটি শাখায় কবি গুরু যেন বিরাজমান। এমন মানুষ সব সময়ই আসে না। আমরা গর্বিত কবিগুরুকে আমাদের সংস্কৃতির ধারক হিসেবে পেয়ে। জীবনের পথ তাঁর নির্দেশনায় চোখ বন্ধ করেই হেটে যাওয়া সম্ভব। তাঁর জন্মদিনে রইল তাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা। ছবি : ফেরদৌস মডেল : সাদিয়া, লিফা ও রিদান মেকআপ : পারসোনা পোশাক : রঙ বাংলাদেশ
×