ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রসুনের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন

প্রকাশিত: ০৫:৫৩, ৯ মে ২০১৬

রসুনের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ হঠাৎ চড়া রসুনের বাজার। শনিবার একদিনেই কেজিপ্রতি ৭০ টাকা বেড়েছে চীনা রসুনের দাম। রাজধানীর কাওরানবাজারে গত শুক্রবার যে রসুন ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে, পরদিন তা ২৫০ টাকা চেয়েছেন খুচরা বিক্রেতারা। চীনা রসুনের সঙ্গে দাম বেড়েছে দেশী রসুনেরও। কেজিপ্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়ে দাম উঠেছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, দাম বাড়ার কারণ চীনা রসুনের সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তবে এটা স্থায়ী হবে না, শীঘ্রই দাম কমে যাবে। রান্নার প্রাথমিক মসলাগুলোর একটি রসুন। পণ্যটির চাহিদার সিংহভাগ দেশেই উৎপাদিত হয়। গত কয়েক বছরে চীন থেকে আমদানি করা বড় আকারের রসুন বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। ঢাকার বাজারে ওই রসুন কয়েক মাস ধরে কেজিপ্রতি ১৮০ টাকার কাছাকাছি দরে বিক্রি হচ্ছিল। কাওরানবাজারের মসলাজাতীয় পণ্যের খুচরা বিক্রেতা মমিন উদ্দিন তালুকদার শনিবার ভাল মানের চীনা রসুন প্রতি কেজি ২৭০ টাকা চেয়েছেন। তিনি দাবি করেন, কয়েকদিন আগেও একই মানের রসুন তিনি ১৮০-১৯০ টাকায় বিক্রি করেছেন। কাওরানবাজারের মসলার আড়তের ২৫ নম্বর দোকানের বিক্রেতা রেজাউল চীনা রসুন ২৫০ টাকা ও দেশী রসুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছিলেন। অবশ্য এ দর পাইকারি ক্রেতাদের জন্য। তিনি বলেন, বাজারে চীনা রসুনের সরবরাহে ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সরবরাহ বাড়লেই আবার দাম কমে যাবে। ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসাবে, এক বছর আগের তুলনায় এখন চীনা রসুনের দাম প্রায় ১৬৭ শতাংশ বেশি। চীনা রসুনের দাম গতকাল কেজিতে ৬০ টাকা বেড়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংস্থাটির বাজারদরের তালিকায়। সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত একটি সভার কার্যপত্রে বলা হয়, দেশে বছরে ৫ লাখ টন রসুনের চাহিদা আছে। এর সিংহভাগই দেশে উৎপাদিত হয়। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে রসুন উৎপাদিত হয়েছে ৪ লাখ ৬৫ হাজার টন। গত নয় মাসে আমদানি হয়েছে ৩৮ হাজার টন রসুন। কৃষিপণ্যের আমদানিকারক রতন সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, মাসখানেক পর চীনে নতুন মৌসুমের রসুন বাজারে আসতে শুরু করবে। তখন দাম কমে যাবে। এ কারণে এখন কেউ আমদানি করতে চাইছে না। এখন যেসব চীনা রসুন বাজারে আছে সেগুলোর আমদানি খরচ কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা পড়েছে উল্লেখ করে রতন সাহা বলেন, ‘চীনা রসুন খেতে হবে কেন? আমাদের দেশী রসুন বাজারে আছে। সেগুলোর দাম অনেক কম। মানুষ দেশী রসুন খেলেই আমদানি করা রসুনের ওপর চাপ কমবে।’ তবে দেশী রসুনের দামও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। ৬০-৭০ টাকা দামের রসুন এখন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। আর দেশী এক গোটার রসুনের দাম আরও বেশি। বাছাই করা এক গোটার রসুন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৩২০ টাকা দরে। এদিকে, হলুদ ও মরিচের দামও বেড়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হলুদ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২৫০ টাকা দরে। অন্যদিকে ২০ টাকা বেড়ে মানভেদে শুকনা মরিচ ১৪০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানান কাওরানবাজারের বিক্রেতা হাসান শরিফ। আদার দাম কমেছে। প্রতি কেজি চীনা আদা ৬০ টাকা ও দেশী আদা ৮০ টাকা চাইছেন বিক্রেতারা, যা আগে কেজিতে ২০ টাকা বেশি ছিল। পেঁয়াজের দাম অপরিবর্তিত আছে। কেজিপ্রতি দেশি পেঁয়াজ ৪৫ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।
×