ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ইউনিলিভার বিজমায়েস্ত্রো

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পতাকা

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৮ মে ২০১৬

বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের পতাকা

তরুণদের প্রতিভা বিকাশে ইউনিলিভার আমাদের দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই উদ্যোগের অন্যতম একটি উদাহরণ হচ্ছে বিজমায়েস্ত্রো, যা এক বাস্তবিক ব্যবসায়িক সমস্যার কেসভিত্তিক প্রতিযোগিতা। এর উদ্দেশ্য যাতে ছাত্রছাত্রীরা ব্যবসাভিত্তিক কার্যক্রমে তাদের সুপ্ত প্রতিভা প্রদর্শন করার সুযোগ পায়। এই বছর ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড ১২টি ক্যাম্পাসের ৫ হাজারের বেশি ছাত্রছাত্রী নিয়ে এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। তাদের মধ্য থেকে ৫শ’-এর অধিক ছাত্রছাত্রী প্রতিযোগিতাভুক্ত হয়। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্য থেকে ১২টি টিম সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌঁছায়। শিক্ষার্থীদের রিয়েল লাইফ বিজনেস চ্যালেঞ্জ দেয়া হয় যার মাধ্যমে তাদেরকে বিক্রয় কেন্দ্রের রিয়েল লাইফ সিমুলেশন রান করতে হয়। এই প্রতিযোগিতায় জয়ী হয় আই.বি.এ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দল, “টিম বুম বুম”। বিজমায়েস্ত্রো বিজয়ী দলটি বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ প্রতিযোগিতায় প্রতিনিধিত্ব করার সম্মান অর্জন করে। ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ ইউনিলিভার ফিউচার লীগ বিশ্বের একমাত্র প্রতিযোগিতা যা বিশ্বব্যাপী আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশ্বের সেরা ও প্রতিভাবান শিক্ষার্থীরা ইউনিলিভার ওয়ার্ল্ড লিডারদের কাছে ইউনিলিভারের জনপ্রিয় ব্র্যান্ডসমূহের সমস্যাগুলো, তাদের সৃজনশীলতার মাধ্যমে সমাধান করে থাকে। প্রতিবছর ইউনিলিভার গর্বের সাথে এই কেস প্রতিযোগিতা আয়োজন করে যেখানে ভবিষ্যতের ফিউচার লিডাররা তাদের সৃজনশীলতার মাধ্যমে নিজেদের পৃথিবীর গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে আদর্শ লিডার হিসেবে তুলে ধরতে পারে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে নিজের দেশকে তুলে ধরার সুযোগ পায়। উল্লেখ্য, বিশ্বের চার লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বিজমায়েস্ত্রো বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়। বাংলাদেশ ২০১৪ সাল হতে এই প্রতিযোগিতার বৈশ্বিক পর্যায়ে অংশগ্রহণ করে আসছে। বিশ্ব দরবারে আবারও বাংলাদেশের পতাকা বাংলাদেশ দল “ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ ২০১৬”-এর গ্লোবাল টাইটেল জয় করে এবং চ্যা¤িপয়ন হয়ে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। ২৯টি দেশের দলকে হারিয়ে ইউনিলিভার বিজমায়েস্ত্রো-এর বিজয়ী সাজিদ আলম, আয়মান সাদিক এবং ইশমাম চৌধুরী এই জয় অর্জন করেন। ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ একটি গ্লোবালকম্পিটিশন যেখানে তরুণ মেধাবীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অংশগ্রহণ করে। ২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে ইউনিলিভার বাংলাদেশ একটি রিয়েল লাইফ বিজনেস কেস কম্পিটিশন “ইউনিলিভার বিজমায়েস্ত্রো ২০১৫”-এর আয়োজন করে যেখানে আইবিএ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাজিদ আলম, আয়মান সাদিক এবং ইশমাম চৌধুরী বিজয় লাভ করেন। বিজমায়েস্ত্রো-এর চ্যা¤িপয়ন হিসেবে, ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ ২০১৬-তে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব তারা হাতে তুলে নেন। প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০১৬ পর্যন্ত। এবার বিশ্বের ১১২০টি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ লক্ষাধিক অংশগ্রহণকারীর মধ্য থেকে সেরা ৯০ জন ছাত্রছাত্রী এই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে ৩০টি দেশের প্রতিনিধিত্ব করে। সারা বিশ্বের গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে ইউনিলিভারের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয় করার লক্ষ্যে এবং পৃথিবীর স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কাছে সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিযোগিতা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার উদ্দেশ্যে ২০১৩ সাল হতে ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ যাত্রা শুরু করে। প্রোডাক্ট ম্যানেজার প্রতিযোগীদের লন্ডনে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পূর্বে বিশেষ পরামর্শ প্রদান করেন। ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ-এর প্লাটফর্মে বাংলাদেশ দল পুরো পৃথিবীর প্রতিনিধিত্বকারীদের সাথে পরিচিত হন। প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীর জন্যই এটি অত্যন্ত আনন্দের এবং ৪ দিনব্যাপী এই আয়োজনে তারা সবাই একসাথে এক অনন্য অভিজ্ঞতা উপভোগ করেন। সেমিফাইনালে প্রতিযোগীরা সানসিল্ককে কিভাবে আরও কনজিউমারের সাথে সম্পৃক্ত করা যায় তার আইডিয়া দেন। বাংলাদেশ দল বিচারকদের মুগ্ধ করে ফাইনালে পৌঁছে যায়। বাংলাদেশ ইউএসএ, কানাডা, ইউকে, জাপানসহ আরও অনেক দেশকে হারায় যারা ট্যালেন্ট-এর জন্য সুপরিচিত। এমনকি বাংলাদেশ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র দেশ যারা ভারত, পাকিস্তান এবং শ্রীলংকাকে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছায়। শুধু বাংলাদেশের নয়, বিজয়ী দলটি পুরো দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করে এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। ৯টি শক্তিশালী দল- ইন্দোনেশিয়া, কানাডা, নাইজেরিয়া, কোস্টারিকা, মালয়েশিয়া, রাশিয়া, ইজিপ্ট, পর্তুগাল এবং ইতালিকে হারায় তারা। কোস্টারিকা সেকেন্ড রানার আপ, রাশিয়া প্রথম রানার আপ এবং বাংলাদেশ দল দারুণ পারফর্মেন্সের মাধ্যমে বিজয়ী হয়ে ট্রফি ছিনিয়ে আনে। এ ব্যাপারে ইউনিলিভার বাংলাদেশের লিডারশিপ ডেভেলপমেন্ট অফিসার ইপ্সিতা ফাহিম উল্লেখ করেন, “ইউনিলিভার বাংলাদেশ সবসময় মেধাবীদের প্রতিভা বিকশিত করা এবং তাদের মেধাকে সঠিক জায়গায় প্রয়োগ করার সুযোগ সৃষ্টি করায় বিশ্বাস করে। আমরা মাঝে মাঝে ভাবি, বাংলাদেশীরা মানহীনতায় ভোগে যখন তারা গ্লোবাল কম্পিটিশনে আসে। তবে এই গ্লোবাল ক¤িপটিশনেই আজ আমরা দেখেছি বাংলাদেশীরা কিভাবে সুউচ্চে উঠতে পারে। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যতের তরুণদের জন্য সর্বদাই প্লাটফর্ম তৈরি করে যাওয়া।” এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শেষ বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা বাস্তব জীবনে নিজেদের প্রতিযোগিতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে “রিয়েল বিজনেস”-এর শিহরণ অনুভব করতে পারেন। ছাত্রছাত্রীদের ইউনিলিভার-এর একটি সত্যিকারের ব্র্যান্ডের কনজিউমার ইনসাইটের উপর গবেষণা করতে বলা হয় এবং ব্র্যান্ডটির জন্য একটি বিজনেস প্ল্যান গঠন করে পরিবেশন করতে বলা হয়। এই বছরের বিজয়ী তিনজনকে তাদের নিজস্ব কমিউনিকেশন ম্যাটেরিয়েল ডিজাইন, ব্র্যান্ডের জন্য স্থায়ী আইডিয়া এবং ব্র্যান্ডের জন্য একটি “৩৬০ ডিগ্রি” প্ল্যান করতে বলা হয়। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে প্রতিযোগীরা ইউনিলিভার বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ম্যানেজারদের অধীনে প্রশিক্ষণ লাভ করার এক অভাবনীয় সুযোগ পান। ইউনিলিভার বিজমায়েস্ত্রো-এর বিজয়ীদের ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ ২০১৬-তে পাঠানোর পূর্বে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। পরে তারা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য লন্ডনে পাড়ি দেন। Ñ“ফিউচার লিডার্স লীগ সত্যিই অসাধারণ। আমি কখনই ভাবিনি আমি এবং লিনা নায়ের, গ্লোবাল সিএইচআরও, একই টেবিলে বসে আলাপ করতে পারব। গ্লোবাল লিডারদের উৎসাহ, বিনয় ও ব্যবহার দেখে আমি আসলেই মুগ্ধ। এটি খুবই দুর্লভ মুহূর্ত এবং আমি আমার ব্রিলিয়ান্ট টিমমেটদের সাথে, আমার দেশ এবং আমার দেশের মানুষদের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে খুবই গর্বিত বোধ করছি”। সাজিদ আলম, চ্যা¤িপয়ন- ইউনিলিভার বিজমায়েস্ত্রো ২০১৫ টিম বাংলাদেশ ও চ্যা¤িপয়ন- ইউনিলিভার ফিউচার লীডার্স লীগ ২০১৬। উল্লেখ্য, ইউনিলিভার ফিউচার লিডার্স লীগ-এর বিজয়ী হিসেবে বাংলাদেশ দল এ বছরের সেপ্টেম্বরে অটোয়া, কানাডাতে অনুষ্ঠিত “ওয়ান ইয়ং সামিট”-এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে।
×