ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সংস্কৃতি সংবাদ

গান ও কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্রনাথ স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৮ মে ২০১৬

গান ও কবিতায় ছায়ানটের রবীন্দ্রনাথ স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা পঞ্জিকার হিসাবে আজ রবিবার পঁচিশে বৈশাখ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৫তম জন্মজয়ন্তী। বাঙালীর মননের দিশারী এই কবির জন্মদিন উদ্্যাপনকে ঘিরে রাজধানীতে চলছে সুরাশ্রিত নানা আয়োজন। সেই সূত্রে শনিবার থেকে শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক সংগঠন ছায়ানট আয়োজিত দুই দিনব্যাপী রবীন্দ্র উৎসব। গানের সুরে সুরে কবিগুরুকে জানানো হলো বন্দনা। কবিতার দোলায়িত ছন্দে নিবেদিত হলো ভালবাসা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি। নাচের নান্দনিকতায় প্রকাশিত হয় উচ্ছ্বাস। শুভ কর্মপথে ধর নির্ভয় গানÑসম্মেলক কণ্ঠে এই আহ্বানে মেঘলা দিনের বৈশাখী সন্ধ্যায় শুরু হয় উৎসব। আমন্ত্রিত এবং নিজস্ব শিল্পীদের একক পাঠ-আবৃত্তি ও রবীন্দ্রসঙ্গীত সাজানো হয় প্রথম দিনের আয়োজন। রবীন্দ্র কথনে অংশ নেন বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মফিদুল হক। বলেন, একটি জাতিগোষ্ঠী যখন সম্মিলিত হয়ে রবীন্দ্রনাথের সৃষ্টি উপভোগ করে তখন সেটি অন্যরকম মাত্রা পায়। কবিগুরুর জন্মশতবর্ষ উদ্যাপনের সময় তৎকালীন পাকিস্তানী সরকারী বাধা দিয়েছিল। তবে সেই বাধা অতিক্রম করেই বাংলাদেশে রবীন্দ্র চর্চা শুরু হয়। পরবর্তীতে তাঁর গানকে কণ্ঠে ধারণ করেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে এদেশের মানুষ এবং তাঁর গানকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করা হয়। তাই সমবেতভাবে তাঁর শিল্পচর্চার মাধ্যমে একটি জাতি অর্জন করতে পারে মানসিক শক্তি। প্রথম দিনের উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিচালনায় নৃত্যনন্দনের গীতিনৃত্য নকশা পরিবেশনা ‘প্রভু তোমার পানে’। দলীয় পরিবেশনায় অংশ নেয় আমন্ত্রিত দল বৈতালিক। তারা পরিবেশন ‘জয় তব বিচিত্র আনন্দ’ ও ‘প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে’ শীর্ষক দুটি গান। পাঁচটি সম্মেলক গানের একটিতে নৃত্যভঙ্গিমায় অংশ নেন ছায়ানটের শিল্পীরা। একক কণ্ঠে গান শোনান আজিজুর রহমান তুহিন, আনন্দময়ী মজুমদার, ইফ্ফাত আরা দেওয়ান, ঝুমুর আহমেদ, তপন মাহমুদ, তানজিনা পারভীন তমা, নাঈমা ইসলাম নাজ, নিলুফার জাহান, পীযূষ বড়ুয়া, মনসুরা বেগম, মহাদেব ঘোষ, মানসী সাধু, রোকাইয়া হাসিনা, শর্মিষ্ঠা খন্দকার, সাজেদ আকবর, সাদাত জামান চৌধুরী, সুদীপ সরকার ও স্বাতী সরকার বিশ^াস। রবীন্দ্র রচনাবলী থেকে পাঠ ও আবৃত্তি করেন জয়ন্ত রায় ও ত্রপা মজুমদার। আজ রবিবার ™ি^তীয় দিনের অনুষ্ঠান শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায়। একক ও সম্মেলক গান ও নৃত্যের সঙ্গে থাকবে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের কথা ও তাঁর প্রিয় গান নিয়ে সাজানো বিশেষ আয়োজন ‘আমার রবীন্দ্রনাথ’। ‘তারুণ্যের মিছিলে আশরাফুল আলম’ ॥ শনিবার সন্ধ্যায় তারুণ্যের মিছিলে আশরাফুল আলম শীর্ষক আবৃত্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদ। সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের নিয়মিত আবৃত্তি আয়োজন ‘জ্বালাও আলো আপন আলো’র পঞ্চাশতম পর্ব উদ্যাপনের পাশাপাশি এই আয়োজনে ‘বুক পকেটের পদাবলি’ শিরোনামে একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক ও শিল্পকলা পদকপ্রাপ্ত অগ্রজ আবৃত্তিশিল্পী আশরাফুল আলম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। শিশু-কিশোর নাট্যোৎসবে মঞ্চস্থ ৬ নাটক ॥ ‘বিকশিত শিশু, আলোকিত আগামী’ সেøাগানে পিপল্স থিয়েটার এ্যাসোসিয়েশনের (পিটিএ) আয়োজনে এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহযোগিতায় শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে ১৩ম জাতীয় শিশু-কিশোর নাট্যোৎসব। ১২ মে পর্যন্ত একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা, এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হল, স্টুডিও থিয়েটার হল এবং সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে চলবে সপ্তাহব্যাপী উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রয়েছে নাট্য প্রদর্শনী। এ ছাড়া প্রতিদিনের নাটক শেষে প্রতিটি দলের একজন নির্বাচিত নাট্যকর্মীকে দেয়া হচ্ছে ‘মঞ্চকুঁড়ি পদক ২০১৬’। শনিবার উৎসবের দ্বিতীয় দিনে তিনটি হলে ৬টি নাটকের প্রদর্শনী হয়। পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় উচ্চারণ একাডেমি বগুড়ার ‘খুকী ও কাঠবিড়ালী’ ও নিউ প্রতীক লিটল থিয়েটারের ‘নতুন কুঁড়িদের স্বপ্ন’। স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চস্থ হয় চন্দ্রবিন্দু থিয়েটার গাজীপুরের ‘একাত্তরের কথা’ এবং হরিরামপুর সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিষদের ‘বাহান্নর খোকারা’। সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে মুন্সীগঞ্জের শিশুতীর্থ থিয়েটার ‘ভিক্ষাবৃত্তি স্বপ্ন হারায়’ এবং ঢাকার মৈত্রী শিশু নাট্যদল ‘উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত’ মঞ্চস্থ করে।
×