ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘লন্ডন ভীতির পরিবর্তে বেছে নিয়েছে আশাবাদ’

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র সাদিক খান

প্রকাশিত: ০৩:৪২, ৮ মে ২০১৬

লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র সাদিক খান

ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের মেয়র নির্বাচনে ১১ প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন লেবার পার্টির প্রার্থী পাকিস্তানী বংশোদ্ভূত সাদিক খান (৪৫)। বৃহস্পতিবার নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষে শুক্রবার ফল ঘোষণা করা হয়। খবর বিবিসির। ঘোষিত ফলে দেখা গেছে সাদিক খান ৫৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জ্যাক গোল্ডস্মিথের প্রাপ্ত ভোট ৪৩ দশমিক ২ শতাংশ। নির্বাচনে তিনি পেয়েছেন ১৩ লাখ ১০ হাজার ১৪৩ ভোট। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোল্ডস্মিথ পেয়েছেন ৯ লাখ ৯৪ হাজার ৬১৪ ভোট। সাদিক খানই হচ্ছেন লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র। যিনি পার্লামেন্টে লেবার পার্টি থেকে নির্বাচিত টুটিংয়ের এমপি। জয়ী হওয়ার পর দেয়া ভাষণে সাদিক খান বলেন, তিনি কখনও কল্পনা করেননি তার মতো কেউ লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হতে পারেন। তিনি লন্ডনের সব বাসিন্দার মেয়র হবেন বলে অঙ্গীকার করেন। নির্বাচনী প্রচারে অনেক বিতর্ক ছিল। কিন্তু আমি সত্যি গর্বিত। আজ লন্ডন ভীতির পরিবর্তে আশাবাদকেই বেছে নিয়েছে। ভীতির রাজনীতিকে আমাদের শহরে স্বাগত জানানো হবে না। গোল্ডস্মিথ ও প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পর্যায়ক্রমে অভিযোগ করেছিলেন, সাদিক খানের সঙ্গে মুসলিম উগ্রপন্থীদের যোগসূত্র রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারে সাদিক খান লন্ডনবাসীর পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সাশ্রয়ী বাসস্থানের ব্যবস্থা করার ওপর জোর দেন। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার আগেই শেষবারের মতো মেয়রের টুইটার এ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে লন্ডনবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বরিস জনসন। তিনি বলেন, সিটি হল ছাড়ার সময় হলো। আপনাদের মেয়রের দায়িত্ব পালন করতে পেরে আমি ধন্য। ব্রিটিশ রাজনীতিতে একজন লড়াকু রাজনীতিবিদ হিসেবে সাদিক খানের ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে তিনি অনেক বিতর্কিত আইনী লড়াই করেছেন। লেবার পার্টির এমপি হিসেবে গত নির্বাচনে এড মিলিব্যান্ডের ক্যাম্পেন লিডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। জন্ম ১৯৭০ সালে দক্ষিণ লন্ডনে। আট ভাইবোনদের মাঝে পঞ্চম সাদিক সাউথ লন্ডনের টুটিং এলাকায় বেড়ে ওঠেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় তার দাদা-দাদি ভারত থেকে পাকিস্তানে পাড়ি জমিয়েছিলেন। সাদিক খানের জন্মের কিছুদিন আগে তার বাবা-মা যুক্তরাজ্যে চলে আসেন। তার বাবা প্রয়াত আমানুল্লাহ খান ২৫ বছর বাসচালক হিসেবে কাজ করেছেন। মা শেহরান ছিলেন একজন দর্জি। ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন সাদিক। টুটিংয়ে স্থানীয় কাউন্সিলে তিনি ১২ বছর কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৫ সালে এই এলাকা থেকে লেবার পার্টির এমপি নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের মন্ত্রিসভায় মিনিস্টার অব স্টেট ফর কমিউনিটিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
×