ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

‘এভাবেই খেলে যেতে চাই’

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৭ মে ২০১৬

‘এভাবেই খেলে যেতে চাই’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ জাতীয় দলে ‘ফিনিশার’ হয়ে উঠেছিলেন নাসির হোসেন। কিন্তু সেই ‘ফিনিশার’ কালের চক্রে যেন এখন নিজেই ফিনিশ হওয়ার পথে চলে গিয়েছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে যেসব ম্যাচ খেলার সুযোগই এখন হয় না। সেটি হয় না, যে সুযোগগুলো পান; তা কাজে লাগাতে না পারাতেই। যদিও যে সময় ব্যাটিং করতে নামেন, সেই সময়ে ওভার কম থাকে। সেই অল্প ওভারেই নিজেকে মেলে ধরতে পারেন না নাসির। তাতে করে কোন সিরিজ বা টুর্নামেন্টে সবকটি ম্যাচ খেলারও সুযোগ হয় না নাসিরের। তবে ঢাকা লীগে আবার ‘ফিনিশার’ রূপেই যেন ধরা দিচ্ছেন নাসির। তাতে করে বলেও দিয়েছেন, ‘এভাবেই খেলে যেতে চাই।’ টি২০ বিশ্বকাপে যেমন হল্যান্ডের বিপক্ষে বাছাইপর্বের ম্যাচের পর আর খেলারই সুযোগ পাননি। গতবছর নবেম্বরে জিম্বাবুইয়ের বিপক্ষে সর্বশেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। সেই সিরিজে তিন ম্যাচ খেলেও নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। আর টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে যে গতবছর জুলাইয়ে সর্বশেষ সিরিজ খেলে বাংলাদেশ, এক ম্যাচে খেলার সুযোগ পান। তবে এ ব্যাটসম্যান ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে কিন্তু জমিয়ে খেলছেন। ব্যাট করার সুযোগ পেতেই জ্বলে উঠছেন। ‘ফিনিশার’ খ্যাতিটির যথার্থ মান যেন আবার রাখতে শুরু করেছেন। প্রাইম দোলেশ্বরের এ অলরাউন্ডার কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের বিপক্ষে ৩ রানের জন্য শতক করতে পারেননি। আর ব্রাদার্সের বিপক্ষে অপরাজিত ৪৮ রান করে ম্যাচ শেষ করে আসেন। দলকে জিতিয়ে আসেন। প্রাইম দোলেশ্বরও টানা চার ম্যাচে জিতে। লীগের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে আছে দলটি। নাসির অবশ্য ২ ম্যাচে ব্যাট করারই সুযোগ পাননি। এরপরও দল টানা জিতেই চলেছে। নাসিরকে তাই দলের এমন জয়ের রহস্য নিয়েই আগে কথা বলতে হলো। নাসিরও জানালেন, ‘রহস্য কিছু নাই। আমার মনে হয় আমরা দলগতভাবে ভাল খেলছি। আমাদের দলে কেউ ম্যাচ একা জিতাচ্ছে না। কোন না কোনভাবে সবাই সবদিক থেকেই সহয়তা করছে। এটা আমাদের দলের জন্য খুব ভাল দিক। আমাদের দলের টিম স্পিরিট খুব ভাল বলেই হয়তো ম্যাচ জিতছি।’ এবার ফিনিশার নাসির যে অনেকদিন পর রানে ফিরলেন, তারই জবাব দিতে হলো। টেস্ট ও ওয়ানডেতে সেই ২০১৩ সালের অক্টোবরের পর আর কোন অর্ধশতক নেই নাসিরের। টি২০তে ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরের পর অর্ধশতক যেন নাসিরের জন্য অধরাই হয়ে গেছে। এ ব্যাটসম্যান এবার ঢাকা লীগে ৯৭ রানের একটি ইনিংসও খেলেছেন। নাসির ইনিংসগুলো নিয়ে জানালেন, ‘হ্যাঁ আমি এভাবেই খেলে যেতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা, যে পারফর্মেন্সই করি না কেন; দলে সাহায্য করতে পারলে খুব ভাল লাগে।’ জাতীয় দলে নিয়মিত খেলার ভাবনা নিশ্চয়ই নাসিরের মধ্যে তাই কাজ করছে? কিন্তু এ মুহূর্তে জাতীয় দল নিয়ে ভাবতেই নারাজ নাসির, ‘জাতীয় দলের জন্য কোন লক্ষ্য নাই। আর খেলাতো খেলাই। আর আমি সব খেলায় পারফর্ম করার জন্য খেলি। এখন জাতীয় দল কোন চিন্তায় নাই। আমার ভাবনা এখন প্রিমিয়ার লীগ নিয়ে। কিভাবে ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাল খেলবো, তা নিয়ে।’ অনেকদিন পর রান পাওয়া নিয়ে নাসির জানান, ‘প্রথম ম্যাচে আমি ব্যাটিং করতে পারি নাই। চার ম্যাচে দুইটায় ব্যাটিং করতে পারছি। একটায় ৯৭ করেছি, একটায় ৪৮ নটআউট। অবশ্যই ভাল লাগছে, নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস আছে। সবচেয়ে বড় কথা, ভাল খেলার জন্য যা যা করার দরকার করছি, কঠোর পরিশ্রম করছি। আমার কোচিং স্টাফ আমাকে সাহায্য করছে। ইনশাল্লাহ এই ফর্মটা ধরে রাখার চেষ্টা করবো।’ তরুণ খেলোয়াড়রাও যে এবার ভাল খেলছেন, সেটিও বলতে ভুললেন না নাসির। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফর্মেন্স যে আরও রান করায় উৎসাহ দিচ্ছে, তাও বললেন, ‘এখানে অনুর্ধ-১৯ দলের অনেক খেলোয়াড় আছে, এছাড়া অনেক তরুণ খেলোয়াড় আছে। তারা সবাই এ প্রিমিয়ার লীগে ভাল খেলছে। আগে যে জিনিসটা ছিল বিদেশীদের ওপর নির্ভরশীল। এখন সে জিনিস নাই। আমাদের লোকাল খেলোয়াড়রাই ম্যাচ জিতিয়ে দিচ্ছে। পাঁচ উইকেট নিচ্ছে, সেঞ্চুরি হাঁকাচ্ছে। আর এতে আমাদের নিজেদের মধ্যে অনেক কম্পিটিশন বেড়েছে। এটা অনেক ভাল দিক। সবাই ভাল খেলার জন্য চেষ্টা করছে।’
×