ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা জব্দ করলেন মন্ত্রী ও. কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ৭ মে ২০১৬

ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা জব্দ করলেন মন্ত্রী ও. কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ এবার ‘অলআউট’ করা হবে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা। এ বার্তা দেশের সকল বিআরটিএ কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের পৌঁছে দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নিজেই রাস্তায় নেমে পড়েছেন। শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর মিরপুর, গাবতলী, হেমায়েতপুর ও নবীনগরে অন্তত ১৬৩টি ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা জব্দ করেন মন্ত্রী। এছাড়া আরও ৮০টি ব্যাটারি জব্দ করে দিয়েছেন পুলিশকে। অভিযানের সময় হেমায়েতপুর, নবীনগর ও আমিনবাজার সড়কের অবৈধ স্ট্যান্ড সরিয়ে দেন মন্ত্রী। এ সময় মন্ত্রী বলেন, রাজধানীসহ দেশের সব সড়ক-মহাসড়কে কোন ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা দেখা মাত্রই জব্দ করতে হবে। মন্ত্রীর এ নির্দেশ বাস্তবায়নে ঢাকাসহ সব সড়কে নেমে পড়েছেন বিআরটিএ কর্মকর্তারা। মন্ত্রী নিজে বিআরটিএ’র এ অভিযান দেখতে নিয়মিত দৌড়াচ্ছেন রাস্তায়। একই সঙ্গে মন্ত্রী ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধেও অভিযান দেখছেন। ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সারা দেশে লাখ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা রাস্তায় নেমে দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে। অপচয় করছে বিদ্যুত। হাইকোর্টের নির্দেশনা ও সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের আপত্তি না মেনে অনুমোদিত এসব বাহন রাস্তায় দাপট দেখাচ্ছে। এখন থেকে আর কোন ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা, নসিমন, করিমনকে সড়ক-মহাসড়কে চলতে দেয়া হবে না। প্রতিদিনের মতো প্রটোকল নিয়ে মাঠে নামেননি তিনি। অকেটা আচমকা অভিযান শুরু করেন মন্ত্রী। গত বছরের এক আগস্ট থেকে দেশের সকল সড়ক মহাসড়কে তিন চাকার অটোরিক্সা, নসিমন, করিমন, ভটভটিসহ সব ধরনের অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করে সরকার। এ নিয়ে সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বিশেষ করে পরিবহন মালিক শ্রমিকদের অব্যাহত চাপের মুখে অনেকটাই পিছু হটতে শুরু করে সরকার। একপর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, এসব পরিবহন সকালে দুই ঘণ্টা সিএনজি সরবরাহের জন্য মহাসড়কে উঠতে পারবে। পরবর্তীতে বলা হয়, দেশের ২২টি মহাসড়কে এসব পরিবহন চলাচল করতে পারবে না। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১৮ লাখ নসিমন, করিমন, ভটভটি বিভিন্ন সড়কে চলাচল করছে। যার একটিও সরকারীভাবে অনুমোদিত নয়। ৩ লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক মহাসড়কে চলতে দিয়ে কোন অবস্থাতেই নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আমাদের দেশে প্রতি ১০ হাজার যানবাহনের মধ্যে ৮৬ দশমিক ৬টি যানবাহন প্রতিবছর মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়ছে। এই পরিসংখ্যানে নিহতের সংখ্যা এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ১৬৯ জন। দুর্ঘটনার কারণে দেশের ২ শতাংশ জিডিপি ক্ষতি হচ্ছে। এমন বাস্তবতায় সরকার মহাসড়ক নিরাপদ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে বিআরটিএ সব কার্যালয় ও কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশও দেয়া হয়েছে ইতোমধ্যে। তবে কাজের কাজ তেমন কিছুই হচ্ছে না। তাই মন্ত্রী নিজেই আবারও রাস্তায় নেমেছেন। শুক্রবারের অভিযান চালানোর সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপদ সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এজন্য যাত্রী-চালকসহ সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবাই একযোগে দুর্ঘটনা রোধে কাজ করলে আশা করি এ সমস্যা থেকে অনেকটাই উত্তোরণ পাওয়া সম্ভব। তিনি বলেন, মহাসড়কে অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচলের জন্য ঘোষণা অনুযায়ী পৃথক লেন করা হবে। কিন্তু তা সময় সাপেক্ষ বিষয়। রাতারাতি এসব কাজ করা যায় না। পৃথক লেনের কাজটি হয়ে গেলে সবার সমস্যাই সমাধান হবে। এর আগে আমাদের সবাইকে একটু একটু সচেতন হয়ে পথ চলতে হবে। দেশের মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে সরকার কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা বাস্তবায়নের কথাও জানান তিনি।
×