ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মায় পাইল স্থাপন চলছে পুরোদমে, বাড়ানো হচ্ছে হ্যামার

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ৭ মে ২০১৬

পদ্মায় পাইল স্থাপন চলছে পুরোদমে, বাড়ানো হচ্ছে হ্যামার

মীর নাসিরউদ্দিন উজ্জ্বল, মাওয়া থেকে ফিরে ॥ পদ্মায় পুরোদমে চলছে পাইল স্থাপন। ২ হাজার ৪শ’ কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারটি পদ্মার বুকে সেতুর ভিত বুনছে। ব্যতিক্রম ও বিশ্বের একমাত্র এই হ্যামারটিতে সামান্য ত্রুটি থাকায় ড্রাইভ কয়েক দিন হয়নি। তবে জামার্নির প্রকৌশলী এসে ত্রুটি সারার পর আবার পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। এবার পদ্মা সেতুর ৩৬ নম্বর পিলারে হ্যামার ড্রাইভ করে (হাতুড়ি বাড়ি) পাইল স্থাপন করা হচ্ছে। পয়লা মে থেকে এটি ড্রাইভ শুরু করে। ৩৬ নম্বর পিলারের ছয়টি পাইলের মধ্যে ছয় নম্বরটি স্থাপন হয়ে গেছে। এখন প্রস্তুতি চলছে ২ নম্বরটি স্থাপনে। এছাড়া আরেকটি ২ হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামার দ্রুত নিয়ে আসার ব্যাপারেও কর্তৃপক্ষ তৎপর। এদিকে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল শুক্রবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেছেন, পাইলিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের মধ্যেই পদ্মা সেতুর স্বপ্ন স¤পূর্ণ হবে। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, সেতুর প্রধান কাজ পাইলিং। পাইলিং হয়ে গেলে আর সময় লাগবে না। সেতুর গার্ডার চায়নাতে তৈরি হচ্ছে। আমরা শুধু লেভেলিং পর্যন্ত অপেক্ষা করছি। মন্ত্রী বলেন, জার্মানি থেকে একটা হ্যামার এসেছে। আমাদের সামনে আরও হ্যামার দরকার। হ্যামারের সংখ্যা যত বেশি হবে পাইলিংয়ের কাজ ততদ্রুত এগিয়ে যাবে। মন্ত্রী আরও বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পের সব থেকে চ্যালেঞ্জিং এই পাইলিংয়ের কাজ এভাবে এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে। চলতি অর্থবছরের (২০১৫-১৬) নয় মাসে অর্থাৎ মার্চ ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের মূল সেতুর ভৌত অগ্রগতি হয়েছে ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, তিন মাস আগে যা ছিল ১৬ শতাংশ। একই সঙ্গে নদী শাসন কাজের অগ্রগতি হয়েছে ১৭ দশমিক ৫ শতাংশ। ছয় মাস আগে যা ছিল মাত্র ১৪ শতাংশ। তবে, নয় মাসে যা টার্গেট নির্ধারণ করা হয়েছিল তা পূর্ণ হয়নি। নয় মাসে মূল সেতু নির্মাণে অগ্রগতি ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। মন্ত্রীর সঙ্গে থাকা সেতু বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং সেতুটির প্রকল্প পরিচালক সফিকুল ইসলামসহ সেতু সংশ্লিটরা উর্ধতনরা ছিলেন। এর আগে বৃহস্পতিবার সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেতুর প্রধান চ্যালেঞ্জিং কাজ পাইলিং। সর্বশেষ পাইল স্থাপনের মধ্য দিয়ে ১০টি পাইল স্থাপন হলো। মূল সেতুর ছয়, সাত ও ৩৯ পিলারে তিনটি পাইল এবং ৩৬ নম্বর পিলারে একটি পাইলের নিচ পর্যন্ত ৭০ মিটার সেকশন ড্রাইভের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মোট পাইলিং হবে ২৬৪টি। ১ ও ৪২ নম্বর পিলারে ১২টি করে পাইলিং হবে বাকিগুলোতে হবে ৬টি করে। চলতি অর্থবছরের এখনও তিন মাস বাকি রয়েছে। এই তিন মাস পর সেতুর সার্বিক অগ্রগতি আরও বাড়বে। প্রকল্পের ১১টি অঙ্গের সমন্বয়ে সার্বিক অগ্রগতি প্রায় ৩৩ শতাংশ। ইতোমধ্যেই মূল সেতুর ১০টি টেস্ট পাইলের মধ্যে ৬টির কাজ শুরু হয়েছে। ভায়াডাক্টের ১৬টি টেস্ট পাইলের মধ্যে ৭টির টেস্ট পাইল সম্পূর্ণ হয়েছে এবং দুটি ট্রয়াল পাইলও স্থাপন হয়েছে। পিলার হয়ে গেলে এক বছরের মধেই সেতুর কাজ সম্পূর্ণ হবে। কারণ সেতুর স্প্যান (গার্ডার) তৈরি হচ্ছে চায়নাতে। পাইলিং হয়ে গেলেই এগুলো পিলারের ওপরে বসিয়ে দেয়া হবে। এক কথায় বলা যায় হার্ডিঞ্জ ব্রিজে বসবে পদ্মা সেতু। ইতোমধ্যেই চীনে ৩টি স্প্যান তৈরি হয়ে গেছে, নবেম্বরের মধ্যেই দেশে পৌঁছবে। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর (এডিপি) অন্তর্ভুক্ত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর জুলাই-মার্চ ২০১৫ পর্যন্ত নয় মাসের অগ্রগতির প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। জমা দেয়া প্রতিবেদনে পদ্মা সেতুসহ সেতু বিভাগের নানা গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের আপডেট তথ্য এতে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে- জাজিরা এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণে ৬৮ দশমিক ৮৮, মাওয়া এ্যাপ্রোচ সড়কে ৭২ দশমিক ৮ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যেমন অফিস ল্যাবরেটরি, ওয়ার্কশেড, স্টোর হাউস, লেবারশেড, জেটি ইত্যাদি নির্মাণ কাজও শতভাগ স¤পূর্ণ হয়েছে। ১ হাজার ৩৭০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো দেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে পুনর্বাসন কার্যক্রম ৬৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ স¤পন্ন হয়েছে। প্লটের হস্তান্তরের সংখ্যা ১৩৭০টি। সার্ভিস এরিয়া-২ এর কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে ৭৮ দশমিক ১৩ এবং ভূমি অধিগ্রহণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৮৭ দশমিক ৪৫ শতাংশ। একনেকের সভায় অনুমোদনের পর রেল প্রকল্পেও গতি বেড়েছে। সেতু চালুর সঙ্গে সঙ্গেই রেল চালুর প্রচেষ্টা চলছে। প্রস্তাবিত এই রেললাইন স্থাপনের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই সুযোগে সরকারী টাকা হাতিয়ে নিতে অসাধু একটি মহল ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা রেললাইনের জন্য প্রস্তাবিত খালি জমির ওপর তুলছেন শত শত ঘরবাড়ি ও স্থাপনা। মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোঃ সাইফুল হাসান বাদল জানান, এসব নতুন স্থাপনাকারীদের শনাক্ত করা হচ্ছে। অধিগ্রহণের শুরুতেই ভিডিও করে রাখা হয়েছে। তাই এসব অপচেষ্টায় অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণের সুযোগ নেই। জাজিরা এ্যাপ্রোচ সড়ক, মাওয়া এ্যাপ্রোচ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া-২ এর নির্মাণ তদারকির জন্য কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কানসালট্যান্ট (সিএসসি-১) নিয়োগ করা হয়েছে। এই কাজের অগ্রগতি ৬১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। তবে, মূল সেতু তদারকির সিএসসি-২ নির্মাণ কাজের অগ্রগতি মাত্র ১৭ শতাংশ। সেতু প্রকল্পের ক্ষতিগ্রস্ত পুনর্বাসন খাত থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত মোট ৫৬২ কোটি ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত সহায়তা বাবদ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। পুনর্বাসন সাইটগুলোতে এই সময়ের মধ্যে ২ হাজার ৫৯২টি প্লটের মধ্যে ১ হাজার ৩৭০টি প্লট ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্প এলাকায় ৬৭ হাজার ৫৫০টি গাছ লাগানো হয়েছে। এতে করে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সার্ভিস এরিয়া এবং পুনর্বাসন এলাকা সবুজে পরিণত হয়েছে। ব্যয় বৃদ্ধির পর ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা প্রকল্পটি দেশের যোগাযোগ খাতের উন্নয়নই নয় জাতির সক্ষমতার এক বিরল দৃষ্টান্ত। চলতি অর্থবছরে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বরাদ্দ ছিল ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে নয় মাসে মোট ৩ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা ছাড় হয়েছে। এছাড়া নদী শাসন কাজের বিভিন্ন সাইজের ব্লক, স্টোনপিস, সিলেট বালি, সিমেন্ট ও অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রীতে কাজ এগিয়ে চলছে। জাজিরা প্রান্তে নদী শাসনের ড্রেজিং পুরো দমে শুরু হয়েছে। ৭ এপ্রিল এই ড্রেজিং শুরু হয়ে এখন চলছে তোরেজোরে। উচ্চ ক্ষমতার দুটি ড্রেজার রাতদিন বালু কাটছে। এই বালু স্তূপ করা হচ্ছে দুই স্থানে। জাজিরা নদীর পার ঘেসে সেতু বরাবর ট্রায়াল সেকশন এবং মাওয়া চরের ব্লক-১ রাখা হচ্ছে এই বালু। তবে কাওড়াকান্দি ড্রেজিং এখন শুরু করা যাচ্ছে না। ড্রেজিংয়ের পাইপ লাইন স্থাপনের জমি প্রাপ্তি বিলম্বিত হওয়ার কারণে এই ড্রেজিং চালু করা যায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এই ড্রেজিং পাইপ স্থাপনের জন্য কৃষকের ফসলী জমি ব্যবহার করতে হবে। কাওড়াকান্দির এই ড্রেজিংয়ের বালু সরিয়ে নেয়া কথা ব্লক-১২ শীবচরের পদ্মার চরে। প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপ স্থাপন করতে হবে। নদী শাসনের কাজের ঠিকাদার সিনো হাইড্রোকে পদ্মা সেতু কর্তৃপক্ষও এখনও পাইপ লাইন স্থাপনের জমি দিতে পারেনি। তবে শীঘ্রই জটিলতা সমাধান হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্লাস্টিক বালুর ব্যাগ ফেলা অব্যাহত রয়েছে মাওয়া প্রান্তে। ২০ মে’র মধ্যে এই প্লাস্টিক বালু ব্যাগ ফেলা সম্পন্ন হবে। প্রায় ৮০ কেজি ওজনের এই বিশেষ ব্যাগ নদীর তলদেশের ঘূর্ণি স্রোতে সৃষ্ট বড় বড়গুলো পূরণ করছে। এরপরই ফেলা হবে ১২৫ কেজি এবং ৮শ’ কেজি ওজনের জিও ব্যাগ। এই জিও ব্যাগ ফেলে নদীর তলদেশ সমতল করবে। এরই উপরই ফেলা হবে ১ হাজার কেজি ওজনের ব্লোল্ডার। আর তীরে জিও টেক্সটাইল বিছিয়ে এর ওপর ব্লক দিয়ে নদীর পাড় বঁাঁধাই করা হবে। আসন্ন মূল বর্ষার আগেই মাওয়া প্রান্তের নদী শাসনের কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। তবে এবার বর্ষার পানি আগেই চলে আসতে শুরু করেছে। পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। অন্য বছরের তুলনায় এবার বর্ষার পানি আগে চলে আসছে। পানির চাপ এবার বেশি। মাওয়ার কাছে পদ্মার পানির নেভেল এখন ৩ মিটার ২৭ সেন্টিমিটার। আর বিপদসীমার লেভেল ৬ মিটার ৩০ সেন্টিমিটার। গত বছরের এই সময়ে এখানে পানির লেভেল এরচেয়ে প্রায় ১ মিটার নিচে ছিল। পানি বৃদ্ধির কারণে সেতুর কাজে আপাতত বিঘিœত হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। এছাড়া এ বছর বড় আকারে বন্যার আশঙ্কা রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পরিবেশ ও পানি গবেষক আরিফুর রহমান জানান, পূর্বাভাস সংক্রান্ত সব কয়টি বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান এবারে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় বড় আকারের বন্যার আভাস দিচ্ছে। ‘এল নিনো’ প্রভাবের কারণে এই অঞ্চলের ১০ বছর অন্তর তীব্র খড়া ও বন্যার প্রভাব থাকে। সেটাই এখন চলছে। সর্বশেষ ২০০৭ সালে দেশে বড় বন্যা হয়েছে। সেই অনুযায়ী ইতোমধ্যেই এর প্রভাব শুরু হয়েছে। এদিকে টানা খরার কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় পদ্মা সেতুর কংক্রিটের ঢালাই কিছুটা বিঘিœত হচ্ছিল। নদীর তলদেশের প্রায় ১১৫ মিটার গভীরেও কংক্রিটের ঢলাই প্রবেশ করাতে হচ্ছেন নিয়মানুযায়ী ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কংক্রিটের ঢালাই করার কথা। কিন্তু তাপমাত্রা দিনের বেলায় নামছেই না। তাই এখন রাত সাড়ে ১১ থেকে ১২টায় ঢালাই শুরু করতে হচ্ছে। তাও আবার পানির পরিবর্তে ঢালাই করা হচ্ছে বরফ দিয়ে। এমন নানা প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে এগিয়ে চলছে সেতুর কাজ। এদিকে বর্ষায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে যাচ্ছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ। তীব্র স্রোতের কারণে এ সময় পদ্মার মাওয়া প্রান্তে কাজ করা কঠিন হবে। তাই গত বছরের অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখে জাজিরা প্রান্তে নতুন করে তৈরি করা চ্যানেলের মধ্যে চলবে পাইলিংয়ের কাজ। গত বছরের ডিসেম্বরে মূল সেতুর কাজ শুরু হয় মাওয়া প্রান্তে। তবে বর্ষার সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, নদীতে বাড়ছে স্রোত। পদ্মার প্রবল এই স্রোতকে বিবেচনায় রেখে তাই পরিবর্তন করতে হচ্ছে কর্মপরিকল্পনায়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের কথা। সে অনুযায়ী আগামী বছরের মধ্যে পাইল ড্রাইভিংয়ের সব কাজ শেষ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ কোম্পানিকে। আর এই পাইল দ্রুত স্থাপনের জন্য প্রয়োজন এখন হ্যামার। তাই দেশের সর্ববৃহত এই প্রকল্পে হ্যামার বৃদ্ধিতে চলছে তৎপরতা।
×