ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আয়তি নাহার

মাতৃত্বের মহিমায় নারী

প্রকাশিত: ০৬:৩৮, ৬ মে ২০১৬

মাতৃত্বের মহিমায় নারী

ছোট্ট একটি শব্দ মা। সবচেয়ে মধুরতম, মর্মস্পর্শী আবেগঘন এবং অত্যন্ত কাছের এই শব্দটি প্রতিটি মানুষের জীবনে পরম অনুভূতির এক অদ্ভুত স্ফুরণ। নির্দিষ্ট একটি ‘মা’ দিবসের মাহাত্ম্য যতই থাক মা প্রতিদিনের, প্রতি মুহূর্তের। সেই শৈশব থেকে একটি মেয়ে মায়ের আবরণে নিজেকে সাজায়, মাতৃত্বের অনুভূতিতে পুলকিত হয়। পুতুল খেলার মধ্য দিয়ে মা হবার বাসনা অবোধ শিশুকে প্রাণিত করে। রবীন্দ্র্রনাথের ভাষায়. ছিলি আমার পুতুল খেলায় প্রভাতের শিব-পূজার বেলায় তোকে আমি ভেঙেছি আর গড়েছি। এই স্বাপ্নিক অনুভব নিয়েই একটি মেয়ের শৈশব-কৈশোর অতিক্রান্ত হয়। কঠিন বাস্তবের অভিঘাতে এই কল্পনা একদিন চরম সত্যে রূপ নেয়। একজন মেয়ের পরিপূর্ণ মাতৃশৌর্য তাকে মহিমার শীর্ষে নিয়ে যায়। মাতৃমহিমাই নারীর পরিপূর্ণতা, নারীত্বের সফল আধার। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় প্রতিটি নারীর দুটো রূপ। একটি স্নেহে, মায়ায়, মমতার নারী মাতা আর প্রেমে, পূজায়, নিবেদনে নারী প্রিয়া। স্নেহের দানে, মাতৃত্বের গৌরবের মমতাময়ী মা যুগে যুগে সন্তানবাৎসুল্যে নিজেদের মহিমান্বিত করেছে। সন্তানের মঙ্গল কামনায় মা তার পুরো জীবন, মন সমর্পণ করে। নিবেদন করে তার সমস্ত আত্মিক, মানসিক এবং বৈষয়িক সম্পদ। দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করে সন্তানের জন্মদানই শুধু নয়, লালন পালনের পুরো দায়ভাগও মা আপন ইচ্ছেয় সারা জীবন বহন করে। ক্লান্তিহীন শ্রান্তিহীন এই দায়িত্ব পালনে স্নেহময়ী মার যে নিরন্তর কর্মযোগ, যে নিরলস সাধনা তা সত্যিই নারীর এক অপরিমেয় রূপমাধুরী। শিশু কাব্যে ‘রবীন্দ্রনাথের মাতৃত্বের সেই মায়াঘন অনুভব, খোকা আমরা কতখানি তোমরা কি তা বোঝ, তোমরা শুধু দোষগুণ তার খোঁজ। এভাবে একজন মা তার সমস্ত নিষ্ঠা, ভালবাসা, মমতা দিয়ে সন্তানের জন্ম থেকে বেড়ে ওঠার প্রতিটি ক্ষণে যে নিবিড়তম পরশের ছোঁয়ায় সন্তানের পুরো জীবনকে ঐশ্বর্যময় করে তোলে তা অতুলনীয়। ৮ মে আন্তর্জাতিক মা দিবস। স্নেহময়ী, মমতাময়ী, মাঙ্গলিক আধার মাদের সশ্রব্ধ অভিনন্দন। পৃথিবীর সবচাইতে অমূল্য সম্পদ মাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা আর অভিবাদন। মা তার চিরায়ত মাতৃত্বের অপরিময় শক্তিতে, সন্তান বাৎসল্যে যুগে যুগে তার কল্যাণময়ী শুভ আর শুদ্ধরূপে অক্ষয় হোক, অম্লান হোক মা দিবসে একজন মেয়ে হিসেবে এটাই আন্তরিক নিবেদন।
×