ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে শিশুর চোখ কিডনি, লাশ মিলল ভারত সীমান্তে

প্রকাশিত: ০৫:৪৬, ৬ মে ২০১৬

দুর্বৃত্তরা নিয়ে গেছে  শিশুর চোখ  কিডনি, লাশ  মিলল ভারত সীমান্তে

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের দিনমজুর ইয়াছিন আলীর মেয়ে তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী ইয়াছমিন(৯) নিখোঁজ হবার তিনদিন পর তার লাশ উদ্ধার হয়েছে। লাশটি ভারতের কুচলিবাড়ি থানা পুলিশ উদ্ধার করে ডিমলা উপজেলার তিস্তার নদীর চরের ভারত সীমান্তের শিংপাড়া ভুট্টা ক্ষেত থেকে। গত ১ মে বিকেলে নিখোঁজ হয় শিশুটি। শিশুটির দেহ থেকে দুর্বৃত্তরা কেটে নিয়ে গেছে দুটি চোখ ও কিডনি। ৪ মে রাত আটটায় ভারতের কুচলিবাড়ি পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়। তবে লাশ উদ্ধারের পূর্বে ওইদিন বিকেল ৫টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত ভারত বাংলাদেশের উভয় দেশের পুলিশ ও বিজিবি এবং বিএসএফের যৌথ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ভারতে ময়নাতদন্ত শেষে ৬ মে সকাল ১০টায় শিশুটির লাশ বাংলাদেশে চরখড়িবাড়ি সীমান্ত দিয়ে হস্তান্তর করা হবে জানানো হয়েছে। এলাকাবাসী জানায়, পহেলা মে বিকেলে শিশু ইয়াছমিন অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল। সেখানে অপরিচিত দুই যুবক বসে ছিল। তারাই ইয়াছমিনকে নিয়ে গেছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইয়াছমিনের মা নাজিরন বেগম বলেন, ঘটনার ৫দিন আগে আমার বড় মেয়ে ইয়াছমিনকে তার বাবার সঙ্গে বাড়িতে রেখে তিনি অপর দুই সন্তান মাসুদ (৫) ও মামুন (১) নিয়ে পিত্রালয়ে বেড়াতে যান। ১ মে রাতে খবর পান তার মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। ইয়াছমিনের বাবা দিনমজুর ইয়াছিন আলী বলেন, আমার মেয়েকে অপরিচিত দুই যুবক অপহরণ করে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় তিনি ফসলের মাঠে কাজে ছিলেন। সন্ধ্যায় পর ইয়াছমিনের খালা হোসনে আরা তাকে মোবাইলে বলে জানায় ইয়াছমিনকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানায়। পূর্বছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান বলেন, খবর পেয়ে বিষয়টি তিস্তা নদীর সীমান্তের কলোনি থানার হাট বিজিবি ক্যাম্প ও ডিমলা থানা পুলিশকে অবগত করা হয়। বিজিবির পক্ষে তাৎক্ষণিকভাবে ভারতের শিংপাড়া বিএসএফ ক্যাম্পে পতাকা বৈঠকের জন্য পত্র পাঠায় বিজিবি। ডিমলা সীমান্তের থানার হাট ৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ানের ক্যাম্প কমান্ডার সুবেদার আবুল কালাম জানান, ঘটনার খবর পেয়ে ৭ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানান, বুধবার বিকেল ৫টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত উভয় দেশের পুলিশ ও বিজিবি এবং বিএসএফের যৌথ পতাকা পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ভারতের কুচলিবাড়ি থানা পুলিশ ওই শিশুটির লাশ তাদের জিম্মায় নিয়ে যায়। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতের কুচবিহার জেলার হাসপাতাল মর্গে বৃহস্পতিবার লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার পুনরায় পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে লাশ ফেরত দেবে বাংলাদেশে। ডিমলা থানার ওসি (তদন্ত) হারিছুল ইসলাম বলেন ওই ঘটনায় বুধবার পুলিশের পক্ষে ডিমলা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে (জিডি নম্বর ১৭১)। পাশাপাশি শিশুটির বাবাকে ডিমলা থানায় মামলা দায়েরের জন্য বলা হয়েছে।
×