ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

গৌরবময় কীর্তির হাতছানি জিদানের

প্রকাশিত: ০৪:৩০, ৬ মে ২০১৬

গৌরবময় কীর্তির হাতছানি জিদানের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গৌরবময় কীর্তির সামনে দাঁড়িয়ে জিনেদিন জিদান। বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদ কোচ ২০০২ সালে রিয়ালের খেলোয়াড় হিসেবে জিতেছিলেন চ্যাম্পিয়ন্স লীগ। এবার কোচ হিসেবে ইউরোপ সেরা সাফল্যের অংশীদার হওয়ার হাতছানি তার সামনে। গ্যালাক্টিকোদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার ছয় মাসেরও কম সময়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ট্রফি জিতলে জিদান আরও উচ্চতায় পৌঁছে যাবেন। বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের সেমিফাইনালে ম্যানসিটিকে হারিয়ে তার দল রিয়াল ফাইনালে পাড়ি জমিয়েছে। ফাইনালে জিতলে কোচ ও ফুটবলার হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ের অনন্য রেকর্ড গড়বেন ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জেতা এই কিংবদন্তি ফুটবলার। দলের অসাধারণ সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই রোমাঞ্চিত ফরাসী এই কোচ। তবে আবেগে ভেসে যেতে রাজি নন। পুরো ম্যাচে আধিপত্য ধরে রেখে ফাইনাল নিশ্চিতের পর শিষ্যদের পারফর্মেন্সে সন্তুষ্টি জানান জিদান। তিনি বলেন, আমরা জানতাম, এটা কঠিন হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমরা ফাইনালে পৌঁছে গেছি। ছেলেদের খেলায় আমি খুশি। ব্যর্থতার দায়ে ছাঁটাই হওয়া রাফায়েল বেনিতেজের জায়গায় গত ৪ জানুয়ারি রিয়ালের কোচ হিসেবে যোগ দেন জিদান। মৌসুমের মাঝপথে ছন্দ হারানো দলটি এক সময় লা লিগার শীর্ষে থাকা বার্সিলোনার চেয়ে ১২ পয়েন্টে পিছিয়ে পড়েছিল। কিন্তু লীগে টানা ১০ ম্যাচ জিতে ফিকে হয়ে যাওয়া তাদের সেই শিরোপা স্বপ্নই নতুন করে জেগে উঠেছে। আর এবার সামনে ইউরোপ সেরা হওয়ার সুযোগ। স্বপ্ন দেখতে মানা নেই, কিন্তু ইউরোপ সেরা হওয়ার প্রশ্নে বাস্তববাদী জিদান। নগর প্রতিদ্বন্দ্বী এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে শিরোপা লড়াইয়ে দুই দলের সম্ভাবনাই সমান বলে মনে করছেন জিদান। তিনি বলেন, ‘ফাইনালে দুই দলেরই সুযোগ ৫০ শতাংশ। আমরা ফাইনালে পৌঁছেছি কিন্তু এখনও জিতিনি।’ ফাইনালে উঠতে পেরে উচ্ছ্বসিত রিয়ালের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোও। তিনি কোচ জিদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। ম্যাচ শেষে রোনাল্ডো বলেন, ‘জিদান চাকরিটা দারুণ উপভোগ করছে। সে আমাদের সাহায্য করছে এবং আমরাও তাকে সাহায্য করছি।’ সি আর সেভেন আরও বলেন, ‘সে কোচ হিসেবে অসাধারণ। আশা করছি আমরা তাকে অনেক সময়ের জন্য পাব।’ সিটির বিরুদ্ধে ম্যাচ প্রসঙ্গে রোনাল্ডো বলেন, ‘এটা কঠিন ছিল। কিন্তু আমরা সিটির চেয়ে ভাল খেলেছি। অনেক সুযোগ সৃষ্টি করেছি এবং আমরা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ছিলাম। আমরা জানতাম, এক গোলের পর সিটি চাপ বাড়াবে, কিন্তু আমরা ম্যাচটি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’ তিনবারের ফিফা সেরা তারকা বলেন, চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিততেই আমি রিয়াল মাদ্রিদে এসেছিলাম। এরই মধ্যে একটা জিতেছি, আরেকটি জেতার সুযোগ পেয়ে গেছি। উচ্ছ্বসিত রিয়াল অধিনায়ক সার্জিও রামোসও। তিনি বলেন, ফাইনালটা কিভাবে জিততে হয়, সেটা রিয়াল খুব ভাল করেই জানে। এবারও আমরা মাঠে নেমে সেটাই করতে চাইব। রামোস আরও বলেন, এ মৌসুমে আমরা অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গেছি। কঠোর পরিশ্রম ও দলের ঐক্যের কারণেই তিন মৌসুমের মধ্যে দু’বার ফাইনালে উঠা সম্ভব হয়েছে। দল ও সমর্থকরা সবকিছুই প্রত্যাশা করে। আমরা তাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ তারা আবারও দেখিয়ে দিয়েছে যে তারা আমাদের জন্য এক্সটা খেলোয়াড়। এখন চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে আমরা নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলব। এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ২০১৩-১৪ চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে ৯৩ মিনিটে রামোস গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন। গোলটি করতে না পারলে সেদিন এ্যাটলেটিকোই চ্যাম্পিয়ন হয়ে যেত। রিয়াল তাদের চারটি গোলই করেছে ম্যাচের ৯০ মিনিট পার হয়ে যাওয়ার পর। এবার কী হয় সেটা দেখার অপেক্ষা। ম্যানসিটি কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির মেয়াদ এবারই শেষ হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কোন ইউরোপিয়ান শিরোপা না নিয়েই তাকে বিদায় নিতে হচ্ছে। মৌসুমের শেষে তার স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন বেয়ার্ন মিউনিখের কোচ পেপ গার্ডিওলা। পেলেগ্রিনির মতে দুই লেগ মিলিয়ে মাদ্রিদকে কোন ধরনের সমস্যায় ফেলতে তার দল পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, পুরো ম্যাচে আমরা ভাল খেলেছি। এ কারণেই রিয়াল তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। কিন্তু শেষ ভাগে আমাদের যা করার প্রয়োজন ছিল আমরা সেটা করতে পারিনি। আমরা যেভাবে খেলেছি, তাতে ফাইনালেও যেতে পারতাম। এদিকে শিরোপা জিততে মুখিয়ে আছে এ্যাটলেটিকোও। দলটির ফুটবলাররা একপ্রকার হুঙ্কার ছেড়েছেন রিয়ালের উদ্দেশে।
×