ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বপ্নের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৬ মে ২০১৬

স্বপ্নের ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রত্যাশিতভাবেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে স্বপ্নের ফাইনালে পৌঁছে গেছে রিয়াল মাদ্রিদ। বুধবার রাতে সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিকে ১-০ গোলে হারায় স্বাগতিক রিয়াল। সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে আত্মঘাতী গোলে পাওয়া জয় নিয়েই তিন বছরের মধ্যে দুইবার ইউরোপ সেরার লড়াইয়ে চূড়ান্ত মঞ্চে উঠে গেছে আসরের রেকর্ড সর্বোচ্চ ১০ বারের চ্যাম্পিয়নরা। এর আগে সেমির প্রথম লেগের ম্যাচে ইংল্যান্ডের ম্যানচেস্টার থেকে গোলশূন্য ড্র করে এসেছিল জিনেদিন জিদানের দল। ওই ম্যাচে খেলেননি রিয়ালের সেরা তারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। ফিরতি লেগে ফিরলেও গোল পাননি সি আর সেভেন। কিন্তু তাতে কী! কাজের কাজ ঠিকই হয়েছে। হয়ত ফাইনাল মহারণের জন্য নিজের সেরাটা তুলে রেখেছেন পর্তুগীজ তারকা। দুই লেগ মিলিয়ে ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে রিয়াল। আগামী ২৮ ইতালির মিলানের সান সিরোতে অল-স্প্যানিশ ফাইনালে এ্যাটলেটিকোর মুখোমুখি হবে রিয়াল। এ নিয়ে রেকর্ড ১৪ বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে নাম লেখাল রিয়াল। তাদের সামনে এবার ১১তম শিরোপা জয়ের হাতছানি। ২০১৪ সালের ফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বীদের ৪-১ গোলে হারিয়ে বহু অপেক্ষার ‘লা ডেসিমা’ জিতেছিল গ্যালাক্টিকোরা। আর ম্যানসিটি তাদের ইতিহাসে সেরা সাফল্য নিয়ে বিদায় নিল। প্রথমবারের মতো সেমিতে উঠেই রেকর্ড গড়ে ইংলিশ ক্লাবটি। কিন্তু সেরা চারের দুই লেগে ভাল খেলেও ফাইনাল স্বপ্ন পূরণ হয়নি ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনির দলের। ম্যাচটা যেন দুর্ভাগ্য দিয়েই শুরু করেছিল অতিথি ম্যানসিটি। আগে থেকেই ছিলেন না ডেভিড সিলভা। ম্যাচের শুরুর দিকে অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানিও চোট নিয়ে বেরিয়ে যান। এরপর ফার্নান্ডোর আত্মঘাতী গোল। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে টানা ছয় ম্যাচ অপরাজিত থাকার আত্মবিশ্বাস নিয়ে যে দল মাঠে নেমেছিল দুই ধাক্কায় সেই আত্মবিশ্বাস মুহূর্তেই হাওয়া। নিজেদের জালে নিজেরাই গোল দেয়ার পর মনোবলই হারিয়ে ফেলে সিটিজেনরা। থাইয়ের ইনজুরির কারণে তিন ম্যাচ অনুপস্থিত থাকার পর রোনাল্ডোর ফিরে আসা রিয়ালকে বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগায়। শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকে স্বাগতিকরা। ডানি কারভাজালের ক্রস থেকে রোনাল্ডো ম্যাচের শুরুতেই মৌসুমের ১৭তম গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। কিন্তু তার হেড ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। কিন্তু তার পরমুহূর্তেই বেলের ক্রস সিটি বক্সের মধ্যে থাকা ফার্নান্ডো ক্লিয়ার করতে গেলে তা গোলরক্ষক জো হার্টকে পরাস্ত করে জালে জড়ায়। অর্থাৎ ম্যাচের ২০ মিনিটে গ্যারেথ বেলের ক্রস থেকে সিটির ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফার্নান্ডোর ছোঁয়ায় সিটি আত্মঘাতী গোলের লজ্জায় ডোবে। পরবর্তীতে এই গোল আর ফেরত দিতে পারেনি অতিথিরা। ম্যাচের ৩৬ মিনিটে আবার ম্যানসিটির জালে বল পাঠায় রিয়াল। টনি ক্রুসের ফ্রি-কিক থেকে পেপের পা ঘুরে বল আসে অধিনায়ক সার্জিও রামোসের কাছে। রিয়াল অধিনায়কের শট জালে প্রবেশ করলেও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল হয়। ৪৪ মিনিটে সমতা প্রায় নিয়েই এসেছিল ম্যানসিটি। কিন্তু ফার্নান্ডিনহোর শট সাইডবার ঘেঁষে বেরিয়ে গেলে এক গোলের অগ্রগামিতা নিয়ে বিরতিতে যায় রিয়াল। এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে রিয়ালের আক্রমণেরই বেশি ঝাঁঝ ছিল। কিন্তু ৫০ ও ৫৪ মিনিটে রোনাল্ডো ও লুকা মডরিচ দুটো সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে হতাশ করেন সমর্থকদের। ৬৪ মিনিটে আবার রিয়ালের জন্য হতাশা। জার্মান মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের কর্নার থেকে বেলের হেড ক্রসবারে লাগলে আবার রক্ষা পায় সিটি। এরপর ম্যাচের বাকি সময়ে সিটিও তেমন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি। ফলে এবারের মৌসুমে ঘরের মাঠে একটিও গোল হজম না করার রেকর্ড নিয়েই ১৪ বারের মতো ইউরোপিয়ান ফাইনালে পৌঁছে যায় রিয়াল। গোল না খাওয়ার ক্ষেত্রে একটি রেকর্ডও গড়েছে স্প্যানিশ পরাশক্তিরা। চ্যাম্পিয়ন্স লীগে এক মৌসুমে ১০টি ক্লিন শিট (ম্যাচে গোল হজম না করা) করে আর্সেনালের রেকর্ডে ভাগ বসিয়েছে রিয়াল। তাদের সামনে এবার গানার্সদের ছাড়িয়ে যাওয়ার হাতছানি! ফাইনালে গোল হজম না করলেই রেকর্ডটি এককভাবে হবে রিয়ালের। ২০০৫-০৬ মৌসুমে প্রথম ক্লাব হিসেবে আর্সেনালকে ১০টি ক্লিন শিটের অনন্য অর্জন এনে দেন জার্মান গোলরক্ষক জেন্স লেহম্যান। সেবার ফাইনালে বার্সিলোনার কাছে ২-১ গোলে হেরে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইংলিশ ক্লাব আর্সেনালের।
×