ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ফাইনালে আবারও ‘মাদ্রিদ ডার্বি’!

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৫ মে ২০১৬

ফাইনালে আবারও ‘মাদ্রিদ ডার্বি’!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই ‘দ্বৈত্য’ বার্সিলোনা ও বেয়ার্ন মিউনিখকে বিদায় করে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে উঠে গেছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। খুব বেশি তারকা খেলোয়াড় না থাকার পরও দলটির এমন সাফল্যে প্রশংসার স্রোত বইছে। এর নেপথ্যে কোচ দিয়াগো সিমিওনে। আর্জেন্টাইন এই কোচ দলকে আমূলে পাল্টে দিয়েছেন। তিনি ইউরোপ সেরার ফাইনাল মঞ্চে দলকে নিতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। অন্যদিকে ভিন্ন চিত্র বেয়ার্ন মিউনিখ কোচ পেপ গার্ডিওলার। টানা তিনবার তিনি সেমিফাইনাল থেকে নিজ দলের বিদায় দেখলেন। সঙ্গতকারণে হতাশ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে অবাক করা বিষয়, এরপরও দল নিয়ে গর্বের কথা জানিয়েছেন স্প্যানিশ এই কোচ। এই মৌসুমেই জার্মান পরাশক্তিদের বিদায় জানাচ্ছেন গার্ডিওলা। ফলে বাভারিয়ানদের হয়ে চাম্পিয়ন্স লীগ জয়ের স্বপ্ন পূরণ হলো না সাবেক বার্সিলোনা কোচের। ২০১৩ সালে এখানে যোগ দেয়ার পর টানা তিন মৌসুমে প্রতিযোগিতার সেমিফাইনালে উঠলেও এই গ-ি পেরুতে পারেননি বার্সিলোনার হয়ে দুইবার শিরোপা জেতা গার্ডিওলা। এই তিনবারের প্রতিবারই বেয়ার্নের বাধা স্পেনের দলগুলো। প্রথমবার রিয়াল মাদ্রিদ, গতবার বার্সিলোনা আর এবার রিয়ালেরই প্রতিবেশী এ্যাটলেটিকো। বর্তমানে লা লিগায় দুই ম্যাচ বাকি থাকতে বার্সার সমান পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে দিয়াগো সিমিওনের দল। অন্যদিকে ট্রেবল জয়ের স্বপ্ন ভেস্তে যাওয়ায় বেয়ার্ন এখন ঘরোয়া মৌসুমে দুটি শিরোপা জয়ের আশায়। চ্যাম্পিয়ন্স লীগ থেকে বিদায় নেয়ার পর গার্ডিওলা বলেন, এই দলটির জন্য আমি আমার জীবন দিয়েছি। আমি আমার সর্বস্ব দিয়ে লড়াই করার চেষ্টা করেছি। তারপরও আমরা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে পর্যন্ত পৌঁছাতে পারলাম না। কিন্তু আমি এই দলটি নিয়ে গর্বিত। আমরা যেভাবে খেলতে চেয়েছি সেটাই করতে পেরেছি। কিন্তু গোলের দেখা পাইনি, আমি আমার খেলোয়াড়দের জন্য দুঃখিত। অন্যদিকে বেয়ার্নের বিরুদ্ধে পাওয়া সাফল্যকে কোন সিনেমার শেষ মুহূর্তের রোমাঞ্চের সঙ্গে তুলনা করেছেন সিমিওনে। ম্যাচ শেষে এ্যাটলেটিকোর আর্জেন্টাইন কোচ বলেন, প্রথমার্ধটা খুব ভাল ছিল বেয়ার্নের। দারুণ একটি দল তারা। পেনাল্টি মিসটা আমাদের জীবন দিয়েছে। টোরেসের পেনাল্টির সুযোগ নষ্ট করা আমাদের কষ্ট দেয়। কিন্তু পাঁচ মিনিট অতিরিক্ত সময় নিয়ে শেষে এটা ছিল সিনেমার মতো, রোমাঞ্চকর। তিনি আরও বলেন, ১৮০ মিনিটে (দুই লেগ মিলিয়ে) আমরা তিন বছরের কাজ দেখিয়েছি। আমি আশা করছি যে, নিয়তি অবশেষে ফাইনালে আমাদের সাহায্য করবে। আমার ফুটবলাররা যা করছে তাতে গর্বিত আমি। এর আগে ইউরোপের ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে দুইবার ফাইনালে খেলেও শিরোপা জিততে পারেনি এ্যাটলেটিকো। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে বেয়ার্নের কাছে হেরে শিরোপা জয়ের স্বপ্ন ভাঙ্গে তাদের। এরপর ২০১৩-১৪ মৌসুমে ফাইনালে নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে স্বপ্ন বিসর্জন দিতে হয়। বার্সা-বেয়ার্নকে হারানোর পর আত্মবিশ্বাস বেড়েছে এ্যাটলেটিকোর। এ প্রসঙ্গে সিমিওনে বলেন, অনেক সমস্যার মধ্যে থেকেও আমরা বিশ্বের তিন সেরা দলের দুটিকে জয় করেছি। এই ম্যাচে বেয়ার্ন আমাদের চেয়ে ভাল খেলেছে। কিন্তু আমরা প্রথম পর্ব জিতেছিলাম। আমরা একটি এ্যাওয়ে গোল করেছি এবং এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু আমাদের পা মাটিতেই রাখতে হবে। দুইবছর আগের ফাইনালে রিয়ালের কাছে ৪-১ গোলে হেরে বিধ্বস্ত হয়েছিল এ্যাটলেটিকো। ফলে ভেঙ্গে যায় দলটির প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন। এবার কি প্রতিশোধের জন্য মুখিয়ে আছে সিমিওনের দল? কাল রাতে রিয়াল জয় পেলে সুবর্ণ সেই সুযোগটিও পাবেন টোরেস, গাবি, গ্রিজম্যানরা। দুইবছর আগের ক্ষত যে এখনও শুকায়নি সেটা সিমিওনের কথাতে স্পষ্ট। তিনি বলেন, আমরা কিছু একটা তো চাই। তবে সেটা প্রতিশোধ নয়। জীবনে সুযোগ ঘুরে ফিরে আসে, প্রতিশোধ নয়। এটা আমাদের জন্য আরেকটা সুযোগ বলতে পারেন। তাহলে ফাইনালে রিয়ালকেই অর্থাৎ মাদ্রিদ ডার্বি চাচ্ছেন সিমিওনে! সিমিওনের মতো শিরোপা স্বপ্ন এ্যাটলেটিকোর প্রতিটি সদস্যের। প্রথমবার ইউরোপ সেরা হতে মুখিয়ে আছেন দলটির ফুটবলাররা। এমন স্বপ্নের কথাই শুনিয়েছেন টোরেস, গ্রিজম্যান, লুইসরা।
×