ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবন হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা নাকচ

প্রকাশিত: ০৫:৪৩, ৫ মে ২০১৬

রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণে সুন্দরবন হুমকিতে পড়ার আশঙ্কা নাকচ

সংসদ রিপোর্টার ॥ রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের কারণে সুন্দরবন কোন হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা নাকচ করে দিলেন বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও পরিবেশ অধিদফতরের সকল বিধি-বিধান মেনে এবং সুন্দরবনকে রক্ষা করেই এ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি জানান, এ প্রকল্প স্থাপনের পূর্বে সম্ভাব্যতা যাচাই এবং পরিবেশগত প্রভাব সমীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে যে, রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপনের ফলে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না। বিদ্যুত কেন্দ্রটি সুন্দরবন থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে হওয়ায় সুন্দরবনের ক্ষতির কোন সম্ভাবনা নেই। তাই রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র অন্যত্র সরানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই। বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে পৃথক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম হাজেরা খাতুনের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও জানান, বিদ্যুত উৎপাদনে সর্বাধুনিক আল্ট্রা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। অপরদিকে ম্যানগ্রোভ বন কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণে বিশেষভাবে উপযোগী বিধায় সুন্দরবনের কোন হুমকির সম্ভাবনা নেই। যারা রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেন, তাদেরকে বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট সাব-ক্রিটিক্যাল কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র পরিদর্শন করার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেখানে কোন জীব, জন্তু, ফসল এবং মানুষের কোন ক্ষতি হয়নি। ইতোপূর্বে সুন্দরবন বাগেরহাট ও খুলনা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বর্তমানে এর পরিমাণ অনেক কমে গিয়েছে। তখন কোন কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্র ছিল না। কারণ সুন্দরবনের চারদিকে বসবাসরত জনগণ সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল। রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র স্থাপিত হলে সুন্দরবন এলাকায় জনগণের জন্য বিকল্প আয় সৃষ্টি হবে। ফলে সুন্দরবন ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পাবে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সালমা ইসলামের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী জানান, সুন্দরবন আমাদের অহঙ্কার, তাই সুন্দরবনকে সংরক্ষণ করেই এ বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করা হবে। পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে কয়লাভিত্তিক বড় বড় বিদ্যুত কেন্দ্রগুলো (চীন ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ) নদী, বন ও খনি মুখের আশপাশে অবস্থিত এবং এতে ইকোসিস্টেম, শব্দ দূষণ, পরিবেশ দূষণ, বর্জ্য নিঃসরণ সমস্যা হচ্ছে না। তিনি বলেন, রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রও একইভাবে শূন্য ডিসচার্জ, আল্টা সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি নিঃসরিত সকল ধরনের গ্যাস পরিবেশ অধিদফতরের গ্রহণযোগ্য মাত্রার নিচে রেখে আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন ও পরিবেশবান্ধব যন্ত্রপাতি দিয়ে নির্মিত হবে বলে পরিবেশের কোন ক্ষতি বা বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। তাই রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্র অন্যত্র সরানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই। একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, সারাদেশে গ্যাসের চাহিদায় তুলনায় ঘাটতি থাকায় নতুন এলাকায় গ্যাস সম্প্রসারণের কোন পরিকল্পনা এই মুহূর্তে সরকারের নেই। বর্তমানে দেশে গ্যাসের চাহিদার পরিমাণ দৈনিক ৩২শ’ মিলিয়ন ঘনফুট। যার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ২ হাজার ৭৪০ ঘনফুট। তিনি জানান, বর্তমানে বিতরণ লাইন সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে সরকারী নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রয়েছে। তবে যে সকল এলাকায় গ্যাস বিতরণ লাইন বিদ্যমান, সে সকল এলাকার শিল্প প্রতিষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত কমিটির মাধ্যমে সীমিত আকারে গ্যাস সংযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
×