ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রূপগঞ্জকে ৭ উইকেটে হারাল সাদা-কালো শিবির

মুশফিকের নৈপুণ্যে উড়ছে মোহামেডান

প্রকাশিত: ০৭:০৫, ৪ মে ২০১৬

মুশফিকের নৈপুণ্যে উড়ছে মোহামেডান

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ টি২০ ক্রিকেটে ভরাডুবি হয়েছে মুশফিকুর রহীমের। অথচ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে (ডিপিএল) উড়ছেন এ ব্যাটসম্যান! টানা তিন ম্যাচে দুর্দান্ত ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখান। একটি ম্যাচে তো শতকও করেন। মঙ্গলবার লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের বিপক্ষে অপরাজিত ৫১ রানের ইনিংস খেলেন। তাতে করে মুশফিকের দল মোহামেডানও উড়ছে। জয় তুলে নিয়েছে ৭ উইকেটে। তিন ম্যাচে ২ জয় পেয়ে গেছে মোহামেডান। ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে হয় ম্যাচটি। সোমবারই ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে শেষ পর্যন্ত খেলাটি হয়নি। প্রথমবারের মতো তাই এ ম্যাচের মধ্য দিয়ে লীগের কোন ম্যাচ ‘রিজার্ভ ডে’তে গড়ায়। খেলাটি হয় মঙ্গলবার। সেই ম্যাচে টস জিতে মোহামেডান। কিন্তু আগে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইন আপের রূপগঞ্জ ২১২ রানের বেশি করতেই পারেনি। বামহাতি স্পিনার নাঈম ইসলাম জুনিয়রের (৪/৪৮) স্পিন ভেল্কিতে ৪৯.৩ ওভারেই গুটিয়ে যায় রূপগঞ্জের ইনিংস। ব্যাট হাতে ওপেনার মিজানুর রহমান ৬৩ রান না করলে, আরও আগেই অলআউট হয়ে যেত রূপগঞ্জ। জুনায়েদ সিদ্দিকী (৩৯), সৌম্য সরকার (২০), মোহাম্মদ মিঠুন (৯), মোশাররফ হোসেনের (২৪) মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যানরা কিছুই করে দেখাতে পারেননি। জবাব দিতে নেমে সহজেই জয় পায় মোহামেডান। দলীয় ৫২ রানে গিয়ে ইজাজ আহমেদ (২৬), ৮৪ রানে গিয়ে সৈকত আলী (৩৪) আউট হয়ে যান। এরপর তৃতীয় উইকেটে শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান উপুল থারাঙ্গা ও মুশফিক মিলে ১০৬ রানের জুটি গড়েন। এ জুটিতেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় মোহামেডান। ১৯০ রানে গিয়ে থারাঙ্গা ক্যাচ আউট হয়ে যান। তার আগে মোহামেডানের হয়ে সর্বোচ্চ ৭১ রানের ইনিংস খেলে যান। এরপর মুশফিক ও আরিফুল হক (২৪*) মিলে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। মুশফিক ৬৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৫১ রান করেন। দল ৪৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২১৫ রান করে অনায়াসে জয় পেয়ে যায়। এশিয়া কাপ টি২০ ও টি২০ ক্রিকেট বিশ্বকাপ মিলিয়ে মোট ১০টি ম্যাচে ব্যাট করেন মুশফিক। একটি ম্যাচেও ২০ রান করতে পারেননি। ফেব্রুয়ারিতে এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে যে অপরাজিত ১৬ রানের ইনিংস খেলেন, সেটিই এশিয়া কাপ ও টি২০ বিশ্বকাপ মিলিয়ে এক ম্যাচে তার সর্বোচ্চ রান হয়ে থাকে। তখন মনে করা হয়েছিল, মুশফিকের ব্যাটিং নৈপুণ্যের ভরাডুবি শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু ঢাকা লীগে খেলতে নামতেই আবার জ্বলে উঠলেন মুশফিক। ব্রাদার্সের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৭২ রানের ইনিংস খেলার পর ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ১০৪ রান করেন। আর মঙ্গলবার রূপগঞ্জের বিপক্ষেও অর্ধশতক করেন এ ব্যাটসম্যান। তিন ম্যাচে এক শতক ও দুই অর্ধশতকে এখন লীগের সর্বোচ্চ স্কোরার মুশফিকই। তিন ম্যাচে ১১৩.৫০ গড়ে ২২৭ রান করেছেন মুশফিক। তবে ম্যাচটিতে মুশফিক হননি ম্যাচ সেরা। নাঈম ইসলাম জুনিয়র তার দুর্দান্ত স্পিন দিয়ে চার ব্যাটসম্যানকে মাত করেছেন। রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যানদের ভুগিয়েছেন। তাই ম্যাচ সেরা হয়েছেন নাঈম জুনিয়র। রূপগঞ্জের শুরুটা অসাধারণ হয়। দুই ওপেনার মিজানুর ও জুনায়েদ মিলে শুরুতেই ১০৭ রানের ওপেনিং জুটি গড়ে ফেলেন। এমন মুহূর্তে উইকেট শিকার করাটা খুব জরুরী হয়ে পড়ে। না হলে যে স্কোর আকাশচুম্বি হয়ে যাবে। কাজের কাজটি এমন গুরুত্বপূর্ণ সময়ে করেন নাঈম জুনিয়র। জুনায়েদকে এলবিডাবলিউ করে দেন। স্কোরবোর্ডে আর ৯ রান যোগ হতেই রূপগঞ্জের সর্বোচ্চ স্কোরার মিজানুর রহমানকেও আউট করে দেন নাঈম জুনিয়র! এরপর টপাটপ শুধু উইকেট পড়তে থাকে রূপগঞ্জের। ৯৬ রানের মধ্যে বাকি ৮ উইকেটের পতন ঘটে যায়। যেভাবে উড়ছিল রূপগঞ্জ, নাঈম জুনিয়র উড়া না থামালে মোহামেডানের হারও হয়ে যেতে পারত। সেখান থেকে একরকম দলকে বাঁচান নাঈমই। এরপর না ব্যাটসম্যানরা নিজেদের কাজটি সঠিকভাবে সারেন। লিস্ট এ (ওয়ানডেতে) ম্যাচে প্রথমবারের মতো চার উইকেট শিকার করেন নাঈম জুনিয়র। প্রথমবারেই ঝুলিতে ম্যাচ জেতানোর পুরস্কারটিও ভরে নেন। স্কোর ॥ মোহামেডান-রূপগঞ্জ ম্যাচ-ফতুল্লা রূপগঞ্জ ইনিংস ২১২/১০; ৪৯.৩ ওভার (মিজানুর ৬৩, জুনায়েদ ৩৯, মোশাররফ ২৪, সৌম্য ২০, আসিফ ১৪; নাঈম জুনিয়র ৪/৪৮, হাবিবুর ৩/২৬, নাঈম ২/৩৮)। মোহামেডান ইনিংস ২১৫/৩; ৪৬ ওভার (থারাঙ্গা ৭১, মুশফিক ৫১*, সৈকত ৩৪, এজাজ ২৬, আরিফুল ২৪*; রনি ১/২৮)। ফল ॥ মোহামেডান ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ নাঈম ইসলাম জুনিয়র (মোহামেডান)।
×