ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জাতীয় সঙ্গীত শুনে অনুপ্রেরণা পাই ॥ তহুরা খাতুন

প্রকাশিত: ০৬:৪০, ৪ মে ২০১৬

জাতীয় সঙ্গীত শুনে অনুপ্রেরণা পাই ॥ তহুরা খাতুন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভারতের বিপক্ষে ৩-১ গোলের ‘প্রথম ও ঐতিহাসিক’ জয়। তহুরা খাতুনের জোড়া গোল। দ্বিতীয় গ্রুপ ম্যাচে বাংলাদেশ ৯-০ গোলে হারায় নেপালকে। এবারও তহুরার জোড়া গোল। সেমিতে বাংলাদেশ ৯-১ গোলে স্বাগতিক তাজিকিস্তানকে হারায়। তহুরার নয়নাভিরাম হ্যাটট্রিক। ফাইনালে বাংলাদেশ ৪-০ গোলে হারায় ভারতকে। আবারও হ্যাটট্রিক তহুরার। বাংলাদেশ দলের ২৫ গোলের মধ্যে ১০টিই তহুরার। বলা হচ্ছে ময়মনসিংহের কলসিন্দুর স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তহুরা খাতুনের কথা। এই মুহূর্তে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৪ জাতীয় বালিকা ফুটবল দলের উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং সবার নয়নমণি। মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে সংবর্ধনা দেয়া হয় বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৪ জাতীয় বালিকা ফুটবল দলকে। ‘এএফসি অনুর্ধ-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ’ (দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল)-এর ব্যাক টু ব্যাক শিরোপা জেতার কারণেই এই সংবর্ধনা। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ছিল তহুরা। মাইক হাতে নিয়ে ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় তার সহজ সরল বক্তব্য দারুণভাবে নজর কেড়েছে তহুরা। অনেকে মজাও পেয়েছেন। তবে সবাই একবাক্যে স্বীকার করেছেনÑ মেয়েটি অকপটে অনেক কঠিন কথাই সহজভাবে এবং নিজস্ব ঢংয়ে বলতে পারে। কোন জড়তা নেই তার মধ্যে। ‘গতকাল (সোমবার রাত থেকে) এখন পর্যন্ত তহুরা কিছুতেই চ্যাম্পিয়নশিপ ট্রফিটি হাতছাড়া করেনি!’ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের এমন ঘোষণায় উপস্থিত সবাই হাসিতে ফেটে পড়েন। মাইক হাতে তহুরার ভাষ্য, ‘আমরা বিকেএসপিতে আবাসিক ক্যাম্পে অনেক কষ্ট করেছি। উদ্দেশ্য ছিল ভাল করাা, চ্যাম্পিয়ন হওয়া। সবার মাঝে একই লক্ষ্য ছিল। সেটি আমরা করতে পেরেছি।’ এরপরই তহুরা ময়মনসিংহের আঞ্চলিক ভাষায় বলে ‘আমরার মনে আছে তাজিকিস্তানের বিপক্ষে জাতীয় সঙ্গীত শুইন্যা আমাগো শইল্যের মধ্যে যে বাড়তি স্পিরিট আইছিল সেইটিই আমাগো চ্যাম্পিয়ন করছে!’ তহুরা আরও যোগ করে, ‘ছোটন স্যার আমাদের যেভাবে খেলতে বলেছেন, আমরা সেভাবেই খেলেছি। স্যার অনেক খেটেছেন আমাদের জন্য। অনুশীলন করানো। সন্ধ্যার পর ল্যাপটপে খেলার কৌশল বোঝানো, উৎসাহ দেয়া, কিছুই বাদ দেননি তিনি।’ দুটি হ্যাটট্রিক করা, টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ দশ গোল করা প্রসঙ্গে তহুরা বলে, ‘এত কিছু ভাবিনি। আমাদের লক্ষ্য ছিল ম্যাচ বাই ম্যাচ জেতা। আমার প্রতি ম্যাচে গোল করার পেছনে ছিল আমাদের দলের সহকারী কোচ মাহবুবুর রহমান লিটু স্যারের চুল টেনে ধরা।’ চুল টেনে ধরা মানে? সেটা কি রকম? একগাল হেসে তহুরার জবাব, ‘ম্যাচের আগে লিটু স্যার আমার মাথার চুল মুঠো করে চেপে ধরে আদর করে বলতেন তহুরা, যা গোল করে আয়! গোল করার জন্য এভাবে প্রতি ম্যাচেই লিটু স্যারের ‘চুলমলা’ খেয়েছি।’ নিজের এলাকায় তহুরাকে সবাই মেসি বলে ডাকে। মেসি তার আদর্শ খেলোয়াড়ও। তাজিকিস্তান গিয়ে কি অভিজ্ঞতা হলো? ‘দারুণ লেগেছে। তাজিকিস্তানকে হারানোর পর তো ওই দলের সবাই আমাদের ভক্ত হয়ে যায়।
×