ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে ॥ তথ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৪ মে ২০১৬

গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে ॥ তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গণতন্ত্রের সম্প্রসারণে বাধা দিতে নয় উন্নতির জন্যই গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রদান করা হয়েছে। কারও ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য বা জনগণকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ক্ষেপাতে কোন প্রকার উস্কানী প্রদানের জন্য এ স্বাধীনতা প্রদান করা হয়নি। তাই স্বাধীনতাকে সঠিকভাবে সঠিকপথে কাজে লাগাতে হবে বলে মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এসব কথা বলেন। মঙ্গলবার রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জনগণের গণমাধ্যম মনস্কতা-বাংলাদেশ প্রেক্ষিত শীর্ষক একটি ‘অনুসন্ধানমূলক গবেষণা পত্রের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। বেসরকারী গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠান ‘পরিপ্রেক্ষিত’ এদেশের সকল প্রকার গণমাধ্যম নিয়ে এ গবেষণা পত্র প্রকাশ করে। এতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মাঠপর্যায়ে জরিপের মাধ্যমে গবেষণাকার্য সম্পন্ন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবির, ডিবিসি টেলিভিশনের সম্পাদক প্রণব সাহা, একুশে টিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, একাত্তর টিভির প্রধান প্রতিবেদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, আমাদের অর্থনীতি পত্রিকার সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ মাহফুজুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ সহযোগী শাকিলা ইয়াসমিন সূচনা আর গবেষণাটির সারাংশ উপস্থাপন করেন অয়ন দেবনাথ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। এ জন্যই বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত ৭ বছরে রেকর্ডসংখ্যক টেলিভিশন, রেডিও এবং অনলাইন মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যম প্রকাশের সুযোগ দিয়েছে। সরকার গণতন্ত্রকে বিকশিত করার জন্য ও স্বৈরতন্ত্রকে সরিয়ে গণতন্ত্রের ভিত্তি সুসংহত করতেই গণমাধ্যমকে তার বন্ধু মনে করে। তবে গণতন্ত্রকে এখনও প্রাতিষ্ঠানিককরণ করা হয়নি। এতে সবাইকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। বর্তমান সরকার কখনও গণমাধ্যমকে তার প্রতিপক্ষ ভাবেনি। বর্তমান সরকারই ১৯৯৭ সালে প্রথম বেসরকারীভাবে সম্প্রচারকে সম্প্রসারিত করতে টেলিভিশনের লাইসেন্স দেয়। ফলে বর্তমানে দেশে এত চ্যানেল কাজ করছে। সংবাদ প্রকাশ বা কোন অনুষ্ঠান প্রচারের জন্য কোন চাপ দেয় না। এমনকি তাদের সংবাদ প্রচারেও কোন প্রকার বাধা প্রদান করা হয় না। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই ২০০৯ সালে তথ্য অধিকার আইন প্রণয়ন করেছে। যার ফল সবাই ভোগ করছেন। এছাড়া সম্প্রচার আইন, অনলাইন নীতিমালা তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে বিদেশী চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। কিন্তু এসব চ্যানেলে বিদেশী বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য সরকারকে তারা কোন প্রকার কর প্রদান করছে না। গবেষণা অনুযায়ী কর ধার্যের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে ভাববে। ইনু বলেন, গণমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের নিত্যসঙ্গী। নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, ব্যক্তি ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করা ও সবার তথ্য পাওয়ার অধিকার রক্ষায় ও তা নিশ্চিতে গণমাধ্যম কাজ করে। তবে দেশে ইলেকট্রনিক মাধ্যমে সংবাদ বা অনুষ্ঠান প্রচারে কোন আইন না থাকায় সাংবাদিকদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। এ জন্য আইন থাকা উচিত। গণমাধ্যমের ওপর সরকারের কোন চাপ না থাকলেও সঠিক সংবাদ প্রচারে জঙ্গীবাদ ও মাফিয়া চক্রের হুমকি রয়েছে। সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, গবেষণা অনুযায়ী শতকরা ৮৪ ভাগ লোক স্যাটেলাইট চ্যানেলের আওতাভুক্ত। তাই বিষয়টি নিয়ে গবেষণার দাবি রাখে। এ জন্য বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। এছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায় সরকার ও সাংবাদিকদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল বলেন, মুক্ত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠা দিবসে বিশ্বে বাংলাদেশ ২ ধাপ উন্নতি করলেও সারাবিশ্বে বর্তমানে ১২ ধাপ অবনতি হয়েছে। এদেশে ২ ডজন সাংবাদিকের মধ্যে একমাত্র গৌতম হত্যাকা- ছাড়া কোন সাংবাদিক হত্যাকা-ের বিচার হয়নি। তাও আবার নিম্ন আদালতে বিচার হয়েছে। পরিপ্রেক্ষিতের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবির বলেন, গণমাধ্যমকে বিজ্ঞাপনের বাইরেও মিডিয়া পরিচালনার কথা ভাবতে হবে। বর্তমানে ভালমানের সংবাদ ও গবেষণামূলক অনুষ্ঠানের স্পন্সরের খুবই অভাব। সাংবাদিকদের উন্নত ও বাস্তবসম্মত প্রশিক্ষণের তেমন ব্যবস্থা নেই।
×