ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে জাটকা সংরক্ষণে নয়া কৌশল

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৪ মে ২০১৬

চট্টগ্রামে জাটকা সংরক্ষণে নয়া কৌশল

মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস ॥ জাটকা কৌশলে হিমায়িত গুদামজাত হচ্ছে। মৌসুমের জন্য ইলিশ রক্ষায় জাটকা ধরা নিষিদ্ধ হলেও সরকারী নিষেধাজ্ঞা মানেনি অপরাধীরা। আইন অমান্য করেই নিধনকারীরা ঠিকই ট্রলার নিয়ে গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে। এমনকি টনের পর টন জাটকা নিয়ে ফিরে আসছে। কিন্তু বাজারে যাচ্ছে না জাটকা। ফলে অনেকটা জাটকা শূন্য বাজার। এদিকে ভোক্তাদের চাহিদা থাকলেও ব্যবসায়ীরা অনেকটা আতঙ্কেই রয়েছেন। ফলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম বন্ধের অপেক্ষায় রয়েছে জাটকা ব্যবসা। প্রশ্ন উঠেছে, জাটকা নিধন বন্ধে জেলা প্রশাসন ও র‌্যাব ফোর্স তৎপর থাকলেও সমুদ্রের পাহারাদাররা কি করছে। সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সঠিক পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ থাকলে জেলেরা ফিশিং ট্রলার নিয়ে দিনের পর দিন সমুদ্রে জাটকা নিধনে কালক্ষেপণ করত না। এছাড়া গত শনিবার থেকে ইলিশ ধরার মৌসুম শুরু হলেও সাগরে ইলিশ মিলছে না। অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রামের নামীদামী ফিশারিজ প্রতিষ্ঠানগুলো জাটকা নিধনের সঙ্গে জড়িত। তাদের ব্যাপক হারে নিধনের কারণে ইলিশ ধরার মৌসুমে ইলিশের দেখা মিলছে না। সাগরকেন্দ্রিক সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জাটকা নিধনের জন্য পরোক্ষভাবে দায়ী। ক্রেতা সাধারণের অভিযোগ, যারা বা যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছে সরকার সমুদ্র পাহারা দেয়ার দায়িত্ব দিয়েছে তারা একটু তৎপর হলেই শুধু জাটকা নিধনই নয়, সমুদ্রকেন্দ্রিক অনেক অপরাধ বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া সামুদ্রিক মৎস্য অধিদফতরই বা কি করছে। র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গত রবিবার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মনসুরের নেতৃত্বে র‌্যাব সেভেনের একটি টিম নগরীর কর্ণফুলী থানাধীন চরলক্ষ্যা এলাকায় অবস্থান নেয়। সেখানে সি-রিসোর্সসের তালাবদ্ধ হিমায়িত গুদামে তল্লাশি চালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু বন্ধের দিন হওয়ায় বা র‌্যাবের অভিযান টের পেয়ে আগেই গা ঢাকা দেয়। তবে সেখানে কয়েক নিরাপত্তা প্রহরী দ-ায়মান ছিল। অভিযান টিমটি গুদামের তত্ত্বাবধানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। পরে নিরাপত্তারক্ষীদের পক্ষ থেকে বিষয়টি জানানো হলেও মালিকপক্ষ প্রথম অবস্থায় নানা অজুহাতে গুদাম খোলতে অপারগতা প্রকাশ করে। তবে তল্লাশি অভিযান চালাতে মোবাইল টিমের পক্ষ থেকে তালা ভেঙ্গে গুদামের ভেতরে প্রবেশের ঘোষণায় আতঙ্কিত হয় কর্তৃপক্ষ। ফলে গুদামের একজন কর্মচারী গিয়ে তালা খুলে দেয়। তালা খোলার সঙ্গে সঙ্গে দেখা গেল জাটকা নিধনই নয়, জাটকা সংরক্ষণেও নানা কৌশল অবলম্বন করেছে কর্তৃপক্ষ। হিমায়িত গুদামে পাওয়া গেছে, ছোট ছোট বস্তায় রাখা হয়েছে সামুদ্রিক মাছ। কয়েকটি সারিতে এসব মাছ রাখা হয়েছে। তবে এসব মাছের মধ্যে সবগুলোই জাটকা নয়। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে মিশিয়ে ফেলা হয়েছে জাটকাকে।
×