ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নওগাঁয় ফসলী জমির মাটি ইটভাঁটিতে

প্রকাশিত: ০৩:৫৪, ৩ মে ২০১৬

নওগাঁয় ফসলী জমির মাটি ইটভাঁটিতে

বিশ্বজিৎ মনি, নওগাঁ ॥ রাণীনগর উপজেলার প্রায় ১০টি ইটভাঁটির মালিক ফসলী জমি থেকে অবাধে মাটি কেটে ইট তৈরির কাজে ব্যবহার করছে। নির্বিচারে কৃষি জমি থেকে এভাবে মাটি খননের ফলে তিন ফসলের কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরাশক্তি আর বিলুপ্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। জানা গেছে, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে নদী-নালা খাল-বিল ছাড়া প্রায় সাড়ে ২১ হাজার হেক্টর কৃষি জমি রয়েছে। প্রায় সকল জমিতেই সারা বছর কোন না কোন ধরনের ফসল চাষ করে কৃষক। কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি এবং উৎপাদিত কৃষিজাত পণ্যের যথাযথ মূল্য না পাওয়ায় স্থানীয় এক শ্রেণীর কৃষক ভাটা মালিকদের লোভনীয় অফারে কোন কিছু খরচ ছাড়াই প্রতি গাড়ি (ট্রাক্টর) মাটি ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় বিক্রি করছে। এতে এক ফুট গর্ত করে প্রতি বিঘায় প্রায় ১৭ হাজার টাকার মাটি বিক্রি করছে কৃষক। নির্বিচারে আবাদী কৃষি জমি থেকে মাটি খনন করায় দিনদিন কমে যাচ্ছে ফসলী জমি। অন্যদিকে উর্বরতা শক্তি কমে গিয়ে ফসল উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। সেখানে সামান্য বৃষ্টিতে সৃিষ্ট হচ্ছে স্থায়ী জলবদ্ধতা। প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা অবদি প্রায় শতাধিক ট্রাক্টর মাটি কেটে ভাটায় পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। উপজেলার কাশিমপুর, হরিশপুর, নগর বালুর ঠিকি, রামরায়পুর, ম-লেরপুল, খট্টেশ্বর হাদিপাড়া এলাকায় কৃষি জমি থেকে অবাধে মাটি কেটে ইটভাঁটির মালিকরা ইট তৈরি কাজে ব্যবহার করছে। মাটি কাটার প্রভাবে চলতি বোরো মৌসুমে ১৯ হাজার ৪শ’ ১০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও শুধু ইটভাঁটিয় কৃষি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করার কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৩শ’ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ কম হয়েছে। এর মাত্রা বাড়তে থাকলে আগামী রোপা-আউশ মৌসুমে ধান উৎপাদন ধীরে ধীরে আরও মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে। উপজেলার ভাটার মালিকরা ভাটার সামনে মাটি পাহাড়ের মতো উঁচু করে মজুত করে রাখছে। বর্তমানে ধান চাষ করে কৃষক তেমন লাভবান না হওয়ায় অধিক লাভের জন্য তারা মাটি কেটে বিক্রি করছে।
×