ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কলাপাড়ায় আবাদে বিপর্যয়ের শঙ্কা

৫০ খাল বিলে লোনা পানি

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ৩ মে ২০১৬

৫০ খাল বিলে লোনা পানি

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২ মে ॥ কলাপাড়ায় অন্তত ৫০টি খাল-বিল লোনা পানিতে ডুবে গেছে। ফলে কৃষক রবিশস্য নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। আউশ আবাদ ভেস্তে যাচ্ছে। লোনা পানিতে মাটি নষ্ট হওয়ায় আমন আবাদে বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সঙ্কট দেখা দিয়েছে ব্যবহারের পানির। এমনকি গবাদিপশুকে খাওয়ানোর মতো পানিও পাওয়া যাচ্ছে না। দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন লাখো কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। লোনা পানিতে মাটি গলে বিবর্ণ হয়ে গেছে। ঘাসসহ জমির সবকিছুতে পচন ধরেছে। দেখা গেছে, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের উমেদপুর স্লুইসগেটসহ বাঁধ বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়ায় হলদিবাড়িয়া, উমেদপুর ও লস্করপুরের আংশিক খালসহ বিল লোনা পানিতে ডুবে গেছে। কৃষক ইউনুচ মোল্লা জানান, যেসব জমি লোনা পানিতে ডুবেছে ওই জমিতে আমন ফলনও হবে না। এ ইউনিয়নের নীজকাটা, টুঙ্গিবাড়িয়া ও নবীপুর স্লুইসগেট খোলা থাকায় অভ্যন্তরীণ খাল লোনা পানিতে ভরপুর। পূর্ণিমা-অমাবস্যার জোতে খাল লোনা পানি এখন আবাদি জমিতে প্রবেশ করছে। টিয়াখালীর ছ’আনির খালটি এক বছর আগে মিঠা পানি সংরক্ষণের জন্য পুনর্খনন করা হয়েছে। করা হয়েছে একটি স্লুইস। বর্তমানে খালটি লোনা পানিতে টইটম্বুর। ফসলী জমি পর্যন্ত তলিয়ে গেছে। টিয়াখালীর হেতালবাড়িয়া স্লুইস খালেরও একই দশা। মিঠাগঞ্জের আবগঞ্জ, ময়ুর, আজিমদ্দিন, চরপাড়া, সাফাখালী, জবানখার খালসহ অন্তত আটটি খালে এখন লোনা পানিতে সয়লাব। বালিয়াতলী মধুপাড়া, কোম্পানিপাড়াসহ বড়বালিয়াতলীর খালে লোনা পানিতে ভরা। চাকামইয়ার কাঠালপাড়া ছয় ভেন্টের স্লুইসটি দিয়ে অনবরত লোনা পানি ঢুকেছে সেখানকার ৫/৭টি গ্রামের আবাদি জমিতে। চুঙ্গাপাশার চিত্র একই। চম্পাপুর ইউনিয়নের পাটুয়ার স্লুইস খালে লোনা পানির প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। বালিয়াতলীর কালির খালটি লোনা পানিতে ভরা। ধুলাসার ইউনিয়নের অনন্তপাড়া, কাউয়ারচর স্লুইস দিয়ে লোনা পানি ঢুকে খালসহ আবাদি জমি লোনা পানিতে ডুবে গেছে। এভাবে লতাচাপলী, ডালবুগঞ্জ, ধানখালী, মহিপুর, লালুয়াসহ ১২টি ইউনিয়নের সর্বত্র একই দুরবস্থা। অন্তত ৫০টি স্লুইস সংযুক্ত খালে লোনা পানি ঢুকে ডুবে গেছে। ধানখালীর দেবপুরের কৃষকের কপাল পুড়েছে আরও এক মাস আগে। বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে তাদের ডালজাতীয় কোটি টাকার ফসলসহ তরমুজ পচে গেছে লোনা পানির প্লাবনে। বাড়িঘর এখন অনিরাপদ হয়ে পড়েছে। গবাদিপশুকে খাওয়ানোর কোন পানি নেই। সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানান, অধিকাংশ স্লুইসের গেট ভাঙ্গা এবং বেড়িবাঁধ মেরামত না করায় কৃষকের এমন সর্বনাশ হয়ে গেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের কলাপাড়াস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আবুল খায়ের জানান, পুরনো ইনলেট এবং গেট-কপাট মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া বহু স্লুইসগেট এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মাছ ধরার জন্য ভেঙ্গে ফেলছে। কিছু জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। সর্বোপরি কৃষকের স্বার্থে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। এছাড়া বেড়িবাঁধের ভাঙ্গা অংশ মেরামতের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
×