ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে সংখ্যালঘু দর্জিকে কুপিয়ে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৬, ১ মে ২০১৬

টাঙ্গাইলে সংখ্যালঘু দর্জিকে কুপিয়ে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ৩০ এপ্রিল ॥ টাঙ্গাইলে সংখ্যালঘু এক দর্জিকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গোপালপুর পৌর এলাকার ডুবাইল বাজারে শনিবার দুপুরে এই হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। নিহত নিখিল চন্দ্র জোয়ারদার মৃত নলিনীকান্ত জোয়ারদারের ছেলে। এলাকাবাসীর ধারণা, এ হত্যাকা-ের সঙ্গে জঙ্গীগোষ্ঠী জড়িত থাকতে পারে। গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জলিল ও এলাকাবাসী জানান, দুপুর ১২টার দিকে নিখিল চন্দ্র (৫০) ডুবাইল বাজারে নিজ বাড়ির সামনে তার টেইলারিং দোকানে কাজ করছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে তিন যুবক এসে তাকে দোকান থেকে টেনে বের করে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। মাথা ও গলায় কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা সুতী কালীবাড়ী সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল নিয়েই পালিয়ে যায়। এ সময় তারা ঘটনাস্থলে একটি ব্যাগ ফেলে যায়। ব্যাগের ভেতর কয়েকটি ককটেলসদৃশ বস্তু রয়েছে। খবর পেয়ে গোপালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এলাকাবাসী জানান, নিহত নিখিল বছরখানেক আগে স্থানীয় এক ব্যক্তির সঙ্গে ধর্ম নিয়ে তর্কের সময় হযরত মুহম্মদ (সা) সম্পর্কে কটূক্তি করেছিলেন। পরে এলাকায় তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছিল। সে সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছিল। তারপর থেকে তিনি হুমকির মধ্যে ছিলেন। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীর জানান, কারা কী উদ্দেশ্যে এ হত্যাকা- ঘটিয়েছে পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। আইএসের ‘দায় স্বীকার’ ॥ বিডিনিউজ জানায়, টাঙ্গাইলে মহানবীকে (সা) নিয়ে মন্তব্যের জন্য জেল খেটে আসা হিন্দু দরজি হত্যাকাণ্ডে জঙ্গী গোষ্ঠী আইএসের দায়িত্ব স্বীকারের বার্তা আসার খবর এসেছে। শনিবার দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডের পর সন্ধ্যায় সাইট ইন্টিলিজেন্স গ্রুপের ওয়েবসাইটে এই খবর দেয়া হয়। এতে বলা হয়েছে, ‘আমাক নিউজ এজেন্সি’র মাধ্যমে বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলায় হিন্দু দরজিকে কুপিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। ব্লগার, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট থেকে শুরু করে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক এবং সমকামী অধিকারকর্মীদের যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল, সেভাবেই ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়। বাংলাদেশে এসব হত্যাকাণ্ডের পর আল কায়েদা ও আইএসের নামে যেসব বার্তা এসেছিল, তার কয়েকটিতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ঘটনায়ও দায় স্বীকার করতে দেখা গেছে। তবে আইএস ও আল কায়দার দায় স্বীকারের এসব বার্তা উড়িয়ে দিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে বরাবরই বলা হচ্ছে, দেশীয় জঙ্গীরাই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোর নাম দিয়ে ইন্টারনেটে বার্তা ছাড়ছে।
×