ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গোপালগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী

সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ১ মে ২০১৬

সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে বিএনপি-জামায়াত

নিজস্ব সংবাদদাতা, গোপালগঞ্জ, ৩০ এপ্রিল ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের উন্নয়ন বিশ্বের কাছে বিস্ময়; কিন্তু এটা আমাদের বিস্ময় নয়, বিশ্বাস। জনগণের প্রতি আমার বিশ্বাস ও আস্থা আছে এবং জনগণেরও আমার প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা আছে বলেই উন্নয়নমূলক কাজগুলো আমরা দ্রুত করতে পারছি। আমাদের ‘নিয়ত’ ভাল বলেই সবখানে আমরা সাফল্য অর্জন করছি। বিএনপি-জামায়াতের মতো আমরা হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে কাজ করি না। আমরা আন্তরিকতা ও ত্যাগের মনোভাব নিয়ে কাজ করি। আমরা সুষম উন্নয়নে বিশ্বাসী। শনিবার বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ সদরের ঘোনাপাড়া এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটসহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দানকালে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াত কখনই দেশের বা দেশের মানুষের কোন উন্নয়ন চায় না। তারা মানুষ পোড়াতে পারে, মানুষ হত্যা করতে পারে। তারা সরকার উৎখাতে ব্যর্থ হয়ে এখন গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। তারা গীর্জায় বোমা মেরেছে, প্যাগোডা ধ্বংস করেছে, মন্দির ধ্বংস করেছে, মসজিদ ধ্বংস করেছে, নামাজপড়া অবস্থায় তারা কৃষকলীগের নেতাকে হত্যা করেছে, শিক্ষক হত্যা করেছে। হত্যাকা- ও ধ্বংস ছাড়া আর তাদের কিছু করার নেই। আর আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এ দেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী করতে তিনি যে পদক্ষেপগুলো নিয়েছিলেন, তা আর তিনি শেষ করতে পারেননি। ’৭৫ এর ১৫ আগস্টে তাকে নির্মমভাবে হত্যার পর থেকে উন্নয়ন নিয়ে আর কোন অগ্রগতি হয়নি। আমরা যে স্বাধীন জাতি, আমরা যে মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি, আমাদের বিজয়ের যে একটা ইতিহাস আছে, সেটাই জাতিকে ভুলিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। বরং স্বাধীনতার বিরোধী যারা, যারা মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছে, যারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর দোসর ছিল, যারা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে, তাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। জনগণের ভোট চুরি করে তারা এমপি করেছে, তাদের দলপত্র দিয়েছে। যারা খুনী, স্বাধীনতাবিরোধী, মানবতাবিরোধী-তাদের নিয়েই তাদের চলাচল ছিল, তাদেরই তারা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিল। শেখ হাসিনা আরও বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এ দেশের মানুষকে নিয়ে তাঁর একটা স্বপ্ন ছিল, আকাক্সক্ষা ছিল। এক সময় বাংলাদেশের মানুষ একবেলা ঠিকমতো খাবার পেত না, ছিন্ন-বস্ত্রের কারণে মায়েরা তাদের লজ্জা নিবারণ করতে পারত না, শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত ছিল, রোগে ধুঁকে ধুঁকে মায়ের কোলে শিশু মারা যেতÑ চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল না। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছিল না। মানুষের যে মৌলিক চাহিদাগুলো, সেগুলো থেকে এদেশের মানুষ বঞ্চিত হতো। তাই ছাত্রজীবন থেকেই জাতির পিতা এদেশের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা দেখেছেন এবং তাদেরই অর্থনৈতিক মুক্তি ও একটি উন্নত জীবন দিবেন, এমন আকাক্সক্ষা নিয়েই তিনি রাজনীতি করেছেন। আর এই গোপালগঞ্জের মাটিতেই তো তাঁর রাজনীতির হাতেখড়ি। তাঁর জীবনের কারাবরণের হাতে খড়িটাও এই গোপালগঞ্জ থেকেই। তাঁর জীবনের সবকিছু ত্যাগ করেছেন এ দেশের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের জন্যই। এ সময় মায়ের কথা বলতে গিয়ে আবেগ-জড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মা সারাজীবন তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে তিনি সহযোগিতা করেছেন। যখন কারাগারে ছিলেন, আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ পরিচালনা করা, আন্দোলন গড়ে তোলা, মামলা-মোকদ্দমা দেখা, সংসার দেখাÑ সব কাজ তিনি একসঙ্গে করেছেন। তিনি মানুষের সামনে আসেননি ঠিকই; কিন্তু আজকে যে আমরা স্বাধীন জাতি এবং স্বাধীন জাতি হিসেবে আমরা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছি, এর পেছনে আমার মায়ের বিরাট অবদান রয়েছে। এজন্য মায়ের নামে প্রতিষ্ঠিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনের প্রতি। তিনি বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের এ স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবেÑ এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা। আর সেটা তখনই সম্ভব হয়, যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। কারণ জাতির পিতার মৃত্যুতে এ আওয়ামী লীগ সংগঠন ও নেতাকর্মীরা দিনের পর দিন কারাবরণ করেছে, অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছে। বহু মানুষ শহীদ হয়েছে। শহীদের তালিকা দেখলে দেখা যাবে, প্রতিটি ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মুজিব আদর্শের সৈনিকদেরই নাম বেশি পাওয়া যাবে। ’৭৫ এর পর থেকে যে অত্যাচার-নির্যাতন এদেশে হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিবাদ করেছি, আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার জন্য। বার বার আঘাত এসেছে; কিন্তু আমরা প্রতিঘাতে ফেরত দিয়ে এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছি। ২১ বছর পর আমরা আবার সেই উন্নয়নের অভিযাত্রা শুরু করি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ এক সময় খাদ্য ঘাটতির দেশ ছিল, আজকে আমরা খাদ্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি হঠাৎ করেই হয়নি। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা গবেষণা শুরু করেছি। গবেষণার ওপর সবচেয়ে গুরুত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো তিনি প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে গিয়েছিলেন। এ গবেষণার ফলেই আজকে নতুন নতুন বীজ আবিষ্কার হয়েছে। উৎপাদনও বেড়ে গেছে। আজকে আমরা তিন কোটি ৭৪ লাখ মেট্রিক টনের ওপরে খাদ্য উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছি। শুধু খাদ্যশস্যই নয়, মাছ মাংস দুধ ডিম প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা উৎপাদন বৃদ্ধি করেছি। এখন মানুষের চাহিদাও বদলে গেছে। বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা সুযোগ সৃষ্টি করে দিয়েছি। গ্রামভিত্তিক উন্নয়নের ওপর আমরা বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। দুস্থদের সেবা করা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ভাতা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, আশ্রায়ন প্রকল্প করে দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেছি। স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রায় ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে ২৩ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে আমরা দিচ্ছি। কিডনি, ক্যান্সার, ইএনটি, নিউরো-সায়েন্সসহ বিভিন্ন ইনস্টিটিউটসহ বিশেষায়িত ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালগুলো আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ই হয়েছে। বার্ন ইউনিট আমরা করেছিলাম, এবার সেটাকে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট করে দিচ্ছি, যাতে আমাদের লোকবল তৈরি হয়। একটা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, আরও তিনটি মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। পরবর্তীতে প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় করা হবে। বাংলাদেশে ৬১২ সরকারী হাসপাতাল রয়েছে, যেগুলোতে এক লাখ ২৫ হাজার আসন সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। তাছাড়া ৪২টি মেডিক্যাল কলেজ, ১৯টি ডেন্টাল কলেজ, ২৬টি নার্সিং কলেজ, ২২টি নার্সিং ইনস্টিটিউট, ১৭১টি মেডিক্যাল এ্যাসোসিয়েট স্কুলসহ অনেক ইনস্টিটিউট আমরা প্রতিষ্ঠা করেছি এবং অনেক প্রতিষ্ঠার পথে রয়েছে। আমরা যে গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি নিয়েছিলাম, তার ফলেই আমরা এসব প্রতিষ্ঠানগুলো করে দিচ্ছি। প্রায় ১২ হাজার ৬শ’ ২৮ জন সহকারী সার্জন ও ৫ হাজার নার্স আমরা নিয়োগ দিয়েছি। আরও ১০ হাজার নার্সের পদ সৃষ্টি করেছি এবং নার্সের পদ দ্বিতীয় শ্রেণীতে উন্নীত করেছি। এখন নার্সরা শুধু ট্রেনিং নিবেন না, পিএইচডি পর্যন্ত করতে পারবেন। ৩ হাজার মিডওয়াইফেরী পদ সৃষ্টি করে দিচ্ছি, তাদেরও ট্রেনিং দেয়া হবে। বক্তব্যের শেষে প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনকৃত প্রকল্পগুলো সুন্দর সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে পরিচালিত হবে, অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে, মানুষ এসব প্রতিষ্ঠান থেকে উন্নত সেবা পাবে- এ আশা ব্যক্ত করেন এবং নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলোও নির্দিষ্ট সময়ে সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জাতির পিতার কন্যা। নিজের ভাগ্য গড়ার জন্য রাজনীতি করি না। দুর্নীতি করে ভাগ্য গড়তে আসিনি। পদ্মা সেতু নিয়ে আমাদের দুর্র্নাম করতে চেয়েছিল; কিন্তু তা পারেনি। আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। তাই তাদের টাকা ফেরত দিয়ে আজকে নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। যে মানুষের জন্য আমার পিতা, আমার মা, ছোট্ট শিশু রাসেলসহ আমার ভাইয়েরা জীবন দিয়ে গেছেন, সেই ভাগ্যহারা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই আমার রাজনীতির লক্ষ্য। জনগণের জন্য কাজ করি, নিজেদের অর্থ-সম্পদ বানানোর জন্য নয়। আর সে লক্ষ্য নিয়েই সমগ্র বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়নের কাজ আমরা করে যাচ্ছি। যারা খুনী, দুর্নীতিবাজ, লুটপাটকারী, মানিলন্ডারিং থেকে শুরু করে এতিমের টাকাও চুরি করে খায়, তাদের হাতে কখনও জনগণের কল্যাণ হয় না- এটাই বাস্তবতা। শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় আমরা গোপালগঞ্জবাসী বৈরিতার শিকার ছিলাম। এ এলাকার উন্নয়নে যেখানেই যে বাজেট হতো, তা টাকা আনার আগেই বাজেট শেষ হয়ে যেত। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রকল্প এখান থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল, বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এর আগে, সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা থেকে টুঙ্গিপাড়ায় আসেন এবং সকাল ১০টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাসিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা ডাঃ মোদাচ্ছের আলী, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, শেখ হেলাল উদ্দিন এমপি, মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি, ইউনুস তালুকদার এমপি, উম্মে রাজিয়া কাজল এমপি, আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক শেখ মোহম্মদ আবদুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক চৌধুরী এমদাদুল হক, সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব আলী খানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া থেকে সড়কপথে রওনা হয়ে বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া এলাকায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে আয়োজিত বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। সেখানে ১৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৮৮ মিটার দীর্ঘ মধুমতি নদীর ওপর চাঁপাইল ব্রিজ, টুঙ্গিপাড়া প্রধান ডাকঘর, গোপালগঞ্জ জেলা শিশু একাডেমি কমপ্লেক্স ও জাতীয় মহিলা সংস্থার ভবনসহ ১০টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে গোপালগঞ্জে শেখ লুৎফর রহমান ডেন্টাল কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টুঙ্গিপাড়া ও মুকসুদপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এবং কাশিয়ানী-গোপালগঞ্জ নতুন রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেখান থেকে রওনা হন নিজ নির্বাচনী এলাকা কোটালীপাড়ার উদ্দেশে। দুপুরে কোটালীপাড়ার বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও প্রশিক্ষণ একাডেমিতে (বাপার্ড) নামাজ ও মধ্যাহ্ন বিরতি শেষ করেন। বিকেল তিনটার দিকে তিনি শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারী কলেজ মাঠে আয়োজিত সুধী সমাবেশে যোগ দেন এবং সেখানে কোটালীপাড়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স এবং স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেডের আয়োজনে এক শ’টি প্রাথমিক ও ১৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এ সময় স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সুধী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এ্যাডভোকেট সুভাষ চন্দ্র জয়ধর। সমাবেশ শেষে বিকেল চারটার দিকে তিনি কোটালীপাড়া থেকে হেলিকপ্টারযোগে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর এ সফর ঘিরে গোপালগঞ্জ সদর, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়ার বিভিন্ন সড়কে তোরণ ও ব্যানার দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়।
×