ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

একে মোহাম্মাদ আলী শিকদার

ওরা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে চায়

প্রকাশিত: ০৪:২৫, ১ মে ২০১৬

ওরা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করতে চায়

সম্প্রতি কয়েকটি নির্মম হত্যাকা-ের ঘটনায় নতুন করে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে। ২৩ এপ্রিল শনিবার সকালবেলা বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরপরই দুর্বৃত্তরা হত্যা করেছে একেবারে নির্বিবাদ, সম্পূর্ণ রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতাহীন একজন আদর্শবান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকীকে। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ঘনিষ্ঠজনের কথা থেকে জানা যায়, তিনি ছিলেন আধুনিক দর্শনের প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তার রুচিবান সংস্কৃতিমনা মানুষ। তাঁর কোন শত্রু থাকতে পারে এমনটা কেউ চিন্তাও করতে পারেননি। ধর্ম সম্পর্কে তিনি কখনও কিছু লিখেননি। শোনা যায়, রাজনীতি ও সমাজ সম্পর্কিত বিষয়াদি নিয়েও তিনি কোন লেখালেখি করেননি। তবে তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এবং বাঙালিয়ানাকে ভালবাসতেন। ব্লগে তিনি লেখালেখি করতে জানতেন না। তাই প্রশ্ন উঠেছে- এমন একজন মানুষকে কারা এবং কী কারণে হত্যা করতে পারে! এতদিন ধরে ব্যক্তিগত পর্যায়ে হত্যাকা-ের টার্গেট যারা হয়েছেন তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড ও কারণগুলোর সঙ্গে রেজাউল করিমের ব্যক্তিগত জীবনবৃত্তান্তের কোন মিল নেই। এ পর্যন্ত তিন শ্রেণীর মানুষকে জঙ্গীরা টার্গেট করেছে। প্রথমত, টার্গেট হয়েছে ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, যাদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী জঙ্গীরা ইসলাম ধর্মকে অবমাননার অভিযোগ তুলেছে। যেমনÑ অভিজিত রায়, রাজীব হায়দার, অন্তত, নীলয়, প্রকাশক দীপন। দ্বিতীয়ত, ইসলাম ধর্মের মধ্যে যারা উদার সহিষ্ণু ইসলামের চর্চা করেন অর্থাৎ ওদের থেকে ভিন্ন মতাবলম্বী ধর্মীয় আলেম, তাদের উগ্রবাদী জঙ্গীরা হত্যা করছে। এ শ্রেণীতে পড়েন যাত্রাবাড়ীর পীর লুৎফর রহমান, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব নুরুল ইসলাম ফারুকী এবং পীর খিজির হায়াত খান। তৃতীয়ত, তারা টার্গেট করছে হিন্দু ও খ্রীস্টান ধর্মের ধর্মীয় গুরু ও পাদ্রিদের। এই তিন শ্রেণীর কোনটাতেই রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজাউল করিম পড়েন না। তবে হত্যাকা-ের কৌশল এবং অন্যান্য তথ্যউপাত্ত যা পাওয়া গেছে তাতে প্রায় সকলেই মনে করেন, রেজাউল করিমকে উগ্রবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীই হত্যা করেছে। জেএমবি, জেএমজেবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হুজি ইত্যাদি। এদের সকলের উৎসস্থল এক ও অভিন্ন এবং তাদের সকলের লক্ষ্যও এক। আর তা হলো জামায়াতের কট্টরপন্থী ওয়াহাবিতন্ত্রের রাজনীতির প্রতিষ্ঠা। জঙ্গীদের স্বীকারোক্তি, তাদের আস্তানায় পাওয়া দলিল-দস্তাবেজ এবং আদালতের রায়ের মাধ্যমে জামায়াতের সঙ্গে জেএমবির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ ইতোমধ্যে বহুবার পাওয়া গেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক এসএ তাহের হত্যা মামলার রায় ও হত্যাকারীদের পরিচয় দেখলে সবাই বুঝতে পারবেন এরা সকলেই জামায়াত-শিবিরের লোক। চূড়ান্ত লক্ষ্য ওয়াহাবিতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চেষ্টার সঙ্গে জঙ্গীদের অনেকগুলো সাবসিডিয়ারি বা আপাত লক্ষ্য যোগ হয়েছে। যেমনÑ যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করা এবং টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরা যে, এই সরকার মানুষের নিরাপত্তা দিতে পারছে না। একই সঙ্গে সরকারকে বিদেশী প্রভাবশালী রাষ্ট্রের চাপে ফেলা এবং চূড়ান্তভাবে উৎখাতের চেষ্টা করা। সুতরাং রেজাউল করিমের হত্যার কারণ বুঝতে চাইলে সময়ের লাইন ধরে আমাদের বেশ একটু পেছনে যেতে হবে। বুঝতে হবে কেন জামায়াতের ঘাতক বাহিনী আলবদর একাত্তরে বাঙালী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করল। কেন কবি শামসুর রাহমান, লেখক হুমায়ুন আজাদ, উদীচী ও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানের ওপর আক্রমণ হয়। উপলব্ধি করতে হবে তরুণ-কিশোরদের প্রিয় একজন লেখক মুহম্মদ জাফর ইকবালকে কেন হত্যার হুমকি দেয়া হয়। পহেলা বৈশাখ ও বাঙালী সংস্কৃতিকে কারা, কেন বিধর্মীয় কর্মকা- ও বেদাত বলছে। এসব ঘটনারই ধারাবাহিকতা ও পরম্পরায় খুন হয়েছেন বাঙালী সংস্কৃতির ধারক-বাহক আদর্শবান শিক্ষক রেজাউল করিম। বাঙালী বুদ্ধিজীবী, লেখক, কবি, সাহিত্যিক, চিন্তাশীল মানুষ সকলেই এদের শত্রু। এটা যেমন আগে ছিল, এখনও বিদ্যমান। দুয়েকজনকে হত্যা করে এরা সর্বত্র ভয়-ভীতি ও ত্রাস সৃষ্টি করতে চায়, যাতে সকলেই নিজ নিজ জায়গায় হাত গুটিয়ে বসে থাকে। উদ্দেশ্য, জামায়াত-শিবির জঙ্গীদের লেখালেখি প্রচারণার বিপরীতে লেখা ও বলার যেন কেউ সাহস না পায়। তবে রেজাউল করিমের হত্যাকা-ের একদিন পর ২৫ এপ্রিল একই দিনে সকাল-বিকেলে আরও দুটি বড় চাঞ্চল্যকর হত্যাকা- জঙ্গীরা ঘটিয়েছে। ২৫ এপ্রিল সকালে গাজীপুরের হাইসিকিউরিটি কারাগারের সামনে জঙ্গী স্টাইলে খুন করা হয় সদ্য অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট রুস্তম আলী হাওলাদারকে। একই দিন বিকেলে রাজধানীর কলাবাগানে বাসায় ঢুকে একই সঙ্গে হত্যা করা হয় জুলহাস মান্নান ও মাহবুব তনয়কে। এরা দু’জনই উদার ও আধুনিকমনা সমাজকর্মী ছিলেন। পর পর ঘন ঘন এ রকম সব হত্যাকা- দেখে মনে হয় এর পেছনে এদের বড় লক্ষ্য আছে। আর তা হলোÑ সরকারের চলমান উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত এবং দেশ-বিদেশে ওঁৎ পেতে থাকাদের কাছে প্রমাণ করা সরকার মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ রকম কথাই সম্প্রতি বলেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট এবং টিআইবির সুলতানা কামাল। এদের কথায় জঙ্গীদের মনোবাঞ্ছনাই পূরণ হয়েছে। এই সময়ে জঙ্গীদের আরেকটি লক্ষ্য হলোÑ যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির দ-াদেশ (৩ মে রিভিউর তারিখ নির্ধারিত) কার্যকর করতে সরকার যেন সিদ্ধান্তহীনতায় পড়ে এবং তা বিলম্বে ঘটে। এসব যখন ঘটছে তখন এই সময়ে বাংলাদেশ কিন্তু একটা টার্নিং পয়েন্ট অতিক্রম করার চেষ্টা করছে। ঘুরে দাঁড়ানোর এই প্রচেষ্টা সফল হলে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত, আধুনিক, প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। চলমান টার্ন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে। উপমহাদেশের এই সময়ের প-িত ও মনীষী ব্যক্তিত্ব ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত এপিজে আবদুল কালাম তাঁর বহুল পঠিত ও বিখ্যাত বই ‘ইগনাইটেড মাইন্ডস’ গ্রন্থের ১৩৯ নম্বর পৃষ্ঠায় এই মর্মে মত প্রকাশ করেছেন যে, একটি রাষ্ট্রের পাঁচটি খাতের অগ্রায়নের গতি ও সক্ষমতা দেখে বোঝা যায়, ওই রাষ্ট্র অনুন্নত থেকে উন্নত রাষ্ট্রে পদার্পণের সম্ভাবনা কতটুকু। এই খাতগুলো হলোÑ কৃষি ও খাদ্য, বিদ্যুত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি এবং পাঁচ নম্বর হচ্ছে স্ট্র্যাটেজিক খাত। এক নন্বর খাতের বেলায় বিশেষজ্ঞসহ গবেষণাকারী প্রতিষ্ঠানের প্রদত্ত তথ্যমতে, বিশ্বে উদাহরণ সৃষ্টিকারী অগ্রগতি ঘটেছে বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্য সেক্টরে। খাদ্যে তো স্বয়ংসম্পূর্ণ আছেই, তার সঙ্গে মিঠা পানির মাছ, শাবসবজি, পোল্ট্রি, ফলমূল উৎপাদনে বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের অবস্থান চার থেকে সাতের মধ্যে। গত পাঁচ বছরে বিদ্যুত উৎপাদনের যে গতি তা অব্যাহত থাকলে এবং এ পর্যন্ত গৃহীত পরিকল্পনা সঠিক সময়ে বাস্তবায়িত হলে ২০১৯-২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সকল মানুষ বিদ্যুতের আওতায় আসবে। শিক্ষা খাতে প্রাথমিক শিক্ষায় অন্তর্ভুক্তি প্রায় শতভাগ হলেও মাধ্যমিক পর্যায়ে ঝরে পড়ার হার এখনও স্বাভাবিক মাত্রা থেকে বেশি হওয়ায় এই খাতে একটু বড় চ্যালেঞ্জ আছে। তবে শিক্ষাবিদগণ বলছেন, যেভাবে বৃত্তি-উপবৃত্তি চালু হচ্ছে এবং দারিদ্র্য যে হারে কমছে তাতে মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করা খুব কঠিন হবে না। স্বাস্থ্য খাতের অন্যতম সূচক মানুষের গড় আয়ু ৭০ বছর, যা এক অর্থে বিস্ময়কর অর্জন। শিশুমৃত্যু ও প্রসবকালীন মাতৃমৃত্যুর হার উপমহাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন। চতুর্থ খাতে তথ্যপ্রযুক্তিতে গত পাঁচ বছরে বিশাল উত্থান ঘটেছে। এর বিস্তৃতি ও সুফল পৌঁছে গেছে পল্লী গ্রাম পর্যন্ত। বিকাশ, টেলি মেডিসিন, টেলি চিকিৎসা ইত্যাদি এ খাতের বিশাল কর্মযজ্ঞের দুয়েকটি উদাহরণ মাত্র। ইউনিয়ন তথ্যকেন্দ্রে ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বসে স্কাইপের মাধ্যমে শহরের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের লিখিত প্রেসক্রিপশন পাচ্ছে গ্রামের মানুষ। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিনোদন থেকে শুরু করে তাজা খবর, ইন্টারনেট, ফেসবুক, গুগল সার্চ, ভিডিও আলাপসহ কিনা করা যায়! পঞ্চম খাত অর্থাৎ স্ট্র্যাটেজিক খাতে গত পাঁচ বছরের অর্জন কম নয়। নিউক্লিয়ার ফিল্ডে বাংলাদেশ পদার্পণ করেছে। ঈশ্বরদীতে শুরু হয়ে গেছে নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ। সশস্ত্র বাহিনীর নেভিতে স্ট্র্যাটেজিক সক্ষমতার প্রতীক সাবমেরিন যোগ হচ্ছে ২০১৭ সালে। পৃথিবীর স্বল্প কিছু দেশের সঙ্গে নাম লিখিয়ে ২০১৯ সালে মহাশূন্যে ভাসবে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট। উল্লিখিত পাঁচটি খাতের চলমান গতি অব্যাহত থাকলে মনীষী এপিজে আবদুল কালামের দর্শনসূত্র ধরে বলা যায়, উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য বাংলাদেশের টেক অফ পর্যায় আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সফলভাবে সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ ঘুরে দাঁড়ানোর স্তর বাংলাদেশ সফলভাবে অতিক্রম করবে। তখন বাংলাদেশকে আর পিছু তাকাতে হবে না। এই পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ একটা টেকসই রাষ্ট্রীয় বৈশিষ্ট্য ধারণ করবে। তার প্রধান অনুষঙ্গ হবে গণতন্ত্র, পূর্ণ অসাম্প্রদায়িকতা, আধুনিকতা, প্রগতিশীলতা ও পূর্ণ বাঙালিত্ব। এটা যখন হবে তখনই কেবল এ রাষ্ট্রকে আমরা বলতে পারবÑ মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। এই রকম একটা জায়গায় এলে দেশের ভেতরের এবং বাইরের কিছু শক্তি ও পক্ষ রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। প্রথমত, অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়বে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতির ধারক-বাহক জামায়াত, হেফাজত, কট্টর ইসলামিস্ট দল এবং এদের থেকে উদ্ভূত সব জঙ্গী-সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। দ্বিতীয়ত, ইতোমধ্যে বিএনপির জন্য বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং আগামীতে যে প্রশ্ন আরও কঠিন হবে তা হলোÑ তারা কি সাম্প্রদায়িক ও সাতচল্লিশের চেতনার রাজনীতি ত্যাগ এবং ধর্মান্ধ জামায়াত-হেফাজতের সঙ্গ পরিত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধের বৈশিষ্ট্যে পূর্ণ বিশ্বাসী হয়ে রাজনীতি করবে, নাকি বর্তমান অবস্থানে বহাল থাকবে? বর্তমান অবস্থান বজায় রাখলে বিএনপি অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়বে, যার কিছু আলামত ইতোমধ্যে দেখা গেছে। তখন ষড়যন্ত্র ও ধ্বংসাত্মক পথই হবে বিএনপির অবলম্বন, যার ট্র্যাক রেকর্ডে ভরপুর বিএনপির রাজনৈতিক ইতিহাস। তৃতীয়ত, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ে পাকিস্তান যে খেলা পূর্বে খেলেছে তা চিরদিনের জন্য বন্ধ হবে। ভারতের ওই বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠনগুলো আর কোনদিন মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে না। সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের ধারক-বাহক বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলসহ অন্যরা যখন-তখন জুজুর ভয় দেখিয়ে বাংলাদেশকে আর জোয়ালে আটকাতে পারবে না। সুতরাং উল্লিখিত ষষ্ঠ রিপু অর্থাৎ জামায়াত, সশস্ত্র জঙ্গী, সাতচল্লিশের চেতনাধারী বিএনপি, পাকিস্তান, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী এবং পুরনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তি, এরা সবাই যে যেভাবে পারে বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করবে, সরকারের জন্য সঙ্কট সৃষ্টি করবে এবং টার্গেটেড হত্যাকা- চালিয়ে নিরপেক্ষধারী সুশীল সমাজ ও মিডিয়ার মুখে বুলি ধরিয়ে দেবে যে, সরকার মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই একই অপশক্তির সঙ্গে যুদ্ধ করে বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিতে হয়েছে। কিন্তু ১৯৭৫ আর ২০১৬ এক নয়। বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন অনেক পরিপক্ব এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেত্রী। আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতির কৌশলে শেখ হাসিনার অবস্থান অনেক শক্তিশালী। তবে সবকিছু ওলট-পালট করে উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেয়ার চেষ্টা অপশক্তি অব্যাহত রাখবে। সেই চেষ্টারই অংশ হিসেবে তারা চালিয়েছে অপারেশন রাজশাহী টু ঢাকা। দুই দিনের ব্যবধানে প্রায় একই কায়দায় ও কৌশলে হত্যা করেছে চারজন মানুষকে। এই অপশক্তির এই সময়ের প্রধান লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা এবং বাংলাদেশের চলমান অগ্রযাত্রাকে স্তব্ধ করে দেয়া।
×