ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রমিকরা এখনও ন্যায্য অধিকার পায়নি ॥ ফকির আলমগীর

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ১ মে ২০১৬

শ্রমিকরা এখনও ন্যায্য অধিকার পায়নি ॥ ফকির আলমগীর

স্বাধীনবাংলা বেতারের কণ্ঠসৈনিক, একুশে পদকপ্রাপ্ত গণসঙ্গীতশিল্পী ফকির আলমগীর। খেটে খাওয়া মানুষের ন্যায্য অধিকারের দাবিতে যার সঙ্গীত হয়ে উঠেছে এক জ্বলন্ত মশাল। দেশের গ-ি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও তিনি ঢেলে দিচ্ছেন সঙ্গীতের এই অমিয়ধারা। আজ রবিবার মে দিবস উপলক্ষে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গানে কথায় তুলে ধরবেন শ্রমিকের অধিকারের কথা। এ সম্পর্কে কথা হয় গুণী এ শিল্পীর সঙ্গে। মে দিবস উপলক্ষে আপনার অনুভূতি কি? ফকির আলমগীর : মে দিবস সারা পৃথিবীব্যাপী এক বিশেষ অধিকার আদায়ের সাফল্যের দিন। সিকাগো শহরের হে মার্কেটে ১৮৮৬ সালের ১ মে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে শ্রমিক বিদ্রোহে পুলিশের গুলিতে অনেকে হতাহত হয়। ১৮৯০ সাল থেকে শ্রমিকরা এই দিনটি পালন করে আসছে। আমাদের দেশেও মর্যাদার সঙ্গে এই দিনটি পালন করা হয়। কিন্তু এত বছর পরেও মেহনতি মানুষ কতটুকু তার অধিকার আদায় করতে পেরেছে? আজও শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার পায়নি, তারা দারিদ্র্যের কশাঘাতে নিঃশেষিত হচ্ছে। রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি তার বাস্তব উদাহরণ। মে দিবসে আপনার ব্যস্ততা কেমন? ফকির আলমগীর : অন্যবারের তুলনায় এবার মহান মে দিবসে আমার ব্যস্ততা অনেক বেশি। গানে-কথায় আমি টিভি চ্যানেল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শ্রমিকদের দাবির কথা তুলে ধরব। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শ্রম মন্ত্রণালয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ও সফিপুর শ্রমিক সমাবেশে আমার বিশেষ পরিবেশেনা রয়েছে। চ্যানেল আইতে সকাল সাড়ে ৭টায় গানে গানে সকালে লাইভ, বিকেল সাড়ে ৩টায় গাহি সাম্যের গান ও রাত ১টায় তৃতীয় মাত্রা, বৈশাখী টিভিতে রাত ১১টায় শিকল ভাঙ্গার কাব্য লাইভ, বিটিভিতে বেলা সাড়ে ১১টায় আহ্বান, ৩টা ৫ মিনিটে আলেখ্যানুষ্ঠান সঞ্চালনা, মহান মে দিবস উপলক্ষে দেশ টিভিতে সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় আলোচনা, এনটিভিতে শুভ সন্ধ্যা, গাজী টিভিতে এই সন্ধ্যায় ও এটিএন বাংলায় চায়ের চুমুকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকব। গণসঙ্গীতের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলুন ফকির আলমগীর : গণসঙ্গীতের একটা সোনালি অতীত রয়েছে। ভাষা আন্দোলন, ৫৪, ৬২, ৬৬, ৬৯ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে গণসঙ্গীতের সাহসী ভূমিকা পালন করে। এছাড়া স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও জাতীয় দুর্যোগেও এই সঙ্গীত আমাদের সঙ্গী হয়েছে। মাঝে কিছুটা সময় হতাশ ছিলাম, যেন এই সঙ্গীতের তেমন কোন প্রয়োজন নেই মনে হয়েছিল। পুনরায় বর্তমান প্রজন্ম আমার সেই হতাশা থেকে মুক্তি দিয়েছে। তা আবার গণসঙ্গীতমুখী হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চ তৈরির পরে নতুন প্রজন্ম আবার গণসঙ্গীতের জাগরণ তুলে ধরেছে। আমরা আবার নতুন সূর্য দেখতে পাচ্ছি। নতুন প্রজন্মের জন্য ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী ভবিষ্যতে কি অবদান রাখতে চায়? ফকির আলমগীর : দেশের নতুন প্রজন্ম হলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। আমরা চেষ্টা করছি গণসঙ্গীতের প্রতি তাদের সচেতনতা বাড়ানোর। দেশের সুন্দর সোনালি দিনের আগমনি বার্তা বয়ে আনবে গণসঙ্গীত। আমাদের চেষ্টা থাকবে দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে গণসঙ্গীত শেখানো এবং এর প্রতি আকৃষ্ট করা। গণসঙ্গীত নিয়ে আপনার ভাবনার কথা বলুন ফকির আলমগীর : ফুল খেলবার দিন নয়, অদ্য গণসঙ্গীতের নিজস্ব এক অহঙ্কার আছে। সমাজের অন্যায়-অবিচার যতদিন থাকবে ততোদিন গণসঙ্গীত এগিয়ে যাবে তার প্রতিবাদী প্রত্যয় নিয়ে। -গৌতম পাণ্ডে
×