ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বাগমারায় পিতা-পুত্র আটক ॥ রাবিতে ফের আন্দোলন আজ থেকে

প্রকাশিত: ০৬:২১, ৩০ এপ্রিল ২০১৬

বাগমারায় পিতা-পুত্র  আটক ॥ রাবিতে  ফের আন্দোলন  আজ থেকে

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ও রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও মামলার কোন কূলকিনারা না হওয়ায় ক্ষোভ বাড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। প্রিয় শিক্ষকের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে টানা আন্দোলনের পর সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার বিরতি দিয়ে আজ শনিবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামছেন তারা। চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকা-টির রহস্য উদ্ঘাটনে কালক্ষেপণ করা হলে খুনীরা পার পেয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা তাদের। এদিকে, শিক্ষক হত্যাকা-ের ঘটনায় জেলার বাগমারা উপজেলা থেকে আরও দুজনকে আটক করা হয়েছে। উপজেলার শ্রীপুর থেকে শুক্রবার ভোরে পিতা ও পুত্রকে আটক করা হয়। রাজশাহী মহানগর পুলিশ তাদের আটক করেছে। শুক্রবার বিকেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ সামশুদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ওই দুই ব্যক্তি হলেন বাগমারা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল হাকিম (৬৩) ও তাঁর ছেলে বাগমারা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র আরিফুল ইসলাম। জানা গেছে, সংস্কৃতিমনা অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকী হত্যাকা-ের দিন থেকে টানা ছয় দিন উত্তাল ছিল রাবি ক্যাম্পাস। নৃশংস এই হত্যাকা-ের মাত্র তিন ঘণ্টার মধ্যেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সেদিনই জরুরী বৈঠক করে আন্দোলনে নামে রাবি শিক্ষক সমিতি। এরপর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ছয়দিন অধ্যাপক রেজাউল করিম হত্যার বিচার দাবিতে ক্যাম্পাসে নানা কর্মসূচী পালন করেছে ইংরেজী বিভাগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংগঠন। আন্দোলনকে সংগঠিত করতে প্রিয় শিক্ষকের ডাক নাম দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলা ভবনের সামনে তৈরি করা হয় ‘মুকুল চত্বর’। জানা যায়, টানা ছয়দিন আন্দোলনের পর শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ক্যাম্পাস ছিল ফাঁকা। মুকুল চত্বরে ইংরেজী বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বসে থাকতে দেখা যায়। তারা জানান, তীব্র গরম উপেক্ষা করে টানা আন্দোলনের পর শিক্ষার্থীদের অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই ক্লান্তি দূর করতে শুক্রবার কোন কর্মসূচী রাখা হয়নি। শনিবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামবেন তারা। ক্যাম্পাসে প্রতিবাদী র‌্যালি ও মানববন্ধনসহ শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিকীর হত্যাকারীরা গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তারা। শিক্ষকের হত্যাকারীরা এখনও গ্রেফতার না হওয়ায় রাবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অধ্যাপক রেজাউল করিমের মতো নিরীহ শিক্ষককে হত্যার এক সপ্তাহ পরেও খুনীদের গ্রেফতার করতে না পারাটা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাফল্যের পরিচয় নয়। তাই বাধ্য হয়েই আমাদের আন্দোলনে থাকতে হচ্ছে। রাবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শাহ আজম বলেন, সারাদেশের শিক্ষক-শিক্ষার্থী এই হত্যাকা-ের প্রতিবাদ জানাচ্ছে। আমরাও আমাদের জায়গা থেকে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যারা অধ্যাপক রেজাউলকে খুন করেছে আমরা চাই পুলিশ তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসুক। কিন্তু এক সপ্তাহেও সেটা হয়নি। তাই আমরা লাগাতার কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছি। বাগমারা থেকে পিতা-পুত্র আটক ॥ আটক আবদুল হাকিমের ছোট ভাই ইসাহাক আলী ও শ্রীপুর গামের বাসিন্দারা জানান, আবদুল হাকিমের বড় ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৫) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি দেড় বছর ধরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রেখেছেন। তাঁর কোন খোঁজখবরও জানে না পরিবারের সদস্যরা। বিশ্ববিদ্যালয়েও যায় না শরিফুল। এ কারণে তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।
×