ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ যুবলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে ও গুলিতে হত্যা

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ৩০ এপ্রিল ২০১৬

লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ  যুবলীগের দুই কর্মীকে কুপিয়ে ও গুলিতে হত্যা

নিজস্ব সংবাদদাতা, লক্ষ্মীপুর, ২৯ এপ্রিল ॥ লক্ষ্মীপুরে ইসমাইল হোসেন মানিক (৪৫) ও কামরুল ইসলাম (২৮) নামে দুই আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে। পরে সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়নের রাজিবপুর গ্রামের একটি মাঠ থেকে নিহতদের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে লাশ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠান হয়েছে। নিহত মানিকের পিতা স্থানীয় সদর উপজেলার বাঙ্গাখাঁ গ্রামের মৃত সেকান্দর হোসেন ও কামরুল ইসলামের পিতা বাঙ্গাখাঁ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ব্যবসায়ী শামছুল করিম। মানিক স্থানীয় আওয়ামী লীগ এবং কামরুল যুবলীগ কর্মী বলে স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতদের পরিবার জানায়, মাঝরাতে পৃথকভাবে দুর্বৃত্তরা মোবাইল ফোনে মানিক ও কামরুলকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। এর পর সকালে স্থানীয় ইউছুফ ডাক্তারের বাড়ির পাশে একটি মাঠে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। পুলিশ পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদের লাশ দু’টি উদ্ধার করে। ঘটনাস্থলে নিহত কামরুলের মামা নুর আলম জানান, কে বা কারা তাকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায় এবং সকালে হত্যার সংবাদ পান বলে তিনি জানান। মানিকের মেয়ে জেনী ও কামরুলের ভগ্নিপতি মাছুম জানান, স্থানীয় সন্ত্রাসী রিপন ও সংগ্রাম তার বাবাকে সম্প্রতি হত্যার হুমকি দেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন কাজল জানান, তালগাছের কাছে ক্ষেতের মাঝে সকালে দু’টি রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে এলকাবাসী তাকে খবর দেয়। পরে তিনি এসে পুলিশকে খবর দেন। তবে কী কারণে দু’টি জোড়া খুনের ঘটনা ঘটেছে তিনি কিছু বলতে পারেননি। এলাকাবাসী ও স্বজনরা বলেন, খুনীরা পরিকল্পিতভাবে ও ঠা-া মাথায় এ জোড়া খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। লক্ষ্মীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) নাসিম মিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে এ দু’টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। নিহতদের বিরুদ্ধে মাদক, ডাকাতি ও চুরিসহ একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানান তিনি। লাশ দুটি উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি। সদর থানার ওসি আব্দুল্লা আল মামুন ভূঁইয়া জানান, দু’টি হত্যাকা-ের মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লেখার সময় বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত থানায় কোন মামলা হয়নি এবং কেউ গ্রেফতার হবার খবর পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দু’টি সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে জানা গেছে, নিহত দু’জনের মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতের গভীর গর্ত রয়েছে। এদিকে জেলা যুবলীগ আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান একেএম সালাহউদ্দিন টিপু জানান, আসন্ন পৌর নির্বাচন বানচাল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে এ দু’টি হত্যাকা- ঘটানো হয়েছে। পৌর নির্বাচনে তাঁর পিতা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মেয়র পৌর নির্বাচনে আবারও আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকের একক মেয়র প্রার্থী আবু তাহের। অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকু ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন মানিককে আওয়ামী লীগ কর্মী ও কামরুলকে যুবলীগ কর্মী দাবি করে বলেন, খুনীরা যে দলেরই হোক অনতিবিলম্বে তাদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
×