ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

কলাবাগানে জোড়া খুনে জড়িত ৭ জনই আত্মঘাতী জঙ্গী ॥ নিশ্চিত তদন্তকারীরা

প্রকাশিত: ০৮:৫৩, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

কলাবাগানে জোড়া খুনে জড়িত ৭ জনই আত্মঘাতী জঙ্গী ॥ নিশ্চিত  তদন্তকারীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কলাবাগানে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির খালাত ভাই ও বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাবেক প্রটোকল কর্মকর্তা এবং বর্তমানে ইউএসএআইডিতে কর্মরত জুলহাস মান্নান ও তার বন্ধু নাট্যকর্মী মাহবুব রাব্বী তনয় হত্যায় অংশ নেয়া সাত জঙ্গী সুইসাইডাল স্কোয়াডের সদস্য বলে নিশ্চিত হয়েছে তদন্তকারীরা। হত্যাকারীরা ঝুঁকি নিয়ে হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটায়। হত্যাকা-ের ঘটনায় একাধিক গ্রুপ জড়িত রয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করা ব্যাগে পাওয়া পিস্তল ও গুলিসহ অন্যান্য আলামত থেকে খুনী শনাক্তের চেষ্টা চলছে। তদন্তকারীরা বলছেন হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করে আনসার আল ইসলামের নামে বিবৃতি প্রকাশিত হলেও তার কোন ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঘটনার সঙ্গে নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিম জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত ২৫ এপ্রিল কলাবাগানের ৩৫ নম্বর আছিয়া নিবাসের দোতলায় নারায়ের তাকবির, আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে বাসায় ঢুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে জুলহাস ও তার বন্ধু তনয়কে হত্যা করা হয়। হত্যাকারীদের চাপাতির আঘাতে আহত হন বাড়ির নিরাপত্তাকর্মী পারভেজ মোল্লা। পালানোর সময় চাপাতির আঘাতে আহত হন পুলিশ কর্মকর্তা মমতাজ ও কলেজ ছাত্র আনোয়ার হোসেন লিঙ্কন। পারভেজ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হত্যাকারীরা সংখ্যায় ছিল ৭। চারজন নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবর ধ্বনি দিয়ে জুলহাস ও তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে। অপর তিন হত্যাকারীর মধ্যে ২ জন বাড়ির নিচে মূল গেটের ভেতরে বাড়ির এক নিরাপত্তা প্রহরী ও তত্ত্বাবধায়ককে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে। একজন বাড়ির মূল গেটের বাইরে রাস্তায় পিস্তল উঁচিয়ে অবস্থান নিয়েছিল। হত্যার পর খুনীরা আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে বেরিয়ে যায়। এ সংক্রান্ত দায়েরকৃত দুটি মামলার তদন্তকারী সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হত্যাকারীরা বিকেল পাঁচটার দিকে ওই বাড়িতে হাজির হয়। যেভাবে হত্যাকারীরা সেখানে অপারেশন চালায় তা কল্পনারও বাইরে। কারণ একমুখী রাস্তায় যে কোন এক জায়গায় ব্যারিকেড পড়লে হত্যাকারীদের সঙ্গে জনতার মুখোমুখি সংঘর্ষ হতো। হত্যাকারীসহ জনগণও মারা যেতে পারত। এত কিছু জানার পরেও হত্যাকারীরা অপারেশন চালিয়েছে। হত্যাকারীরা প্রশিক্ষিত ও সুইসাইডাল স্কোয়াডের সদস্য তাতে কোন সন্দেহ নেই। পুলিশের সঙ্গেও গোলাগুলি হয়েছে। স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে হত্যাকারীরা মৃত্যু উপেক্ষা করে হলেও হত্যাকা- ঘটানোর ক্ষেত্রে দৃঢ প্রতিজ্ঞ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকারীদের পেছনে বিশেষ কোন শক্তি অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে। বাংলাদেশে আইএস বা আল কায়েদার তৎপরতা থাকার অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। হত্যাকা-ের ধরন বলছে আইএস বা আল কায়েদা নয়, হত্যাকা-ের সঙ্গে বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গী সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলাটিম জড়িত।
×