ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

নেপালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

নেপালকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে সেমিতে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ড্র করলেই চলত। ৫-০ গোলে হারলেও কোন সমস্যা হতো না। তবে ৬-০ গোলে হারলেই পত্রপাঠ বিদায়ের একটা ক্ষীণ শঙ্কা ছিলই। কিন্তু গোলাম রব্বানী ছোটনের শিষ্যরা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, যারা এমনটা ভেবেছিল, তারা নিশ্চয়ই লজ্জিত হয়ে ভাববে তাদের ধারণা কতটা ঠুনকো ছিল! হ্যাঁ, জয় কুড়িয়ে নিয়েছে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৪ বালিকা ফুটবল দল। বৃহস্পতিবার দিনটা আক্ষরিক অর্থেই যেন তাদের কাছে ছিল ‘বৃহস্পতি তুঙ্গে’! এদিন তারা চলমান এএফসি অনুর্ধ-১৪ আঞ্চলিক ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে নেপালকে শোচনীয় হারের স্বাদ উপহার দেয়। পরায় গোলের মালা। স্কোরলাইন? পড়লে নিশ্চয়ই প্রথমে বিশ^াস হবে না। তারপরও বিশ^াস করতেই হবে। ৯-০ গোলে জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা! তাজিকিস্তানের দুশানবেতে অনুষ্ঠিত ‘বি’ গ্রুপের এই ম্যাচের প্রথমার্ধেই ‘বেঙ্গল টাইগ্রেস’ দল এগিয়ে ছিল ৫-০ গোলে। মারজিয়া ও অনুচিং করে হ্যাটট্রিক। তহুরা করে জোড়া গোল। এই জয়ে একসঙ্গে দুটি অর্জন হয়েছে বাংলাদেশের। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া এবং সেমিফাইনালে উন্নীত হওয়া। ওদিকে ‘এ’ গ্রুপে যথাক্রমে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ হয়েছে ইরান ও তাজিকিস্তান। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৩০ এপ্রিল টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সেমিতে স্বাগতিক তাজিকিস্তানের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। স্বাগতিক তাজিকিস্তানের সঙ্গে এ আসরে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ ২-২ গোলে ড্র করেছিল। এ আসরের সর্বশেষ ভার্সনে বাংলাদেশ সেন্ট্রাল জোনে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। ২০১৫ সালে এএফসি অনুর্ধ-১৪ গার্লস রিজিওনাল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে (নেপালের কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত) এই স্বাগতিক নেপালকেই ১-০ গোলে হারিয়ে অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। বিভিন্ন কারণে ওই শিরোপা জয় বাংলাদেশ বালিকা ফুটবল দলের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ এবং স্মরণীয় হয়ে আছে। কেননা মেয়েদের ফুটবলের যেকোন পর্যায়ের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ দলের এটাই প্রথম শিরোপা। এর আগে ২০১৩ সালে বাংলাদেশ অনুর্ধ-১৪ মহিলা দল শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত এ আসরে অংশ নিয়ে তৃতীয় হয়েছিল (ফেয়ার প্লে ট্রফিও লাভ করেছিল)। চলমান টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের মেয়েদের শুরুটা ভারতের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয় দিয়ে। ওই ম্যাচে প্রথমবারের মতো ভারতকে হারায় বাংলাদেশ (৩-১ গোলে)। আর ওই জয়ে নেপালের বিপক্ষে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ন্যূনতম ড্র করলেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত ছিল লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের। তবে মারজিয়া-মারিয়ারা সেমিফাইনালটা নিশ্চিত করল রীতিমতো গোল উৎসবে মেতেই। ম্যাচের ২ মিনিটে দলীয় অধিনায়ক মারজিয়ার গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ (১-০)। ১৪ মিনিটে ব্যবধানটা দ্বিগুণও করে সে (২-০)। ১৭ মিনিটে নেপালের জালে বল পাঠায় অনুচিং মগিনি (৩-০)। ২৮ মিনিটে চতুর্থ গোলটা এসেছে তার পা থেকেই (৪-০)। ৩৩ মিনিটে সাজেদার গোলে ব্যবধান দাঁড়ায় ৫-০ তে। ৩৮ মিনিটে আবারও নেপালের জাল কাঁপান অনুচিং (৬-০)। ৬২ ও ৬৫ মিনিটে তহুরা খাতুনের জোড়া গোলে ৮-০ তে এগিয়ে যায় লাল-সবুজরা। গোল উৎসবের শুরুটা করেছিল যে মারজিয়া, সে-ই নেপালের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয় ৬৭ মিনিটে (৯-০)। ৭০ মিনিটের খেলা শেষ হলে শেষ চার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের। ২ ম্যাচে বাংলাদেশের পয়েন্ট ৬, সমান ম্যাচে ভারত ও নেপালের পয়েন্ট যথাক্রমে ৩ ও ০। ফলে ভারতও সেমিতে উঠল গ্রুপ রানার্সআপ হয়ে। এখন দেখার বিষয়, সেমিতে বাংলাদেশ তাজিকদের পরাভূত করে আবারও ফাইনালে নাম লেখানো নিশ্চিত করতে পারে কি-না।
×