ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

বেয়ার্নকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন এ্যাটলেটিকোর

প্রকাশিত: ০৬:০২, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

বেয়ার্নকে হারিয়ে ফাইনালের স্বপ্ন এ্যাটলেটিকোর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরও একবার উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে মাদ্রিদ ডার্বির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে। বুধবার রাতে চলমান আসরের সেমিফাইনালের প্রথম লেগে শক্তিশালী বেয়ার্ন মিউনিখকে ১-০ গোলে হারিয়েছে এ্যাটলেটিকো। ভিসেন্টে ক্যালডেরনে ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার সাউল নিগুয়েজ স্বাগতিকদের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন। ম্যাচের ১১ মিনিটে স্প্যানিশ অনুর্ধ-২১ দলের এই মিডফিল্ডার চারজন বেয়ার্ন ফুটবলারকে কাটিয়ে অনিন্দ্য সুন্দর গোলটি করেন। এরপর দীর্ঘ সময় বেয়ার্ন আধিপত্য বিস্তার করে খেললেও ভাগ্য তাদের সহায় ছিল না। বিশেষ করে ডেভিড এ্যালাবার দূরপাল্লার শট ক্রসবারে লেগে ফেরত আসায় হার নিয়েই মাদ্রিদ ছাড়তে হয়েছে পেপ গার্ডিওলার দলকে। এই জয়ে ফাইনালের দৌড়ে এগিয়ে থাকল এ্যাটলেটিকো। আগামী ৩ মে মিউনিখের এ্যালিয়েঞ্জ এ্যারানায় সেমির দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে এ্যাটলেটিকোকে আতিথ্য দেবে বেয়ার্ন। ওই ম্যাচ ড্র করলেও ফাইনালের টিকেট পাবে স্প্যানিশ ক্লাবটি। আর আরেক সেমিতে রিয়াল মাদ্রিদ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে ম্যানচেস্টার সিটিকে হারাতে পারলেই ফাইনালে হবে মাদ্রিদ ডার্বি। ইতিহাস বলে, চ্যাম্পিয়ন্স লীগে বেয়ার্নের দুর্দান্ত সাফল্য আর এ্যাটলেটিকোর দুর্ভাগ্য। দুটাই যেন এক সুতোয় গাঁথা। ১৯৭৪ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফাইনালে এ্যাটলেটিকোকে হারিয়েই প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছিল জার্মান পরাশক্তিরা। এর পর থেকে মোট পাঁচবার ইউরোপ সেরার মুকুট পরেছে বাভারিয়ানরা। আর ৪২ বছর আগে সেই হারের পর এখনো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা অধরা থেকে গেছে এ্যাটলেটিকোর। দুই মৌসুম আগে ফাইনালে উঠলেও নগর প্রতিদ্বন্দ্বী রিয়ালের কাছে হারতে হয়েছিল। তবে এবারের মৌসুমে ৪২ বছর আগে সেই হারের প্রতিশোধ এ্যাটলেটিকো নিয়েছে প্রথম লেগ জিতে। এখন কাক্সিক্ষতভাবে ফাইনালে উঠলে প্রতিশোধটা মধুর হবে সিমিওনের দলের। এর আগেও রিয়াল মাদ্রিদের কাছে দুই মৌসুমে সেমিফাইনালের প্রথম লেগে পরাজিত হয়েছিল বেয়ার্ন। ইতোমধ্যেই কোয়ার্টার ফাইনালে এ্যাটলেটিকোর কাছে পরাজিত হয়ে বার্সিলোনা প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিয়েছে। বেয়ার্নের সঙ্গে তিন বছরের মেয়াদ চলতি মৌসুমেই শেষ হচ্ছে কোচ পেপ গার্র্ডিওলার। আগামী মৌসুমে ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে যোগ দিচ্ছেন। কিন্তু একবারও পাওয়া হয়নি ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট। তাই শেষ বছর গার্ডিওলাকে শিরোপা উপহার দিতে দ্বিতীয় লেগে খেলোয়াড়রাও মুখিয়ে আছেন। এ্যাটলেটিকোর মাঠে বেশিরভাগ সময়ই বলের নিয়ন্ত্রণ ছিল বেয়ার্নের দখলে। কিন্তু শুরুতেই একটি গোল হজম করে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি অতিথিরা। ১১ মিনিটে অসাধারণ এক গোল করেন এ্যাটলেটিকোর তরুণ ফুটবলার সাউল নিগুয়েজ। মাঝ মাঠ থেকে বল পেয়ে বেয়ার্নের চার-পাঁচজন ডিফেন্ডারকে ফাঁকি দিয়ে দারুণ দক্ষতায় বল জালে জড়ান ২১ বছর বয়সী এই স্প্যানিশ ফুটবলার। ৭৫ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগও পেয়েছিল এ্যাটলেটিকো। কিন্তু ফার্নান্ডো টোরেসের শট ফিরে আসে গোলপোস্টে লেগে। পাঁচবারের শিরোপাজয়ী বেয়ার্নের বিরুদ্ধে দারুণ জয়ের পর সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এ্যাটলেটিকো কোচ দিয়াগো সিমিওনে বলেন, দারুণ একটা ম্যাচ। সবাই নিজেদের প্রতি বিশ্বাস রেখে খেলেছে। আমরা সত্যিই অনেক পরিশ্রম করেছি। তবে বেয়ার্ন কোচ গার্ডিওলা মোটেও সন্তুষ্ট হতে পারছেন না শিষ্যদের পারফরম্যান্সে। তিনি বলেন, আমরা যেভাবে খেলেছি তাতে আমি মোটেও সন্তুষ্ট নই। আমরা শুরুটা বাজেভাবে করেছি। গোলটা হজম করতে হয়েছে আমাদের ধীরগতির খেলার জন্য। সাবেক বার্সিলোনা কোচ আরও বলেন, এটা আমাদের জন্য মোটেই ভাল কোন ফলাফল নয়। এ্যাওয়ে গোল করতে না পারাটা সবসময়ই অস্বস্তিকর। কিন্তু এখনও আমাদের হাতে পুরো ৯০ মিনিট সময় বাকি আছে। আর এ্যাটলেটিকোর জয়সূচক গোলদাতা নিগুয়েজ বলেন, আমার চোখ সবসময়ই গোলের দিকে ছিল। এটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ গোল।
×