দিন যায়, বছর যায়
সাযযাদ কাদির
পথের ধারে থাকি
সূর্য ওঠে। ডোবে।
দিন যায়। বছর যায়।
আমি সব যাওয়া-আসা দেখি।
এ পথে অভাজনেরা যায় ফুটপাত ঘেঁষে,
অভিজনেরা চলে রাসতা কাঁপিয়ে
বুড়ো মানুষ যায় দেখে-শুনে পা ফেলে-ফেলে
তরুণ-তরুণীরা যায় আমোদে উত্তেজনায়
ব্যস্ত মানুষ যায় গা মাড়িয়ে অন্যদের
বেড়াতে যায় নরনারী সাজুগুজু করে, সুগন্ধি ছিটিয়ে
গুন-গুন গাইতে-গাইতে যায় উঠতি চাল্লু
বক-বক করতে-করতে যায় ছৈলছবিলার দল
প্যাকেটের মুচমুচে খাবার খেতে-খেতে যায় মিছিলের ফালতুরা
হাস্যেলাস্যে যায় ছপ্পন ছুড়ি যত
আমি দেখি, আমাকে তেমন করে দেখে না কেউ
তারা চলে যায়, থামে না
আমি দেখি সব কলে পড়া জন্তু
১০.০৪.২০১৬
টোটেম বিশ্বাসের চোখগুলো
শাহীন মাহমুদ
আদিম টোটেম বিশ্বাসের চোখগুলো অনার্য দর্শন নিয়ে খেলে-
সংখ্যা ও যোগের দর্শনে কেঁপে কেঁপে উঠে নিরঞ্জন আঙুলগুলো।
মনে হয় জন্মেছি হাজার বছর আগে কিরাত টং ঘরে, ক্ষীরোদ সাগর তীরে
আসে না শাপ, ঘুমের ঘোরেও কদলী নগর- অনাদিশক্তি গড়ে ওঠে দেহ পাঠ।
ডাহুকের দেশে বেশ ভালো আছি- যোগ আদিম অস্ট্রিক কিরাত মননে জন্ম
যে কবিÑ সে কি করে ভাসায় তরী যোগিনীর দেশে?
ষোল শত রমণীর ভোগ চক্র আজো আছে বাংলাতেÑ চেতনায় ফিরবে জানি
একদিন গুরুবাদী কবি।
বৃষ্টি এবং তুমি
শ্যাম সুন্দর সিকদার
বৃষ্টির নরম ছোঁয়ায় ফুলেরা যখন হয়ে যায়
অন্যরকম সতেজ
আমি তখন ফুলের পাপড়ির আয়নায়
তোমার মিষ্টি হাসির মুখখানা দেখি,
আর প্রতীক্ষায় থাকি
একটু শব্দহীন সতেজতার জন্য,
কান পেতে থাকি তোমার পায়ের আওয়াজ শোনার জন্য।
বৃষ্টির শব্দ যখন বেড়ে যায়
তখন আমি নির্ভয়ে পথের দূরত্ব কমাতে পারি,
অন্যরকম বৃষ্টির ছোঁয়ায় আমি নির্মাণ করতে পারি
একটা নির্বিঘ্ন নিষ্পাপ পৃথিবী!
বৃষ্টির জলের মত একখানি স্বচ্ছ ভবিষ্যতের আশায়
আমাদের পথচলা হতে পারে অবারিত।
ফুলের ছোঁয়ায় ছোঁয়ায় নতুন প্রজন্ম হবে
খাদহীন দেশপ্রেমিক-সাহসী-সৈনিক
আর মানব-প্রেমিক
এবং সর্বোপরি ভালোবাসার রাজদূত।
এসো, তুমি আর আমি মিলে ওদের জন্য
একটা মানবীয়-মমত্ববোধের ঘরবাড়ি তৈরি করে দিব!
সারা পৃথিবীর মানুষেরা তখন ওদেরকে অনুসরণ করবে
আর বৃষ্টির নরম ছোঁয়ার মতন
ফুল আর সকল মানুষকে প্রতিদানহীন ভালোবাসা দিবে।
আমি তাই কান পেতে থাকি
তোমার পায়ের আওয়াজের জন্য,
প্রতীক্ষায় থাকি-
জানালার পাশের বাগানে ফুলগুলির
নরম বৃষ্টিতে পরম আনন্দ দেখার জন্য!
যখন আবার আসবে বৃষ্টি নরম ছোঁয়া দিতে
এবং তুমিও আসবে আমাকে ছুঁয়ে দিতে।
-১২ এপ্রিল ২০১৬