ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ইউপি নির্বাচন ঘিরে অশান্ত হচ্ছে বাগমারা

প্রকাশিত: ০৪:০০, ২৯ এপ্রিল ২০১৬

ইউপি নির্বাচন ঘিরে অশান্ত হচ্ছে বাগমারা

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে বাগমারা ফের অশান্ত হয়ে উঠছে। প্রতিদিনই সংঘর্ষ, মারামারি, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ লেগেই রয়েছে। প্রার্থীদের অভিযোগ পুলিশের নিষ্ক্রিয়তায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে ত্রাস সৃষ্টি করেছে বাগমারা উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনী এলাকা। তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্থানীয় চরমপন্থী ও জেএমবির ক্যাডাররাও। তাদের সহিংস কর্মকা-ে শঙ্কিত ভোটারসহ প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকরা। আগামী ৭ মে এ উপজেলার ১৬ ইউনিয়নের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। উপজেলার গণীপুর, হামিরকুৎসা ও গোলাকান্দি ইউনিয়নে প্রতিদিন হুমকি, হামলা, ভাংচুর ও নির্বাচনী কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় খোদ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- ও হুমকির ঘটনায় বাগমারা থানায় বেশকিছু মামলা ও জিডি দায়ের হলেও পুলিশ কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। উল্টো এক চরমপন্থী সন্ত্রাসীকে ধরে নিয়ে ফাঁড়ি থেকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। বাগমারা থানার ওসি মতিয়ার রহমান অর্থের বিনিময়ে নির্বাচনী এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা- চালানোর সুযোগ দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ প্রার্থীদের। প্রার্থীদের কাছে পুলিশের অর্থ বাণিজ্যের বিষয় নির্বাচন কমিশন ও দলের কেন্দ্রেও অভিযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি সহিংস ঘটনা ঘটেছে গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে। সেখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পাঁচটি নির্বাচনী কার্যালয়ে পুড়িয়ে দেয় বিদ্রোহী প্রার্থীর সন্ত্রাসীরা। ইউনিয়নের কনোপাড়া, প্রেমতলি, পলাশি, রামরামা ও সাজুড়িয়ায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী কার্যালয় ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ পুড়িয়ে দেয়া হয় নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ব্যানার ও পোস্টার। এছাড়াও কনোপাড়ায় বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবিসহ পুড়িয়ে দেয়া হয় জয় বাংলা মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম লীগের কার্যালয়ও। তালতলি, কনোপাড়া ও পলাশিতে ভাংচুর করা হয়েছে নৌকার সমর্থকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর ইউনিয়নের পার্শ্ববর্তী তাহেরপুর পৌরসভা এলাকা থেকে ২০/২৫টি মোটরসাইকেল যোগে ৪০/৫০ জন বহিরাগত সন্ত্রাসী গোয়ালকান্দি ইউনিয়নে প্রবেশ করে এসব সন্ত্রাসী কর্মকা- চালাচ্ছে অভিযোগ করা হয়েছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ের ঘটনায় বাগমার থানায় দুটি মামলা ও দুটি জিডি হলেও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার বা বহিরাগত সন্ত্রাসীদের প্রবেশ ঠেকাতে পুলিশ কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে হামিরকুৎসা ইউনিয়নে নির্বাচনী মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠেছে জেএমবি ক্যাডার ও বাংলা ভাইয়ের অন্যতম সহযোগী মাহাতাব উদ্দিন খামারু। তিনি ক্যাডারদের সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর আনোয়ার হোসেনের সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ইউনিয়নে মাহাতাব খামারুর পিতা মোহাম্মদ আলী খামারু জাতীয় পার্টির হয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও গণীপুর ইউনিয়নে পাশের দুর্গাপুর এলাকা থেকে সন্ত্রাসীদের নিয়ে গিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে নির্বাচনী মাঠ দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী। তারা দলের মনোনীত প্রার্থী এনামুল হকের কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা ও ব্যানার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে। তবে অর্থ নিয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নির্বাচনী এলাকায় প্রবেশের সুযোগ দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বাগমারা থানার ওসি মতিয়ার রহমান বলেন, সহিংস ঘটনার এ পর্যন্ত থানায় ৭টি মামলা ও জিডি হয়েছে। মামলার আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গত দুদিনে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
×