ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

চট্টগ্রামে গণপিটুনিতে তিন ডাকাত নিহত আটক ৫

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ২৮ এপ্রিল ২০১৬

চট্টগ্রামে গণপিটুনিতে তিন ডাকাত নিহত আটক ৫

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে গণপিটুনিতে ডাকাত দলের ৩ সদস্য নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে উত্তর কাট্টলী বেড়িবাঁধ এলাকায় ডাকাতির সময় জনতা তাদের পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে তিন জন মারা যায়। এ সময় আরও ৫ ডাকাতকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে। নিহত তিন ডাকাতের মধ্যে ১ জনের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। অপর দুজন হলো সাগর (৩০) ও রাসেল (২২)। তিনজনই নগরীর সদরঘাট এলাকায় থাকত। আটক হওয়া পাঁচ ডাকাত হলো মোঃ রুবেল (১৮), আলাউদ্দিন (১৭), মনির হোসেন (১৮), মোঃ রানা (১৮) এবং মোঃ রুবেল (১৮)। তাদের কাছ থেকে একটি বন্দুক, একটি এলজি, তিনটি কিরিচ, একটি হকিস্টিক ও তিন রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত দল উত্তর কাট্টলী জাকের আলী সওদাগরের বাড়িতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে বেড়িবাঁধ এলাকায় অবস্থান নিলে আগে থেকে পাহারায় থাকা ওই এলাকার লোকজন তাদের ঘেরাও করে ফেলে। এক পর্যায়ে তারা ডাকাতদের ধরে মারধর শুরু করে। এ সময় জনতার পিটুনিতে ডাকাত দলের ৩ সদস্য মারা যায়। বাকি ৫ জনকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক করে। তিনি আরও জানান, নিহত তিন ডাকাত সদস্যের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় গণপিটুনি ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা হয়েছে। সদীপ কুমার দাশ আরও জানায় আটক পাঁচজন এক সময় টোকাই ছিল। বিভিন্ন ধরনের ছোটখাট অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল। একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের নেতারা তাদের শনাক্ত করে নিজেদের দলে নিয়ে নেয়। এই চক্রটিই বেশ কয়েকদিন ধরে কাট্টলীর বিভিন্ন এলাকায় নিম্ন আয়ের লোকজনের বাসাবাড়ি, দোকানপাটে ডাকাতি করছিল। আটক ডাকাত সদস্য মোঃ রুবেল জানায়, গণপিটুনিতে নিহত সাগর ও রাসেলের সঙ্গে তার পরিচয় কর্ণফুলী ঘাটে। তারাও মাছ বোঝাইয়ের কাজ করত। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে রুবেল কোতোয়ালি মোড়ে রিক্সা রেখে বলিখেলা উপলক্ষে যে মেলা চলছে সেখানে ঢোকে। মেলার ভেতর তার সঙ্গে রাসেলের দেখা হয়। পরে সাগরের সঙ্গেও তাদের দেখা হয়। দুজন তাকে কাট্টলী এলাকায় একটি কাজ আছে বলে সিএনজি অটোরিক্সায় তুলে নেয়। অটোরিক্সা অলংকার মোড়ে যাবার পর বাকি চারজন তাদের সঙ্গে আরেকটি অটোরিক্সায় করে যোগ দেয়। পরে সবাই বেড়িবাঁধ এলাকায় একত্রিত হয়। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রুবেল জানায়, তারা জড়ো হওয়ার পর পর একদল লোক অন্ধকারের মধ্যে তাদের ঘিরে ফেলে। অন্ধকার থাকায় তারা বুঝতে পারিনি। এক পর্যায়ে লোকজন তাদের দিকে টর্চের আলো ফেলে। এ সময় তারা ভয়ে দৌড়াতে থাকলে এলাকার লোকজন তাদের ধরে ফেলে। নিজস্ব সংবাদদাতা জানান, কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একজন নিহত হয়েছে। নিহতের নাম আমিরুল ইসলাম (৪২)। তিনি কুষ্টিয়া উজানগ্রাম ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের জবেদ আলী মিস্ত্রীর ছেলে। মঙ্গলবার রাত সোয়া দুইটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কে ম-ল ফিলিং স্টেশনের কাছে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, নিহত আমিরুল ডাকাত দল ও চরমপন্থী সংগঠনের আঞ্চলিক নেতা। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জয়নুল আবেদীন জানান, মঙ্গলবার রাত সোয়া দুইটার দিকে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী সড়কে ম-ল ফিলিং স্টেশনের কাছে একদল ডাকাত সড়কের ওপর গাছ ফেলে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন সংবাদ পেয়ে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে হানা দেয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাত সদস্যরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। একপর্যায়ে ডাকাতরা পালিয়ে গেলে সড়কের পাশে হাউজিং মাঠে আমিরুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৪টি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করে। বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের চারজন সদস্য আহত হয় বলে পুলিশ জানায়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম জানান, নিহত আমিরুল ডাকাত দল ও চরমপন্থী সংগঠন গণবাহিনীর আঞ্চলিক নেতা ছিল। তার বিরুদ্ধে হত্যা, গুম, অপহরণসহ ৭টি মামলা রয়েছে। সে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজানগ্রাম ইউনিয়নের সোনাইডাঙ্গা গ্রামের জবেদ আলী মিস্ত্রীর ছেলে।
×