ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

গরমে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৮ এপ্রিল ২০১৬

গরমে নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৭ এপ্রিল ॥ প্রচ- গরমে ঠাকুরগাঁওয়ে শত শত শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালে জায়গা সঙ্কটের কারণে এসব শিশুর চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শতাধিক শিশুকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিদিন শহর ও গ্রামাঞ্চলে ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে অসংখ্য শিশু। সদর হাসপাতালে শয্যা না থাকায় মেঝেতে রেখে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৩০ শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৭০ জন ডায়রিয়ায় এবং ৪০ জন নিউমোনিয়ায় ও পেট ব্যথা রোগে ২০ জন আক্রান্ত। আউট ডোরে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে আরও শতাধিক শিশুকে। যেসব শিশুর অবস্থা বেগতিক শুধু তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। বুধবার সকালে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে দেখা যায় ৩০ শয্যার শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছে ১৩০ শিশু। শিশুদের সঙ্গে তাদের আত্মীয়স্বজন আসায় গিজগিজ করছে ওয়ার্ড। শিশু ওয়ার্ডে ৭৫ জন ডায়রিয়ার এবং ৪৪ জন নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি রয়েছে। বেড সঙ্কটের কারণে ওয়ার্ডের ও বারান্দার রাস্তার মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বেশিরভাগ শিশুকে। বারান্দায় আশ্রয় না পেয়ে কাউকে হাসপাতালের সিঁড়িতে বিছানা পেতে শিশুর চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। বারান্দার বিছানার লাইন শিশু ওয়ার্ডের বারান্দা পেরিয়ে চলে গিয়েছে গাইনি ওয়ার্ডের বারান্দা পর্যন্ত। চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ ব্যাপারে হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ শাহাজাহান নেওয়াজ তীব্র গরমের কারণে নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, শিশুরা অতিরিক্ত গরম সহ্য করতে না পেরে নিউমোনিয়াসহ পেটের পীড়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। সিভিল সার্জন ডাঃ নজরুল ইসলাম বলেন, ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি একটি শিশুর যাতে কোন ক্ষতি না হয়। তবে জায়গা ও জনবল সঙ্কটের কারণে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। যশোরে মরছে রেণু স্টাফ রিপোর্টার, যশোর থেকে জানান, হ্যাচারি ব্যবসায় দিনে দুই কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। চলমান গ্রীষ্ম মৌসুমে মাছের সহনীয় তাপমাত্রার চেয়ে যশোর অঞ্চলে তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় হাপায় প্রতিদিন মাছ মারা যাচ্ছে বেশুমার, যে কারণে রেণু পোনা উৎপাদনকারী হ্যাচারিগুলো উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে ৭৫ শতাংশের মতো। সব মিলিয়ে জেলার মৎস্য সেক্টর তথা হ্যাচারি ও হাপা ব্যবসায় সংশ্লিষ্টরা প্রতিদিন দুই কোটি টাকার লোকসান গুনছে। গত দেড় সপ্তাহ ধরে তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলছে। ৩৬ থেকে ৪১ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। যা দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা হিসেবেও দু’দিন রেকর্ড হয়েছে। এ তাপদাহ শুধু জনজীবনই দুর্বিষহ করে তোলেনি, এ অঞ্চলের জনগুরুত্বপূর্ণ মৎস্য সেক্টরেও প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে। মাছের রেণু পোনা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হ্যাচারি ও মধ্যসত্বভোগী বিকিকিনির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট হাপা মালিকদেরও মাথায় হাত উঠেছে। প্রচ- গরমে প্রতিদিন মণ মণ পোনা মারা যাচ্ছে। এ ক্ষতির কারণে এ অঞ্চলের দুশ’ হাপার মধ্যে বেশিরভাগ রেণু পোনা সংগ্রহ বন্ধ করে দিয়েছে। যশোরের চাঁচড়া বাবলাতলা, চাঁচড়া বেলতলা, মাগুরপট্টি, কাজীপুর, ভাতুড়িয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকা মিলিয়ে দু’শোর মতো হাপা রয়েছে। হাপাগুলোতে রেণু পোনা কিছুদিন রেখে বিক্রি করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক প্রচ- গরমে পানি উত্তপ্ত হয়ে উঠছে আর রেণু পোনা মারা যাচ্ছে। পানির স্তর নেমে যাওয়ায় হাপাগুলোতে প্রয়োজনীয় পানিও সরবরাহ করা যাচ্ছে না। স্যালো মেশিন ও ডিপটিউবওয়েলেও পানি ঠিকমতো উঠছে না। হাপায় পরিমাণমতো পানি দিতে না পারায় পানিতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। মাছের সহনীয় তাপমাত্রার চেয়ে এ অঞ্চলে ১০/১২ ডিগ্রী বেশি। যশোর জেলা মৎস্য হ্যাচারি মালিক সমিতির তালিকায় ৭৫টি হ্যাচারির নাম রয়েছে। এদের মধ্যে অনেকের উৎপাদন একেবারেই বন্ধ রয়েছে। আর সচল ৩০টি হ্যাচারি উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছে অনেকাংশে।
×