ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

স্বেচ্ছাসেবকের বয়ান

প্রকাশিত: ০৪:০৩, ২৮ এপ্রিল ২০১৬

স্বেচ্ছাসেবকের বয়ান

সাজ্জাদুর রহমান শুভ বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের মানমন্দিরে মে ২০০৭ থেকে জুলাই ২০০৮ পর্যন্ত কমপক্ষে ৯০টি ভূকম্পন নথিভুক্ত করা হয়, তন্মধ্যে ৯টিরই রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৫-এর উপরে এবং সেগুলোর ৯৫%-এরই উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা শহরের ৬০০ কিলোমিটারের মধ্যে। অর্থাৎ ঘন ঘন স্বল্প মাত্রার ভূমিকম্প হচ্ছে। মতবিরোধ থাকলেও অনেক ভূতাত্ত্বিক ছোট ছোট ভূমিকম্প সংঘটন বড় ধরনের ভূমিকম্পের পূর্বাভাস বলে উল্লেখ করেন। অতীতের এসব রেকর্ডকে প্রাধান্য দিয়ে গবেষকরা জানিয়েছেন যে কোন সময় বাংলাদেশে রিখটার স্কেলে ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশ ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে। মাঝে মাঝেই ঝাঁকুনি দিয়ে এর প্রকোপ দেখা দেয়। একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে রাজধানী ঢাকা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে মধুপুর অঞ্চলে ৭ থেকে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার মতো ভূতাত্ত্বিক ফাটল রেখা রয়েছে। ঢাকা সিটি কর্পোরেশন অঞ্চলের ৩,২৬,০০০ ভবনের ওপর পরিচালিত সমীক্ষা থেকে দেখা গেছে, এমন তীব্রতার ভূমিকম্পে প্রায় ৭২,০০০ ভবন সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যাবে, আরও ৮৫,০০০ ভবন মাঝারি ধরনের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। শুধু দালান ভাঙ্গার কারণে ক্ষয়ক্ষতি হবে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমতুল্য সম্পদ, এমনকি ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে জাতিসংঘ পরিচালিত রিস্ক এ্যাসেসমেন্ট টুলস ফর ডায়াগনসিস অব আরবান এরিয়াস এগেইন্সট সাইসমিক ডিজাস্টার (রেডিয়াস) জরিপে ভূতাত্ত্বিক ঝুঁকিপূর্ণ বিশ্বের ২০টি শহরের মধ্যে ঢাকাও অন্যতম। আর অপরিকল্পিত নগরায়ণ এ ঝুঁকি আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। ভূমিকম্প সাধারণত কোন পূর্বাভাস ছাড়াই সংঘটিত হয়ে থাকে। তাই এর ক্ষয়ক্ষতিও অনেক বেশি হয়ে থাকে। ভূমিকম্প যেহেতু আচমকা সংঘটিত হয়ে থাকে সেহেতু অনেকেই তাৎক্ষণিক বুঝে উঠতে পারেন না কী করবেন। তবে একটু সচেতন হলে এবং কয়েকটি বিষয় মেনে চললে সহজেই ভূমিকম্পের ধাক্কা থেকে যথাসম্ভব বেঁচে থাকা সম্ভব। তবে ভূমিকম্প হলে সর্বপ্রথম যেটা করণীয় সেটা হলো-মাথা ঠা-া রাখা, স্থির থাকা, উত্তেজিত না হওয়া। এটা জরুরী এই জন্য যে, উত্তেজিত হলে করণীয় বিষয় কী তা ঠিক করা কঠিন হবে। একমাত্র সচেতনতাই পারে, কিছুটা ঝুঁকি কমাতে। এছাড়া সঠিক প্রশিক্ষণ দ্বারা ক্ষয়ক্ষতি রোধ করা সম্ভব। বিশ্বের সকল উন্নত দেশেই দুর্যোগ মোকাবেলার লক্ষ্যে তাদের রেগুলোর বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক গড়ে তোলা হয়। আমাদের দেশেও খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় আওতাধীন কমপ্রিহেনসিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রাম (সিডিএমপি) এর সহায়তায় ২০০৯ সাল হতে সারাদেশে ৬২০০০ হাজার সেচ্ছাসেবক তৈরির কার্যকম হাতে নেয়া হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিসের দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকদের মাধ্যমে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে। দেশের সমগ্র জেলা শহরে, প্রতিটা ওয়ার্ড হতে ২০০ জন করে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ আর্মড, পুলিশ, আনসার, রেড ক্রিসেন্ট, ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর, রোভার স্কাউট এবং সাংবাদিকদের ও পর্যায়ক্রমে এ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। এ সম্পর্কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেছেন, ভূমিকম্প মোকাবেলা ও পরবর্তী উদ্ধার অভিযানে সফল অংশগ্রহণের জন্য ৬২ হাজার আরবান সার্চ এ্যান্ড রেসকিউ স্বেচ্ছাসেবক তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে ৩০ হাজার স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক প্রশিক্ষণ সেল, ঢাক থেকে
×