ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

রমজানে পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ তোফায়েল

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

রমজানে পণ্যের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা ॥ তোফায়েল

সংসদ রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, পবিত্র রমজান মাসে কেউ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গত দু’বছরের মতো এবারও রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা বন্ধ প্রসঙ্গে সরকারী দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত শর্ত পূরণ করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেবে বলে মনে হয় না। তারা নতুন নতুন শর্ত দিতেই থাকবে। তাই জিএসপি নিয়ে যত কম ভাবা যায় ততই ভাল। জিএসপি সুবিধা বহালে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনাকাক্সিক্ষতভাবে জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেয়। তারা বাংলাদেশের ওপর ১৬টি শর্তারোপ করে। একটি স্বাধীন দেশের ওপর অন্য একটি দেশ কখনই কোন শর্তারোপ করতে পারে না। এরপরও আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সব শর্তই পূরণ করেছি। তিনি বলেন, পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে বলেছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে। আমরা জানি না সেটি আর কী হতে পারে? আসলে কেয়ামত পর্যন্ত আমরা শর্ত পূরণ করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক শর্ত দিতেই থাকবে। তাহলে আমরা কী করে সেটা পূরণ করব? এটার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। আর জিএসপি না পেলেও আমাদের কোন ক্ষতি নেই। বাংলাদেশ এখন পোশাক শিল্প রফতানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবই। বিএনএফের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিশ্বের মধ্যে চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৪২৪ এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ২৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সকল দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৈষম্য হ্রাসে সরকার বহুবিধ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। তিনি জানান, চীন থেকে বাংলাদেশের রফতানি আয় হয়েছে ৭৯১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বিপরীতে আমদানি ব্যয় হয়েছে সর্বাধিক ৮ হাজার ২১৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৪২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এছাড়া ভারতে ৫২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রফতানি আয়ের বিপরীতে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৮১১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সেই হিসেবে দেশটির সঙ্গে বর্তমানে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ২৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ওই দুই দেশ ছাড়াও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ২ হাজার ১০৩, ইন্দোনেশিয়ায় ১ হাজার ৩১৩, মালয়েশিয়ায় ১ হাজার ১৪৭ এবং কোরিয়া রিপাবলিকের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ হচ্ছে ৯৮৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
×