ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারও সহজে মেনে নেবে না ॥ সৈয়দ আশরাফ

প্রকাশিত: ০৫:৪৪, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

সরকারও সহজে মেনে নেবে না ॥ সৈয়দ আশরাফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ সরকারকে বেকায়দায় ফেলতেই পরিকল্পিতভাবে একটার পর একটা হত্যাকা- ঘটানো হচ্ছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, সরকার এটা সহজে মেনে নেবে না। সরকার কারো ওপর আক্রমণ করে নয়, আইনী প্রক্রিয়ায় এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, কেউ বাঁচতে পারবে না। মঙ্গলবার বিকেলে ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। সাংবাদিক সম্মেলনের আগে সহযোগী-ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের এক যৌথসভায় সভাপতিত্বও করেন তিনি। সৈয়দ আশরাফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। বিশেষ করে ব্লগার বা সাংস্কৃতিক কর্মীদের ওপর আঘাত হচ্ছে। এটা সরকার সহজে নেবে না। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভীর বক্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি তো এখন ক্ষমতায় নেই। সময় আছে অনেক, তারপরও তারা রাজনীতিতে সময় দেয় না। মাঝে মাঝে আসে, একদিন দুই দিন কথা বলে। তিন মাস, চার মাস খবর থাকে না। বিএনপিকে খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে সরকারের ব্যর্থতা কিসের? ওলামা লীগ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পরিষ্কার করেছেন যে, ওলামা লীগ আমাদের কোন সহযোগী সংগঠন নয়। তারা ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিলে এটা তাদের বিষয়। এখন অনেকেই আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশে সর্ববৃহৎ নির্বাচন হলো ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। সেখানে কিছু কিছু ঘটনা আগেও ঘটেছে, এখনও কিছু ঘটছে। তবে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি যেটা জাতির জন্য চিন্তা কারণ কিংবা চ্যালেঞ্জ হবে। নির্বাচন শেষ হলে এটা মানুষ ভুলে যাবে। তিনি বলেন, এই নির্বাচনের মাধ্যমে দল লাভবান হচ্ছে, রাজনীতি লাভবান হচ্ছে, সংবিধান লাভবান হয়েছে। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সবচেয়ে বেশি শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। এর আগে মারামারি-কাটাকাটি সারাদেশেই ছিল। এবার সেটা হয়নি। রাজনৈতিক শৃঙ্খলার কারণে সহিংসতা সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আরও বলেন, সারা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়। আমাদের এখানেই ছিল ব্যতিক্রম। আমাদের দেশে এই ট্রডিশন ছিল না। শুধু জাতীয় নির্বাচন দলীয়ভাবে অন্য নির্বাচনগুলো নির্দলীয়ভাবে- এটা সামরিক শাসকদের মাথা থেকে আসছে। তাদের উদ্দেশ্যে ছিল অরাজনৈতিক নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার আরোহন শক্তিশালী হবে। আমরা দলীয়ভাবে নির্বাচন শুরু করেছি। আগামীতে রাজনৈতিক দলগুলো দলীয়ভাবে এই নির্বাচন করবে। আরেকটা নির্বাচনের পর এটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভেঙ্গে নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে জানিয়ে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আগামী ৩০ মে’র মধ্যে ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভবনটি খালি করা হবে। আগামী জুন মাসে পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হবে বলে আমরা আশা করছি। তিনি বলেন, বিগত ৬ এপ্রিল আমাদের দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নতুন ভবনের নক্সা অনুমোদন দিয়েছেন। সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে থাকা সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোকে আলাদা অফিস নিয়ে বর্তমান ভবনটি খালি করে দিতে হবে। বর্তমান ভবন খালি হওয়ার পর ভাঙ্গার কাজ শুরু হবে। রাজউক কর্তৃক অনুমোদিত নতুন ভবনের নক্সা ও পাইলিংসহ সমুদয় কাজ সম্পন্ন করা হবে। আশা করছি, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে মূল ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু করা যাবে। এর আগে সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সম্পাদকম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, হাবিবুর রহমান সিরাজ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ডাঃ বদিউজ্জামান ভূইয়া ডাবলু, কেন্দ্রীয় সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন এবং সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
×