ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুড়ছে ট্রান্সফরমার গ্রাহকদের ভোগান্তি চরমে

সাতক্ষীরায় অবৈধ এসি ব্যবহার বেড়েছে

প্রকাশিত: ০৩:৪০, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

সাতক্ষীরায় অবৈধ এসি ব্যবহার বেড়েছে

স্টাফ রিপোর্টার, সাতক্ষীরা ॥ জেলা শহরে অনুমোদনহীন এসি (এয়ারকুলার) ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গত এক বছরে এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সহস্রাধিক- এমন তথ্য বিদ্যুত বিভাগের। তবে এ সকল অবৈধ এসি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় ওভার লোডিংয়ের কারণে প্রায়ই বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার পুড়ে নষ্ট হচ্ছে। পাশাপাশি লো-ভোল্টেজের কারণে সাধারণ গ্রাহকরা বিপাকে পড়ছেন। এছাড়া লোডশেডিংয়ের কবলে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তবে টাকার বিনিময়ে এ অবৈধ এসি সংযোগ মিলছে বিদ্যুত বিভাগের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারীদের মাধ্যমেÑ এমন দাবি গ্রাহকদের। অবৈধ এসি ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে- এমনটি স্বীকার করে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের সাতক্ষীরার আবাসিক প্রকৌশলী কাওসার আলি জনকণ্ঠকে বলেন, লোড বৃদ্ধি করে অনুমোদন নিয়ে এসি সংযোগ নেয়ার বিধান থাকলেও গত ২ বছরে একজন গ্রাহকও অনুমোদন নিয়ে এসি ব্যবহার করছে- এমন রেকর্ড অফিসে নেই। এই অবৈধ সংযোগের জন্য তিনি ফিডার ইনচার্জদের দায়ী করে বলেন, ফিডার ইনচার্জরা কোন রিপোর্ট না দেয়ায় অবৈধ এসি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। অবৈধ এসি ব্যবহারের বিষয়ে কোম্পানির চীফ ইঞ্জিনিয়ার হাসান আলি তালুকদার সোমবার জনকণ্ঠকে বলেন, অবৈধ এসি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া ও তাদের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশ দেয়া হলেও মাঠপর্যায়ে এ নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না। গত এক বছরে সাতক্ষীরা শহরে এসি ব্যবহারের জন্য একটিও আবেদন তার দফতরে জমা পড়েনি। ৩১ মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত সাতক্ষীরা শহরে মোট বিদ্যুতের গ্রাহক সংখ্যা ২৭ হাজার ২শ’ ৭ জন। এর মধ্যে আবাসিক গ্রাহকের সংখ্যা ২১ হাজার ৮শ’ ৮৮ জন। বাণিজ্যিক সংযোগ রয়েছে ৩ হাজার ৫শ’ ১টি। সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে প্রায় সহস্রাধিক গ্রাহক অনুমোদন ছাড়াই এসি ব্যবহার করছে। বহুতল আবাসিক ভবনগুলোতে এ সংখ্যা অনেক বেশি। এসি ব্যবহারকারীদের তালিকায় ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, সরকারী চাকরিজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন পেশাজীবীর নাম রয়েছে। এরা সরকারী নিয়মনীতি মেনে এসি ব্যবহার করছেন- এমন কোন রেকর্ড বিদ্যুত বিভাগে সংরক্ষিত নেই। ব্যাপকহারে এসি ব্যবহার করার কারণে শহরজুড়ে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। লো-ভোল্টেজের কারণে সাধারণ গ্রাহকদের বাড়িতে ফ্যান ঘুরছে না। টিভি, ফ্রিজ নষ্ট হতে বসেছে। ট্রান্সফরমারগুলো পর্যাপ্ত ভোল্টেজ সরবরাহ করতে পারছে না। অনেক সময় ওভার লোডের কারণে ট্রান্সফরমার পুড়ে যাচ্ছে। এসব বাস্তবতার পরও এ সকল অবৈধ এসি ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাও নেয়া হচ্ছে না। সাতক্ষীরা শহরে এখন প্রতিদিনের বিদ্যুতের চাহিদা ১৪ মেগাওয়াট। প্রতিদিনের ঘাটতি আড়াই মেগাওয়াট হলেও ফিডারগুলোতে প্রতি ঘণ্টায় চলছে লোডশেডিং। বেশিরভাগ বিদ্যুত চলে যাচ্ছে এসি ব্যবহারকারীদের কাছে। ফলে প্রচ- গরমে সাধারণ গ্রাহকদের জীবন এখন অতিষ্ঠ। বিদ্যুত বিভাগের একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর কারণে শহরে অবৈধ এসি ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
×