ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নেইমারের সঙ্গী নিয়ে চিন্তায় দুঙ্গা

প্রকাশিত: ০৩:২৭, ২৭ এপ্রিল ২০১৬

নেইমারের সঙ্গী নিয়ে চিন্তায় দুঙ্গা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোপা আমেরিকায় নয় বরং রিও অলিম্পিকেই খেলবেন নেইমার। তবে আগস্টে ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিতব্য রিও অলিম্পিকে ব্রাজিল দলে নেইমারের সঙ্গে বেশি বয়সী খেলোয়াড় হিসেবে থাকছেন কে? সে বিষয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি দেশটির অভিজ্ঞ কোচ কার্লোস দুঙ্গা। ঐতিহাসিক এই টুর্নামেন্টে নেইমারের বাকি দুই সদস্যের নাম নিয়ে সংশয়ে রয়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। ১৯৯২ সালের বার্সিলোনা গেমসে প্রথমবারের মতো অনুর্ধ-২৩ দলের সাথে তিনজন করে বেশি বয়সী খেলোয়াড় যুক্ত করার প্রথা চালু হয়। ফিফা জানিয়ে দেয়, অলিম্পিকে ছাড়পত্র দিতে শুধু ক্লাবগুলোই একক ক্ষমতার অধিকার রাখবে। যদিও এই সিদ্ধান্তের কারণে ক্লাব ও দেশের মধ্যে একটি শীতল লড়াই শুরু হয় যা চলতি বছরও সিবিএফ ও বার্সিলোনার মধ্যে দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র অলিম্পিকে কোচ মারিও জাগালো দলে নিয়েছিলেন ৩০ বছর বয়সী রোমা ডিফেন্ডার আলদায়ির, ৩২ বছর বয়সী ফ্লামেনগো স্ট্রাইকার বেবেতো ও ২৪ বছর বয়সী পালমেইরাস তারকা রিভালদোকে। গ্রুপ-ডি’তে ঐ আসরে ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ ছিল নাইজিরিয়া, জাপান ও হাঙ্গেরি। মিয়ামির ওরেঞ্জ বোল স্টেডিয়ামে ৪৬ হাজার সমর্থকের সামনে জাপানের কাছে ১-০ গোলে পরাজয় দিয়ে ব্রাজিল বাজেভাবে আসর শুরু করে। কিন্তু শেষ দুটি ম্যাচে রোনাল্ডোর অনুপ্রেরণায় জয় তুলে নেয়। বেবেতোর অন্তর্ভুক্তি সফল প্রমাণিত হয়। আর্জেন্টাইন হার্নান ক্রেসপোর সঙ্গে ছয় গোল করে টুর্নামেন্টে যৌথভাবে সেরা গোলদাতা নির্বাচিত হন বেবেতো। সেমিফাইনালে নাইজিরিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলে এগিয়ে থেকেও অতিরিক্ত সময়ে কানুর গোল্ডেন গোলে ৪-৩ ব্যবধানের পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। পর্তুগালের বিপক্ষে বেবেতোর হ্যাটট্রিকে ৫-০ গোলে জয়ী হয়ে শেষ পর্যন্ত অবশ্য ব্রোঞ্জ পদক পায় সেলেসাওরা। ২০০০ সালে সিডনি গেমসে কোচ ভানডারলি লুক্সেমবারগো রোমারিওকে দলে নিলেও কোন বেশি বয়সী খেলোয়াড় নিতে তিনি অস্বীকৃতি জানান। যদিও ঐ সময়ে সিনিয়র দলে খেলতেন এ্যালেক্স ডি সুজা ও রোনাল্ডিনহো। কিন্তু তাদের দু’জনেরই বয়স ছিল অনুর্ধ-২৩। গ্রুপ পর্বে সেলেসাওরা সেøাভাকিয়া ও জাপানকে পরাজিত করলেও দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ৩-১ গোলে হেরে যায়। পরবর্তীতে কোয়ার্টার ফাইনালে অপর আফ্রিকান ক্যামেরুনের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে বিদায় নেয়। ২০০৮ সালে বর্তমান কোচ দুঙ্গার নেতৃত্বে বেজিংয়ে খেলতে যায় পেলের দেশ। এই আসরে দুঙ্গা ফ্লুমিনেন্স ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা ও ২৮ বছর বয়সী রোনাল্ডিনহোকে দলে নিয়েছিলেন। প্রথমদিকে অবশ্য বার্সিলোনার ছাড়পত্র পেতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে সাবেক বিশ্বসেরা রোনাল্ডিনহোকে। তবে জুলাইতে দলবদল করে মিলানে যাবার পরে সিরি’এ দলের পক্ষ থেকে তাকে খেলতে সবুজ সঙ্কেত দেয়া হয়। একই ক্লাব থেকে অবশ্য কাকাকে ছাড়া হয়নি। রিয়াল মাদ্রিদের রবিনহো সুযোগ পেলেও ইনজুরির কারণে পরবর্তীতে তার আর খেলা হয়নি। ঐ আসরে বেলজিয়াম, নিউজিল্যান্ড ও চীনকে হারিয়ে ব্রাজিল গ্রুপ পর্ব পার করে। ক্যামেরুনকে ২-০ গোলে হারিয়ে প্রতিশোধ নেয়। যদিও সেমিফাইনালে রিকুয়েলমে, লিওনেল মেসি ও সার্জিও এ্যাগুয়েরোর গোলে আর্জেন্টিনার কাছে ৩-০ গোলে পরাজিত হয়। পরে বেলজিয়ামকে ৩-০ গোলে হারিয়ে সান্ত¡নার ব্রোঞ্জ পদক পায়। সর্বশেষ লন্ডন অলিম্পিকে মানো মেনেজেসের প্রাথমিক দলে সুযোগ পেলেও শেষ পর্যন্ত চূড়ান্ত দলে আর জায়গা হয়নি রোনাল্ডিনহোর। এই দলে ছিলেন ২৭ বছর বয়সী পিএসজি ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা, ২৪ বছর বয়সী রিয়াল মাদ্রিদ লেফটব্যাক মার্সেলো ও ২৬ বছর বয়সী পোর্তোর ফরোয়ার্ড হাল্ক। তরুণ নেইমারের ওপর ছিল দলের দায়িত্ব। মিশর, বেলারুশ ও নিউজিল্যান্ডকে গ্রুপ পর্বে ও হুন্ডুরাস এবং দক্ষিণ কোরিয়াকে যথাক্রমে কোয়ার্টার ও সেমিতে হারিয়ে বহুল প্রতীক্ষিত ফাইনালে ওঠে ব্রাজিল। কিন্তু মেক্সিকোর কাছে পরাজিত হয়ে স্বর্ণপদকটা অধরাই থেকে যায় সেলেসাওদের। আবারও দোরগোড়ায় ক্রীড়াজগতের মহাযজ্ঞ অলিম্পিক। এবার নিজেদের ঘরের মাটিতেই সুযোগ থাকছে স্বর্ণজয়ের আক্ষেপ ঘোচানোর। এবার কি পারবেন তারা? ভক্ত-অনুরাগীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
×