ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিরোধীদের ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন কঠোর হয়েছে ॥ রিজভী

প্রকাশিত: ০৬:১৫, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

বিরোধীদের ঠেকাতে নির্বাচন কমিশন কঠোর হয়েছে ॥ রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তৃতীয় ধাপে ইউপি নির্বাচনে বিরোধী ভোটারদের দমনে নির্বাচন কমিশন কঠোর ভূমিকা পালন করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। দলের সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এ দফায় ভোটার ভোট দিতে না পেরে কেন্দ্র থেকে কেঁদে কেঁদে ফিরে গেছেন। ভোটাররা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে কাঁদে আর ভোট দেয় সন্ত্রাসী ও নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হওয়ার নির্দেশের পর নির্বাচন কমিশন কঠোর হয়েছে ঠিকই, তবে তা বিরোধীদের ঠেকাতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে ম্যাজিস্ট্রেটরাও ভোট ডাকাতিতে অংশ নিয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। সোমবার পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মে দিবসের সমাবেশে দলের প্রস্তুতি সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন। বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মে দিবসের সমাবেশে ব্যাপক লোকসমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সমাবেশে রাজধানীর আশপাশের জেলা থেকে শ্রমিকরা যোগদান করবেন। তবে সমাবেশের অনুমতি এখনও না মিললেও সমাবেশকে সাফল্যম-িত করতে বিএনপি কাজ শুরু করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, এ সমাবেশে দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বক্তব্য রাখবেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি গণপূর্ত অধিদফতর থেকে দেয়া হলেও পুলিশের অনুমতি এখনও পায়নি শ্রমিক দল। অথচ সমাবেশের অনুমতি চেয়ে পুলিশের কাছে আগেই আবেদন জানানো হয়েছে। শান্তিপূর্ণ সমাবেশের প্রস্তুতির স্বার্থে দ্রুত পুলিশের অনুমতি দেয়ার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, আমরা বরাবরই দেখেছি পুলিশ হীন উদ্দেশ্য নিয়ে সমাবেশের অনুমতি দিতে দেরি করে, যাতে প্রস্তুতির কম সময় পাওয়া যায়। এটা হচ্ছে একটা হীন প্রচেষ্টা। নেতাকর্মীদের বিভ্রান্ত করার এই চেষ্টায় পুলিশের কোন লাভ হয় না। সংবাদ সম্মেলনে ইউপি নির্বাচনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, নির্বাচনে কঠোর হতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর নির্বাচন কমিশন কঠোর হয়েছে ঠিকই। তারা কঠোর হয়েছে গণতন্ত্রকে ধ্বংস ও ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারেন সে জন্য। ভোট দিতে না পেরে ভোটাররা কেন্দ্র থেকে কেঁদে কেঁদে ফিরে গেছেন। আগে ভোট ডাকাতি করত আওয়ামী সন্ত্রাসী ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা। আর এবার প্রধানমন্ত্রীর কঠোর হওয়ার নির্দেশের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও ভোট ডাকাতিতে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, তৃতীয় দফায় ইউনিয়নগুলোতে কেন্দ্র দখল করে জাল ভোটের মহোৎসব চলেছে। র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় প্রকাশ্যে সিল মেরেছে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। নির্বাচনে দায়িত্বরত প্রিসাইডিং অফিসার, র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এমনকি কোন কোন স্থানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও নৌকা প্রতীকে সিল মারতে সহায়তা করেন। বিএনপি ও বিরোধী দলের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীদের কেউ যেন কেন্দ্রের ধারে-কাছে আসতে না পারে এ জন্য র‌্যাব, পুলিশ, বিজিবি সব সময় তৎপর ছিল। ভোট দিতে না পেরে সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্র থেকে কাঁদতে কাঁদতে ফিরে যেতে দেখা গেছে। তৃতীয় ধাপে নির্বাচন শেষে এখন দেশজুড়ে চলছে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র তা-ব। সারাদেশে এখন দলের নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাট চলছে। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেনÑ বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ক ম মোজ্জামেল হক, স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
×