ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের খাতায় পলাতকরা ঘুরছে নাকের ডগায়

প্রকাশিত: ০৪:১১, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

পুলিশের খাতায় পলাতকরা ঘুরছে নাকের ডগায়

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ বিভিন্ন থানায় দায়ের ইয়াবা ও মানবপাচার মামলার তালিকাভুক্ত শতাধিক আসামির প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলছে সচেতন মহলকে। পুলিশের খাতায় ওরা পলাতক হলেও তারা দিবালোকে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা বুঝে উঠতে পারছে না- তারা কি প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে আঁতাত করে গ্রেফতার ছাড়াই এলাকায় ঘুরছে? নাকি কোন বিশেষ ব্যক্তির আশীর্বাদে আইনকে তোয়াক্কা না করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দাপট দেখাচ্ছে। মানবপাচারকারী ছাড়াও ইয়াবা সিন্ডিকেটের কয়েক গডফাদার প্রকাশ্যে কতিপয় অসৎ পুলিশের সঙ্গে ওঠাবসাও করছে বলে জানিয়েছে সচেতন মহল। এমনও অভিযোগ রয়েছেÑ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় উদ্ধার ইয়াবার চালানের বেশিরভাগ ট্যাবলেট কৌশলে স্বল্প দামে কিনে নিয়ে গোপনে বিক্রি করে অনেকে নিজেদের নাম লিখিয়েছে কোটিপতির তালিকায়। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কিছু অসৎ লোকজনের যোগসাজশে ইয়াবার রমরমা বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। রামুর গোয়ালিয়ার মোস্তাক আহমদ ওরফে ইয়াবা মোস্তাকের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর সঙ্গে আঁতাত থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। এসব কর্মচারীর কাছ থেকে উদ্ধার ইয়াবার চালান বিক্রি করে ইয়াবা মোস্তাক বর্তমানে অঢেল সম্পদের মালিক বনে গেছে। এদিকে কক্সবাজারের টেকনাফ, উখিয়া, নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ও তুমব্র সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত বিজিবির চোখকে ফাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়ত দেশে প্রবেশ করানো হচ্ছে যুবসমাজ ধ্বংসকারী মরণ নেশা ইয়াবা ও বিভিন্ন রকমের মাদক। স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও এ অবৈধ ব্যবসা কিছুতেই থামছে না। সীমান্তঘেঁষা কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক, মেরিনড্রাইভ সড়ক ও সাগর পথ দিয়ে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ইয়াবা সরবরাহ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। কেউ শরীরে বেঁধে, কেউ গাড়িতে লুকিয়ে আবার কেউ প্রাইভেট গাড়িতে করে সড়কপথে ইয়াবার চালান নিয়ে যাচ্ছে সীমান্ত অঞ্চল থেকে। ইয়াবার চালান বন্ধ করতে জেলার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারে তৈরি ইয়াবার বিস্তার বর্তমানে ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। অভিজাত এলাকা থেকে শুরু করে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় বাণিজ্যিক এলাকাসহ পাড়া-মহল্লায় পর্যন্ত হাত বাড়ালে পাওয়া যাচ্ছে ইয়াবা। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার হাতে ধরা পড়া সত্ত্বেও উখিয়া-টেকনাফ ও ঘুমধুম সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমার থেকে প্রতিদিন প্রবেশ করছে লাখ লাখ পিস ইয়াবার চালান। রামু, উখিয়া ও টেকনাফের আনাচে-কানাচে নারী-পুরুষ, রোহিঙ্গা যুবক-যুবতী থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও জড়িয়ে পড়ছে এ ব্যবসায়।
×